মঈনুস সুলতানকে লেখা চিঠি || মোস্তাক আহমাদ দীন

মঈনুস সুলতানকে লেখা চিঠি || মোস্তাক আহমাদ দীন

আপনার ক্যামেরায় তোলা গাছে-ঝোলানো
.                                             কাঠের মুখোশটি দেখে
আমার মাণিক চামারের মুখের কথা মনে পড়ল
সেই একই দাড়ি, লোকে বলত মাণিক্যা চামার,
যে পাশ দিয়ে গেলে পায়ের চামড়ার স্যান্ডেলের দিকে
তাকিয়ে বলত; ‘সিলাই লাগবনি বা মলবির পুত?’

আমি মনে মনে শ্যানানডোয়ায় ওই মুখোশটির
.                                                    কাছে চলে গেলাম
অবিকল মাণিক্যা চামার, আমার ভয় হয়,
মাণিক্যা কাকা সত্যি সত্যি যদি তাকায় তো নির্ঘাতই বলবে :
‘এ তো বেটা রাবারের বুট, আমি ইতা সিলাই করি না’

গত ১৩ মে মধ্যরাতে আমাদের গ্রামে
আমি আর শেখ লুৎফর, যার গল্পে আপনারই মতো
খাঁটি মৈমনসিংগের শব্দের সঙ্গে পেহলভি শব্দ একাকার
মাণিক্যা চামারের বাড়ি খুঁজতে গিয়েছিলাম
দেখি ৪৭টি ঘাসের ওপর থেকে ৭১টি জোঁক
আমাদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে
আমরা এক দৌড়ে মতিলাল ডাক্তারের বাড়ি পার হয়ে
সোনাওর ডাক্তারের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম
আমাদের গন্তব্য আর দূরে নয়
আলজান্নাত এডুকেশন ইন্সটিটিউট
যেখানে মুহম্মদ ইমদাদ সেই রাত ১২টার পর থেকে
তার রাগী মুক্ত কবিতা শোনানোর জন্য অপেক্ষা করছে


[প্রথম আলোয় সুলতানভাইয়ের একটি ভ্রমণগদ্য পড়ার প্রতিক্রিয়ায় পরের সপ্তাহে এই পত্রকবিতাটি লিখিত ও প্রকাশিত। এমনিতে কবিতায় ব্যক্তিগত স্মৃতি প্রবল-হয়ে-ওঠার কারণে তার শিল্পমান নিয়ে বেজায় কুণ্ঠিত, কিন্ত যত সময় যাচ্ছে এর কিছু প্রতীক ও ইশারা যেন — অপ্রত্যাশিতরূপে — প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। যেহেতু মঈনুস সুলতানের একটি গদ্যই এ-কবিতার উৎস, তাই, গতকাল (১৭ এপ্রিল) প্রায়-নীরবে-পার-হয়ে-যাওয়া তাঁর জন্মদিনকে স্মরণ করে সেটি এখানে আনা হলো। — মোস্তাক আহমাদ দীন]


COMMENTS

error: