গ্রিসের অপু-দুর্গা || সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

গ্রিসের অপু-দুর্গা || সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

গ্রিসের অপু-দুর্গা : যেন অবিকল। ৫-৬ বছরের আলেকজান্দার আর তার দ্বাদশী দিদি ভুলা। দুজনেই মায়ের অবৈধ সন্তান।

মা বলেন, “তোদের বাবা আছে জার্মানিতে।”

বাড়ি থেকে পালিয়ে তারা চলেছে বাবার খোঁজে ‘পিতৃভূমি’ জার্মানির উদ্দেশে। হেঁটে, ট্রেনে-ট্রাকে তারা চলেছে পাহাড় ডিঙিয়ে ও সমুদ্রতীর ধরে।

পথে ঝড়। পথে বৃষ্টি ও বরফ। এবং কুয়াশা।

প্রৌঢ় ট্রাকড্রাইভার দ্বারা দিদি বলাৎকৃত হবার পর …
— বাবা আর কত দূরে রে দিদি?
— সীমান্তের ওপারে।
— সীমান্ত কী রে দিদি?

একটা ছবি দেখতে দেখতে সমালোচকরা কত কী দেখতে পান! এবং দেখেন। আমি অনধিকারী। আমি দেখি, দু-চোখ ভরে, এ-ছবির আলো। আত্মা মনে হয়।

কেননা, ব্রহ্মাণ্ডহারা এ সেই নিঃসঙ্গ গ্রহের ছবি, যা কোনো সূর্যশাসিত নয়। বা, অস্ত যায়নি। কোনো চরিত্রের ছায়াই পড়েনি কখনো, এ ছবিতে। সূর্য যদি উঠে থাকে, তার উদয় হয়েছিল মধ্যরাতে। মধ্যরাত্রির সূর্যের ম্রিয়মাণ আলো সারাক্ষণ জুড়ে ছড়িয়ে ছিল ছবিটির, আহা, সর্বাঙ্গে!

গানপারটীকা : নাইন্টিসের জানুয়ারিতে একটা চলচ্চিত্র-উৎসবের রিভিয়্যু করেছিলেন লেখক সম্ভবত ইন্ডিয়ার পশ্চিমবাংলা রাজ্যের কোনো দৈনিক/সাময়িক পত্রিকায়। সেইটা বাদে একদিন বইয়ের অন্তর্ভূত হয়েছে। এই নিবন্ধটা গানপারে রিপ্রিন্টেড হচ্ছে সেই বই থেকে; বইয়ের নাম, — বই না-বলে চটিপুস্তিকা বললেই ব্যেটার বর্ণনা হয়, — ‘চলচ্চিত্র চঞ্চরী’। ইন্ডিয়ার প্রতিক্ষণ পাবলিকেশনস্ প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই বই/পুস্তিকা জানুয়ারি পঁচানব্বইয়ে বের হয়েছে। এই নিবন্ধটি গৃহীত হয়েছে সেই পুস্তিকা বা বইয়ের প্রথম মুদ্রণের পৃষ্ঠাঙ্ক সতেরো থেকে। এই শিরোনামই — ‘গ্রিসের অপু-দুর্গা’ — মূল লেখায় ছিল। রচনাংশটুকু বর্ধিত কলেবর একটা রচনার অংশবিশেষ, সেই রচনার শিরোনাম ‘ফিল্মোৎসব ১৯৯০ : রাজসূয় না অশ্বমেধ?’ — রচয়িতা বাবু সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, গোটা বইটারই তিনি রচয়িতা। অ্যাঞ্জেলোপুলোসের ‘ল্যান্ডস্কেপ ইন দ্য মিস্ট’ ছবিটি দেখে মুগ্ধ সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় প্রোক্ত রচনার একাধিক জায়গায় সিনেমাটি নিয়ে সন্দীপিত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, থিয়ো অ্যাঞ্জেলোপুলোসের আঁচ পাঠকদেরে দিতে, এর আগে গানপারে একই লেখকের হাতে একই ফিল্ম ও ফিল্মমেকার নিয়া আরেকটা ছাপা হয়েছিল হ্রস্ব রচনা। — গানপার

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you