‘কমলা রকেট’ দেখা হলো। আশ্চর্য হয়েছি! প্রথমত, ইমরান মিঠুর কাহিনি বাছাই করবার দক্ষতা দেখে। স্বল্প পরিসরে ড্রামা করবার জন্য লঞ্চ একটা দারুণ স্পেইস। ‘টাইটানিক’ দেখেই বোঝা গেছিল। কমলা রকেট আমাদের গরিব টাইটানিক! তবে এই গরিবি নেহাত লঞ্চের গরিবি, কাহিনির বা ছবির গরিবি নয় কিন্তু।
কমলা রকেট ভালো লাগবার প্রধান কারণ এর গল্প। শাহাদুজ্জামানের গল্পের কারণেই ছবিটি একটি প্রায়-পূর্ণাঙ্গ এবং যৌক্তিক পরম্পরাসমৃদ্ধ গল্প বলতে পেরেছে। বেশিরভাগ ছবিনির্মাতা যেখানে মোটামুটি বিশ্বাসযোগ্যভাবে গল্পটাই বলতে পারেন না। সংলাপ আর ড্রামাটিক মোমেন্ট তৈরিতে মিঠু অচিরেই আরো দক্ষ আর সাটল হয়ে উঠবেন, ছবিতে এমন আভাসও মেলে। দৃশ্য-দৃশ্যান্তরের ক্ষেত্রে যথেষ্টই প্রিসাইজ ছিলেন পরিচালক। গল্পের কারণেই সম্ভবত খুব বেশি মেলোড্রামার খপ্পরে পড়তে হয় নাই তাকে।
মিঠুর এটি প্রথম ছবি। সে-কারণেই আরো প্রত্যাশা বাড়লো তার ব্যাপারে। তাকে প্রথম দেখি পিঁপড়াবিদ্যায়। অভিনেতারূপে। খুব ভালো পার্ফোর্ম করেছিলেন। তবু ফারুকীর ছায়াতলেই ছিলেন. যেহেতু ফারুকীর ছবিতে ফারুকীই কেন্দ্রীয় চরিত্র, এমনকি ইরফান খানকে ইম্পোর্ট করবার পরেও।
মিঠুর ছবিটি আমি এর কাহিনিকার শাহাদুজ্জামানকে পৌঁছে দিয়েছিলাম। সে-সুবাদে মিঠুর সাথে অল্পক্ষণ কথাও হয়েছিল। খুব পরিশ্রমী আর লাজুক চরিত্রের মনে হয়েছে তাকে। চেনাপরিচয় নেই, এমন-একজনকে এমন একটা জিনিশ বিশ্বাস করে দেয়া খুব কঠিন। ছবিটি তিনি আমাকে দিয়ে মৃদু গলায় বলেছিলেন, ভাই, উনাকে পৌঁছে দেয়ার পর ফাইলটা ডিলিট করে দিয়েন। তার কথামতো আমি সেটা দিয়েছিলামও।
সিনেমা করবার মতো যথেষ্ট ভালো গল্প আমাদের গল্পকারদের আছে, সিনেমা বানানেঅলা ভাইবোনেরা বিষয়টা মাথায় রাইখেন। খারাপ গল্প লেখার কারণে সিনেমাপরিচালক হিশেবে আপনার প্রতিভা কিন্তু মাঠে মারা যাবে, সে-ঝুঁকি নিয়েন না। এমনকি আমাদের কম গুরুত্বপূর্ণ গল্পকারদের থেকেও যদি পিক করেন, কম ব্লান্ডার হবে আশা করা যায়।
… …
- হালুমহুলুমভালুমবাসা, ব্রাত্য রাইসু! || সুমন রহমান - November 23, 2024
- শেখশাহি, সাংবাদিকতা ও স্বাধীন বাংলা || সুমন রহমান - August 23, 2024
- দেশান্তরী গরিবের কম্যুনিটি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট || সুমন রহমান - July 11, 2024
COMMENTS