ভাবলাম মেয়েকে বড় বড় মূর্তি, পাপেট, মুখোশ দেখিয়ে আনি বৈশাখে। জীবজন্তু যে দুনিয়ার অংশ তা সে দেখুক, ভাবুক। মানুষ নিজেদের অতি শ্রেষ্ঠ ভাবে। কিন্তু প্রকৃতির কোনোকিছুই মানুষ থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ না। এমনকি একটা খড়কুটো ব্রহ্মাণ্ড থেকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হলে মহাবিশ্বের ধ্বংস হবে, কেয়ামত হয়ে যাবে। কাগজের বাঘ, হাতি, পেঁচা, সাপ, ঘোড়া ইত্যাদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
এগুলো আসলে জীবজগতের সিম্বল, মানুষ আর ননমানুষের ফ্যাব্রিকেশন। কোরানে বোরাকের বর্ণনা আছে। পুরাণে পুস্পকরথ আছে। এগুলোর অর্থ খুব সরাসরি কিছু না, সিম্বলিক, অন্তর্গত অর্থপূর্ণ। ফলে, মূর্তি বা সিম্বল বা অক্ষর বা ভাষার মিনিং খুঁজে পাওয়ার জন্য এগুলোর গুরুত্ব অসীম। পড়ো তোমার প্রভুর নামে তো অক্ষরের বিমূর্ততাকে দুনিয়ার অর্থবোধকতায় মূর্ত করা।
চিড়িয়াখানার জীব থেকে এই সমস্ত কাগজের ফিগার বেশি কাজের। মঙ্গল শোভাযাত্রার কাগজের ফিগারের বিরুদ্ধে কথা বলার চেয়ে চিড়িয়াখানার বিরুদ্ধে কথা বলা আরো বেশি ধর্মপ্রবণ কাজ হবে। সিম্বল, অবয়ব, মেটাফোর — এগুলো ছাড়া দুনিয়ার জ্ঞান, বিজ্ঞান, ধর্ম সবই অচল। ব্যক্তির ভেতরের সাথে বাইরের, আর বাইরের সাথে ভেতরের যোগাযোগ এইগুলো। আর্ট নেই তো দুনিয়ার অর্থ অপূর্ণ।
রচনাকাল : ২০১৮-র পহেলা বৈশাখ
- যেভাবে হয়ে ওঠে ‘এসো আমার শহরে’ || শিবু কুমার শীল - March 6, 2025
- Basudeb Dasgupta’s ‘Randhanshala’ The Cooking Place translated by Sourav Roy - March 4, 2025
- ভিক্টোরিয়া অ্যামেলিনা ও যুদ্ধদিনের ইউক্রেনীয় কবিতা || জয়দেব কর - February 17, 2025
COMMENTS