সাল ২০০০। উনিশ-কুড়ি বছরের টগবগে যৌবন লইয়া সবে সবে ম্যাথম্যাটিশিয়ান হওয়ার বাসনায় গণিতে অনার্স লইয়া আন্ডারগ্রেডের পড়াশোনা শুরু করছি। ওই সময়ে মিলেনিয়াম মিলেনিয়াম বইলা চারপাশের মিডিয়া ব্যাপক স্ট্যান্ট নিতাছে। সেই স্ট্যান্টবাজির ফাঁকতালে নিজেই কাহিনি লিখে নিজেই সম্পূর্ণ রঙিন বাংলা ছায়াছবির ডিরেকশন দিলেন মুহাম্মদ হান্নান। বইয়ের নাম দিলেন ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’।
কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন দিলে কিচ্ছু গেলে না আসলেও সিনেমার নামকরণ একটা বিশাল ফ্যাক্টর। নামেই অনেক ছবি হিট হইয়া যায়। তৎকালীন অ্যানালগ সময়ে ছবির কাহিনি আসল না নকল যাচাই করা না-গেলেও মুহাম্মদ হান্নান তার সিনেমায় অভিনয় করার জন্য নিলেন তাবৎ বাঘা বাঘা সব অভিনেতাদের। কারে ছেড়ে কার কথা বলব। শক্তিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী, রাজীব, আনোয়ার হোসেনের কথা বলতে হয় সর্বাগ্রে। নায়ক-নায়িকা হিসাবে নিলেন সালমান শাহ পরবর্তী নায়কদের মধ্যে সবচেয়ে স্টাইলিশ নায়ক রিয়াজ আর ওই সময়ে শ্বাসরুদ্ধকর মাইরালা টাইপের বিউটিফুল নায়িকা পপিকে।
লাক্স সুন্দরী চিকনচাকন পপি ওই সময়ে শরীরে একটু হালকার উপ্রে গর্জিয়াস মেদ লাগিয়েছেন। এক কথায় যারে কয় সেরের উপরে সোয়াসের। একেকটা ঠোমকা আর হালকার উপর গর্জিয়াস ক্লিভেজের লহমায় তিরের ফলার মতো শয়ে শয়ে তরুণ কাৎ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাস! বক্সঅফিস হিট!
সেইসাথে সংগীত আয়োজন করলেন আরেক লিজেন্ড্রি সংগীতপরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এবং গানগুলা গাইলেন এন্ড্রু কিশোর, কনক চাঁপা আর খালিদ হাসান মিলু। আজো শুনলে মনের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে, আহা!
বাংলা সিনেমার চিরায়ত নিয়ম মাইনা পূর্নিমারাইতে নায়ক-নায়িকারে বৃষ্টির জলে ভিজাইয়া, ইনডোরে শুকাইয়া, শর্ট স্কার্ট পরাইয়া, ওয়েস্টার্ন ড্যান্স করাইয়া, তারপরে শাড়ি পরাইয়া, নায়িকারে নায়কের বুকে জায়গা দিয়া “তোমাকে ভুলতে গিয়ে বারে বারে মনে পড়ে যায়…” অথবা “জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালোবাসা ফুরাবে না কোনোদিন…” এমন সুরে আর কথায় গান আজকের জামানায় আর দেখা যায় না।
… …
- দিবারাত্র দুর্গাপুজো || অসীম চক্রবর্তী - October 5, 2019
- ঠাকুরবন্দনা || অসীম চক্রবর্তী - August 9, 2019
- জলধামাইল || অসীম চক্রবর্তী - August 1, 2019
COMMENTS