ফিল্মোৎসব সম্পর্কে একটি হিতোপদেশ || সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

ফিল্মোৎসব সম্পর্কে একটি হিতোপদেশ || সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

পরিচালকের নাম দেখে ছুটুন, ক্ষতি নেই। লাভ বা লোকসান দুটোর একটা হবে। কিন্তু, ফ্রাই-প্যান থেকে ফায়ারের উদ্দেশে যারা যেতে চান, তাদের বলি, ছবির নাম দেখে ছুটবেন না। ‘ম্যারেড লাইফ’, ‘কনজুগাল বেড’ বা ‘ফেয়ারওয়েল টু মাই কনকুবাইন’ — এই ধরনের নামের পিছনে দৌড়বেন না। গতবারের উত্তপ্ততম ছবিটির নাম ছিল ‘হাউ টু মেক ল্যভ টু অ্যা নিগ্রো উইদাউট গেটিং টায়ার্ড’। মেক ল্যভ বলতে যা, তার ছিঁটেফোঁটাও ওই ছবিতে ছিল না। একদম ভেজিটেবল। বস্তুত, শিশির মঞ্চে দেখানো আর্জেন্টিনার এলেবেলে ‘দ্য ইয়ার অফ ডগস’ ছবিটিই ছিল সেবারের তাওয়া-গরম তন্দুরি। সহোদরা ভগিনী-গমনের দৃশ্য ছিল। কে বলতে পারে, আপনি যা চাইছেন — সেটা ‘পিয়ানো’-র মতো নান্দনিক নামের মধ্যেই থেকে গেছে কি না। যা-ই হোক। এহ বাহ্য। তাহলে, ‘লিটল বুদ্ধ’ দিয়েই শুরু হোক। ফিল্মোৎসবের কালো পৈতে ব্রাহ্মণ সন্তানের গলায় চার বছর পরে! এ থেকেই কার্ড ঝোলে। সর্বত্রগামী হওয়া যায় ওই কার্ড থাকলে। গতবারে ২৮টি দেখেছিলাম। এবার খান-৩০ দেখতে চেষ্টা করা যাবে। গতবার তারকোভস্কির এক বাঙালি ভাইপো ১০ দিনে দেখেছিল ৪০টি ছবি। দৈনিক চারটে করে। গিনেস বুক কী বলে?

গানপারটীকা : নাইন্টিসের জানুয়ারিতে একটা চলচ্চিত্র-উৎসবের রিভিয়্যু করেছিলেন বর্তমান রচনার লেখক সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়। ধারাবাহিকটি লিখেছিলেন সম্ভবত ইন্ডিয়ার পশ্চিমবাংলা রাজ্যের কোনো দৈনিক/সাময়িক পত্রিকায়। সেইটা বাদে একদিন বইয়ের অন্তর্ভূত হয়েছে। এই নিবন্ধটা গানপারে রিপ্রিন্টেড হচ্ছে সেই বই থেকে; বইয়ের নাম, — বই না-বলে চটিপুস্তিকা বললেই ব্যেটার বর্ণনা হয়, — ‘চলচ্চিত্র চঞ্চরী’। ইন্ডিয়ার প্রতিক্ষণ পাবলিকেশনস্ প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই বই/পুস্তিকা জানুয়ারি পঁচানব্বইয়ে বের হয়েছে। এই নিবন্ধটি গৃহীত হয়েছে সেই পুস্তিকা বা বইয়ের প্রথম মুদ্রণের পৃষ্ঠাঙ্ক পঁয়তিরিশের অংশবিশেষ। মূল লেখা আরও অনেক বড়। শিরোনাম হিশেবেআদিতে লেখা আছে ‘কলকাতায় রোমান হলিডে’ কথাটি। কিন্তু খণ্ডিতাংশ চয়নের কারণে লেখাটিরই অন্যত্র অনুচ্ছেদের একটা আস্ত পঙক্তি নিয়া আমরা করেছি শীর্ষকটুকু। তো, রচনাংশটুকু বর্ধিত কলেবর একটা রচনার অংশবিশেষ তা আগের কোনো পোস্টে নিশ্চয় ক্লিয়ার করে বলেছি। কিংবা আমরা এই রচনা ছাপানোর সময় এইটুকু শুধু মনে রেখে গেছি যে একটা ছায়াছবিপ্রদর্শনীর প্রেক্ষাগৃহ ব্যতিরেকে এই কিছুদিন আগেও উন্নত বই/সিনেমা দেখার/উপভোগের বিকল্প উৎস বলতে গেলে ছিলই না কিছু। বর্তমানে ফেস্ট লাগে না। জামার বুক/পাছার পকেটে এক-দুই গণ্ডা খ্যাতনামা ছায়াছবি নিয়া ঘোরে সবাই। কিন্তু, না, কোনো কিন্তু নয়। আপাতত চুপ। তবে বলে রাখি যে যেই-বছরের কথা সন্দীপন লেখায় এনেছেন, সেইবার চারবছরের বিরতি দিয়া আবারও কলকাতায় ফিল্মফেস্ট হয়েছিল বলে ‘ফিল্মোৎসবের কালো পৈতে ব্রাহ্মণ সন্তানের গলায় চার বছর পরে!’ — এমন বক্র বাক্যের পত্তনি হয়েছিল সন্দীপনের কলমে। ব্যাঁকানো কথা আর মুখব্যাদান-জিভভেংচির কিং সন্দীপন যে কেমন চিজ্ ছিলেন তা তো বলে দিতে হয় না হাইকোর্টের উঠানে থাকা বাঙ্গালদেরে। — গানপার

… …

পরের পোষ্ট
আগের পোষ্ট

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you