[যন্ত্রশিল্পীদের বাদন আমরা নিশ্চয় খেয়াল করি, গীতিনির্ভর গানেও ‘কনচ্যার্টো’ তথা বাজনা বা মিউজিক কেমন হলো বলাবলি করি গান শুনে, ক্ল্যাসিক্যালের ক্ষেত্রে তো যন্ত্রানুষঙ্গের মাধ্যমে তৈয়ার-হওয়া অ্যাম্বিয়্যান্স বা বাতাবরণ নিয়াই আমরা আড্ডায়-আলাপে মুখর হই। কিন্তু লক্ষ করব যে একেক যন্ত্রশিল্পীর বাদ্যবিতরিত সুর অন্তর্গতভাবে যেমন আলাদা তেমনি বাহ্যিক দিক থেকেও একেকজনের বাজনাস্টাইল আলাদা। তারা যখন শ্রোতার সামনে মঞ্চে বা ঘরোয়া আসরে বাজিয়ে থাকেন সরাসরি, কিংবা আমরা যখন দেখি টিভি ইত্যাদিতে, তখন তাদের বাদ্যযন্ত্র ধরার ধরন থেকে শুরু করে জেশ্চার ও শরীরভাষা সবকিছুতেই প্রতিভাত হয় তাদের শৈলীগত স্বাতন্ত্র্য। অনেকে ক্রেজ্ তৈয়ার করেন ভক্তশ্রোতাদের মধ্যে তাদের বাদ্যযন্ত্র বাজাবার বাহ্যিক স্টাইল দিয়ে। এইটা তানপুরা-সরোদ-তবলা থেকে গিটার-কিবোর্ডস্-ড্রামসের শিল্পী সকলের ক্ষেত্রেই সত্য।
যদিও সবই গিমিক বা দেখানোপনা বলে ব্যাপারটা আমরা অনেকেই হেসে উড়িয়ে দিতে চাই, কিন্তু উপভোগও করি; মুখে মুখে সেইসব নিয়া আলাপ করি যতটা, আমাদের লেখায় তা আদৌ প্রকাশ থাকে না। ‘গানপার’ এই দিকটা নিয়া হামেশা লেখার খোঁজ করে। যেমন এইখানে একটা লেখা হাজির করা হচ্ছে। এই লেখাটা ‘আনন্দভুবন’ ৩ বর্ষ ২২-২৩ সংখ্যা থেকে কালেক্টেড। সংখ্যাটা ৩ বৈশাখ ১৪০৬ বঙ্গাব্দ তথা ১৬ এপ্রিল ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত। – গানপার]
ইন্সট্রুমেন্ট মডেল বলে কিছু নেই, তারপরও কিন্তু মডেল হওয়ার যোগ্যতা রাখেন অনেকেই। ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে বিস্ময়কর কিছু স্পেশাল স্টাইল উপস্থাপন করেন আমাদের দেশের বেশকিছু মিউজিশিয়্যান।
নকুল কুমার বিশ্বাস বিস্ময় দেখান হার্মোনিয়াম বাদনে। শরীরের যে-কোনো অঙ্গ দিয়ে ও শরীরের যে-কোনো স্থানে হার্মোনিয়াম রেখে তিনি অনায়াসে বাজিয়ে যেতে পারেন।
‘ওয়ারফেজ’ ব্যান্ডের ব্যেইজিস্ট-কাম্-ভোক্যালিস্ট সুমন [সাইদুস সালেহীন সুমন, পরবর্তীকালে একটা পর্যায়ে তিনি নিজের পৃথক ব্যান্ড ফর্ম করেন ‘সুমন ও অর্থহীন’ নামে এবং তার পরিচয় বিস্তার পায় অর্থহীনের সুমন ডাকনামে] তৈরি করেছেন নিজের অদ্ভুত এক বাদনস্টাইল। ব্যেসগিটারটাকে তিনি ঘাড়ে রেখে কন্সার্টে বাজান। কোনো প্রকারের কোনো ভুলভ্রান্তিও চোখে পড়ে না সেক্ষেত্রে। এমনকি মাথায় তুলেও বাজান তিনি কখনো কখনো।
অ্যাক্যুস্টিক ও ইলেক্ট্রিক ড্রামস্ একত্রে বাজানোয় টিঙ্কুর নিজস্ব কিছু নতুনত্ব আছে।
মিলন ভট্টাচার্য তবলার পাশাপাশি যোগ করেন মাটির হাঁড়ি।
বাবু নিজস্ব কায়দায় ড্রামস্ জাতীয় নানান বাদ্য বাজানোটাকে একটা ফ্যাশনই করে ফেলেছেন।
নিবিড়কে দেখা গেছে গিটার ও কিবোর্ডস্ একত্রে বাজাতে।
বিদেশী ব্যান্ডগুলোর মঞ্চপরিবেশনায় দেখা যায় কেউ কেউ গানের শেষমুহূর্তে ভাঙেন গিটার, আমাদের গিটারিস্টরা গিটার না-ভাঙলেও গিটারের তার বা স্ট্রিং ছিঁড়ে স্টাইল করেন।
… …
- শাহ আবদুল করিম : জন্মের শতক পেরিয়ে আরও একটা আস্ত দশক || ইলিয়াস কমল - January 20, 2025
- সিনেমার চিরকুট ৮ - January 19, 2025
- টুকটাক সদালাপ ২ - January 17, 2025
COMMENTS