২০০৪-২০০৫ সালে বাংলা ব্লগের যে উত্থান হয়েছিল, যার মাস্টারমাইন্ড ছিল অভ্র। আজকে আপনারা ফেসবুকে পয়দায়েশ হইয়াই যেভাবে অবলীলায় বাংলা লেখা আরম্ভ করেন, ২০০৩ সালে এইটা কল্পনা করাই অসম্ভব ছিল। বাংলা ইউনিকোড একটা যুগান্তকারী ঘটনা, অভ্রই তার শুরু।
ইউজারের সুবিধার জন্য মেহদী অভ্র কিবোর্ডে জব্বারের বিজয় লেআউট ব্যবহার করেছিলেন। যেহেতু অভ্র দিয়া তিনি ব্যবসা করেন নাই, এবং চাইছিলেন মানুষ বিনা আয়াসে অনলাইনে বাংলা টাইপ করতে পারুক, তাই জব্বারের বিজয়টাই তিনি অভ্রর লেআউট হিসাবে ব্যবহার করেন। ফড়িয়া ব্যবসায়ী মোস্তফা জব্বার এ-কারণে অভ্রর বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভ্রকে তার কিবোর্ড লেআউট বদলাইতে বাধ্য করে।
এই মোস্তফা জব্বার, যতটুকু জানি, এখনো বাংলাদেশে আমদানি হওয়া প্রতিটা মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে বিজয় ইনস্টলেশন বাবদ একটা মোটা অংকের নিয়মিত আয় করেন। বাংলাদেশে বৈধভাবে প্রবেশ করা প্রতিটা নতুন মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে বিজয় ইনস্টল করতে হয়। এ-বাবদে নিয়মিত টাকা যায় জব্বারের পকেটে। সম্ভবত এখনো, যদি ইতোমধ্যে সেটি বন্ধ না হয়ে থাকে।
যা-ই হোক, বাংলা ভাষায় চিন্তাচর্চার ক্ষেত্রে অভ্র একটা বিশাল বৈপ্লবিক ঘটনা। যতদূর মনে পড়ে, ২০০৮ সাল থেকেই মেহদী হাসান খানকে একুশে পদক দেয়ার দাবি উঠেছিল তরুণদের তরফে। কেউ তাতে রা করেনি।
মেহদী নিভৃতচারী মানুষ। তিনি তার অবদান নীরবেই রেখেছেন। অভ্রর বাবদে টাকা কিংবা খ্যাতি কোনোটাই এনজয় করতে চাননি।
অভিনন্দন মেহদী হাসান খান! অভিনন্দন, অভ্র!
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- গালিবের কবিতা ও তৌহিদি জনতা || সুমন রহমান - February 17, 2025
- অভ্রবিপ্লব || সুমন রহমান - February 13, 2025
- কথাসাহিত্যিকের প্রস্থান : ফেয়ারোয়েল টু ফয়জুল ইসলাম || সুমন রহমান - January 26, 2025
COMMENTS