বিয়ানকা || উৎপলকুমার বসু

বিয়ানকা || উৎপলকুমার বসু

আধুনিক মেয়েরা কেমন দেখতে হবে এই প্রশ্নের উত্তর যদি একটি নারীর মধ্যে খুঁজতে হয় তবে সে নিশ্চয়ই বিয়ানকা জ্যাগার। মডেলিং, সৌন্দর্যচর্চা, পোশাক-প্রসাধন – সব ব্যাপারেই তার মতামত শেষ কথা। পপস্টার স্বামী মিক জ্যাগারের সঙ্গে তার চেহারার আশ্চর্য মিল সহজেই চোখে পড়ে। দুজনেরই বড় হা-মুখ। পুরু ঠোঁট। খাঁদা নাক। চোয়াড়ে গাল। ছিপছিপে বন্য শরীর। তাহলে কি স্ত্রী ও পুরুষের সৌন্দর্যে তফাৎ নেই?

আমার সবচেয়ে বেশি পাগলামি খাওয়া নিয়ে – বিয়ানকা বলছে। নুন খাই না। চিনি ছুঁই না। টাটকা ফল, সব্জি আর মাছ আমার প্রিয় খাদ্য। মাংস খাই না। পশুদের গায়ে হর্মোন ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিক্সে জর্জরিত করে ফেলা হচ্ছে তাদের, আর তাদেরই মাংস আমরা খাচ্ছি – ভাবলেই বমি পায়। বিয়ানকা দিনে আট গেলাস জল খায়। আট ঘণ্টা ঘুমোয়। বিয়ানকার আরেকটি অবসেশান হলো স্বাস্থ্যচর্চা। কোথায় কখন সে আছে তার উপর নির্ভর করে তার ব্যায়ামের রুটিন। কিন্তু যে-ধরনের এক্সারসাইজই করি না কেন মনপ্রাণ ঢেলে কাজ করি – সে বলে। ব্যায়ামচর্চা ধর্মচর্চার মতো। বিশ্বাস না থাকলে করে লাভ নেই।

লস অ্যাঞ্জেলেসে সে কীম লী-র স্বাস্থ্যবিদ্যালয়ে শরীরচর্চা করে। আমার মেরুদণ্ডর একটু টান দরকার, একটু রিঅ্যালাইনমেন্ট দরকার – বিয়ানকার বক্তব্য। তবে এই ব্যায়াম প্রথম দিকে বেশ কষ্টকর – সে স্বীকার করে। লন্ডনে তার স্বাস্থ্য-উপদেষ্টা দ্রিয়াস রেনেকে। দ্রিয়াস একজন বিখ্যাত বডি-কন্ডিশনার। তবে বিয়ানকার সবচেয়ে প্রিয় শারীরিক কাজ হলো নাচ। নাচ শুধু শরীরকেই ডিসিপ্লিন করে না, মনকেও সংহত করে – বিয়ানকার ধারণা। এক ধরনের ব্যায়াম মনকে শান্তি দেয়। আরেক ধরনের স্বাস্থ্যচর্চা মনকে উত্তেজিত করে। বিয়ানকা জানে এবং বলেছে তার দুই-ই দরকার।

বিয়ানকার মতে পুরুষ ও নারী সৌন্দর্য নিয়ে নানা ধরনের মিথ চালু আছে। যেমন প্রচলিত আছে বিবাহ, মাতৃত্ব, সংসার বিষয়ে অন্ধ-সংস্কার। সে বলছে – আমার মেয়ে জেডের জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই আমি মা হয়ে যাইনি। তাকে যখন চোখের সামনে বেড়ে উঠতে দেখেছি, যখন সে প্রথম কথা বলতে শুরু করেছে তখন আমাদের মধ্যে এক সৎ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। বোধহয় তা-ই মাতৃত্ব। সততা কাকে বলে – তা যেন আমি নতুনভাবে জানতে পেরেছি।

গদ্যসংগ্রহ ১, উৎপলকুমার বসু, নান্দীমুখ সংসদ, কলকাতা ২০০৫

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you