লাস্ট কন্সার্ট, লস্ট আর্টিস্ট ও সটকে পড়ার আর্ট || তুহিন কান্তি দাস

লাস্ট কন্সার্ট, লস্ট আর্টিস্ট ও সটকে পড়ার আর্ট || তুহিন কান্তি দাস

শেয়ার করুন:

গত কয়েকবছর ধরে দেশের বাউলরা রুট লেভেলে জান বাজি রাইখা ফাইট করতেছে৷ বাউলসংস্কৃতির শেকড় আগলাইয়া রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ কারো কারো ঘর জ্বালাইয়া দেওয়া হইছে৷ পরিবার পরিজন নিয়ে ফেরারির মতো ঘুইরা বেড়াইতেছে। এর বাইরে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত শুধুমাত্র গান করার জন্য যে কী পরিমাণ নিপীড়নের শিকার হইতাছে। হামলা, হুমকি কতকিছু ফেস করতেছে বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু তাও মাথানত করছে না। এই পরিমাণ ঝুঁকিসম্ভাবনা থাকলে অনেকেই শিল্পীর ভং ধরত না। শিল্পীর জীবনে অর্থের প্রয়োজন আছে কিন্তু তার চেয়ে শিল্পের দায়টাও কম গুরুত্বপূর্ণ না৷

অথচ নাগরিক পরিসরে শুধু কিছু র‍্যাপার বুকের বারুদ জ্বালিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এই সময়ে। আর তথাকথিত এলিট সেলিব্রেটি শিল্পীদের ম্যাক্সিমাম কাঠামোগত সুবিধার চাটুকারিতা করে যাচ্ছেন। ফলে পরিস্থতি যখন একদম বিপরীতে তখন সটকে পড়াটা স্বাভাবিক।

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যখন অস্ত্বিত্বের প্রশ্নে শিল্পীদের সংগঠিত হওয়ার কথা তখন তাহসানের মতো শিল্পীদের এই ঘোষণা যতটাই ব্যক্তিগত তার চেয়ে বেশি আপোসকামিতার নজির স্থাপন করল। দেশ ও জাতির এই সংকটকালে অনেক শিল্পীরই প্রকৃত চেহারা সামনে আসবে। অপেক্ষা করুন, অনেকেই এমন ঘোষণা দেবেন আশা করি। তবে এমন সময় প্রকৃত শিল্পীদেরও সামনে নিয়ে আসবে যারা শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শিল্পের প্রশ্নে, মানুষের অধিকারের প্রশ্নে সিনা টান করে দাঁড়াবে৷

অবাক হইনি, মিউজিশিয়ান তাহসানের ঘোষণায় একটুও অবাক হইনি।

নির্বাক সময়ে শিল্পের হুঙ্কার কাঁপিয়ে তুলবে অসুরের হৃৎপিণ্ড। আমি বরং সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি, যখন শিল্পীরা এই বন্ধ্যা সময়কে শিল্পের ভাষায় তুলে ধরবে৷ মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। মাটি ও মানুষের সুরে গাইবে মুক্তির গান কিংবা আগামীর স্লোগান। সেই সময়ও আর বেশি দূরে নয়।

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫


গানপারে তুহিন কান্তি দাস

গানপার
শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you