গডফাদারের ঐতিহাসিক জার্নি || ইলিয়াস কমল

গডফাদারের ঐতিহাসিক জার্নি || ইলিয়াস কমল

আলবার্ট এস রুডি ছিলেন আর্কিটেক্ট। মানে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনা থেকে তিনি আর্কিটেকচার নিয়েই গ্র্যাজুয়েশন করেছিলেন। তারপর কাজ শুরু করেন একটা কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে। সেখান থেকে চাকরি বদলে হয়ে ওঠেন ট্রেইনি কম্পিউটার প্রোগ্রামার। এখানেও দীর্ঘ সময় টিকেননি। আবারো বদলান চাকরি। লিখতে শুরু করেন। ইউনিভার্সাল স্টুডিয়োর রাইটার হিসেবে লিখতে থাকেন টেলিভিশনস্ক্রিপ্ট। এখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে সিনেমার প্রযোজনার কাজে লাগিয়ে দেন মার্লন ব্র্যান্ডো সিনিয়র। (আমি এই সিনিয়রের সাথে অরিজিনাল মার্লন ব্র্যান্ডোর কোনও সম্পর্ক পাইনি।)

প্রথম ছবি প্রযোজনার পর সিবিএস টিভিতে হোগানস হিরোস   নামের একটা সিরিজ প্রযোজনা করেন রুডি, যা কীনা ক্রিটিকদের কাছে যেমন প্রশংসা পেয়েছিল তেমনি পেয়েছিল জনপ্রিয়তাও। ছয় সিজন দাপিয়ে বেড়িয়েছে টিভিতে। তারপর গিয়ে যোগ দিলেন প্যারামাউন্ট পিকচারে। সেখানে গিয়ে খুবই কম বাজেটে ছবি বানাতে পারায় প্রতিষ্ঠানটি তারে বেশ গুরুত্বই দিচ্ছিল। তাকে বলা হতো লো-বাজেট স্পেশালিস্ট। তো এই লো-বাজেট স্পেশালিস্টের ঘাড়ে চেপে বসে মারিও পুজোর বেস্টসেলার উপন্যাস গডফাদার

শুরু হইলো গডফাদারের ঐতিহাসিক জার্নি। মারিও পুজো নিজে এর আগে কখনোই সিনেমার চিত্রনাট্যও লিখেননি। কিন্তু তিনি মনেপ্রাণে চাইতেন সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখতে। ছবির পরিচালক খুঁজতে গিয়ে রুডির মনে ধরল ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলারে। কপোলা তার ডিরেক্টরিয়াল স্বাধীনতা চেয়ে পেয়ে যাওয়ায় তাকেও যোগ করা হলো চিত্রনাট্যের দলে। মারিও পুজো আর কপোলা — এই দুই পাগল একসাথে যোগ দিলেন। আর মনে হইলো তারা পৃথিবী বদলায় ফেলবে। বাকি গল্প তো গডফাদার  মুক্তি পাওয়ার পর পৃথিবীই জানে। এই ছবির জন্য প্রাইমারি বাজেট ছিল সাড়ে-চার মিলিয়ন ডলার, পরে যা সাড়ে-ছয় থেকে সাত মিলিয়ন ডলারে রূপ পায়। কিন্তু তবুও কাজ করতে হয় অনেক চাপের মধ্যে। সেইসব গল্প আলবার্ট রুডির বায়োপিক নিয়ে নির্মিত এই সিরিজ ‘দ্য অফার’ থেকে জানা যাবে।

সাধারণত বিদেশি ভাষার সিরিজ আমি এড়িয়ে চলি প্রচুর সময় নেয় বলে। আমি একই জিনিসে এত দীর্ঘ সময় দিতে চাই না। আমি চাই একটা দশ এপিসোডের সিরিজ দেখার চেয়ে দুই-আড়াই ঘণ্টার দুইটা ভিন্ন ভাষার ছবি দেখতে। এই লক্ষ্যে অবিচল থাকার পরও দশ এপিসোডের এই মিনি সিরিজ আমাকে তা দেখতে বাধ্য করছে। সিরিজ বানাতে হলে স্ক্রিপ্ট যে ভালো হইতেই হয়, তা নিয়ে আর কোনও কথাই হবে না।


ইলিয়াস কমল রচনারাশি

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you