মারী বেইলির মা জাপানী। বাবা ডেনমার্কের লোক। ঠাকুমা ফরাসী। মারীকে এককথায় বলা চলে বিস্ময়কর সুন্দরী। এক্সোটিক বিউটি। পৃথিবীর প্রথম অন্যতম মডেল হিসেবেই শুধু তাঁর খ্যাতি নয় — নিজের বিষয়ে খোলামেলা কথা বলে সে অনেকবার হেডলাইন হিট করেছে। গত বছর ‘মডেল অফ দি ইয়ার’ নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁকে প্রশ্ন করা হয় তাঁর সৌন্দর্যের গোপন রহস্য কি। সে এককথায় উত্তর দেয় — সুস্থ যৌনজীবন। মারীর স্বামী ডেভিড বেইলি স্বনামধন্য ফটোগ্রাফার।
বেইলি পরিবার নিরামিষাশী। বাড়িতে মাছ-মাংস ঢোকা নিষেধ। আমিষ খাদ্য মানুষকে হিংস্র করে তোলে — মারী সাংবাদিকদের বলে। যেসব প্রসাধনদ্রব্যে জীবজন্তুর উপাদান ব্যবহার করা হয় — মারী সেসব ছোঁয় না। সে ‘বিউটি উইদাউট ক্রুয়েল্টি’ সঙ্ঘের সদস্য।
সকাল ন’টায় বেইলি পরিবারে ব্রেকফাস্ট। তারপর মারী স্নানে যায়। স্নানে লাগে পাক্কা দু-ঘণ্টা। নানা রকমের তেল, সাবান, লোশন তাঁর চাই। বাথটবে সাবানের ফেনায় শুয়ে থাকে সে। স্নানের পর ভিজে গায়ে ব্যায়াম। হঠযোগ। দুপুরের লাঞ্চে তারা খায় পাস্তা, নুডল, স্যালাড, চীজ। রাত্রে সামান্য নিরামিষ আহার। ঘুমের ওষুধ, উত্তেজক মাদকদ্রব্য এমনকি কফি পানও মারী পছন্দ করে না। একবার আধখানা ভ্যালিয়াম ট্যাবলেট খেয়ে সে চব্বিশ ঘণ্টা ঘুমিয়েছিল।
গাঁজা বা মারিজুয়ানা সেবনকে বেইলিরা ক্ষতিকারক মনে করে না। সপ্তাহে দু-একদিন ঐ-জাতীয় ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো — মারীর বিশ্বাস। দিনে গোটা-কুড়ি সিগারেট খায় মারী। এটাই আমার একমাত্র খারাপ অভ্যেস — সে বলেছে।
গানপারটীকা : এই নিবন্ধটি ‘বিয়ানকা, মারী, পালোমা’ শীর্ষক একটা পাৎলা আখ্যানের অংশ, উৎপলকুমার বসু রচনাটি লিখেছিলেন আন্দাজ করি কোনো দৈনিকের বিনোদনপাতায়। জিনিশটা আমরা কালেক্ট করেছি ‘উৎপলকুমার বসু গদ্যসংগ্রহ ১’ থেকে, যেইটা ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে নান্দীমুখ সংসদ কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এই নিবন্ধে তিনজন নারী সেলিব্রেটি নিয়া হাল্কা চালে বেশকিছু রম্য তথ্য জানানো হয়, এদের মধ্যে একজন মারী বেইলি; অন্য দুইজন হলেন মিক জ্যাগারের ওয়াইফ বিয়ানকা জ্যাগার এবং পাবলো পিকাসো ও ফ্রাসোঁয়া জিলো দম্পতির সন্তান পালোমা পিকাসো। উনারা আসলে লেইট-সিক্সটিজ/সেভেন্টিজের সেনসেশন। বিয়ানকা ও পালোমার লাইফস্টাইল নিয়া লেখা আর-দুই নিবন্ধও পত্রস্থ হয়েছে গানপারে আগেই। কিন্তু মারী বেইলির হদিস বাইর করতে যেয়ে বেশ কিছুক্ষণ গলদঘর্ম হতে হয় নেটসোর্সগুলো ঢুন্ডতে ঢুন্ডতে। গ্যুগল্ ইমেইজে এই নামের সম্ভাব্য স্পেলিং দিয়া সার্চের রেজাল্টে যেসব পোর্ট্রেইট আসছিল সেগুলো দেখে সন্দেহ হচ্ছিল। পরে উনার ফোটোগ্র্যাফার স্পাউসের নামভিত্তিক সার্চ দিয়ে ট্রেইস্ করা গেল অবশ্য। উনি সম্ভবত পরের দিকে ডেভিড বেইলির পদবী থেকে চ্যুত হয়ে গেছিলেন। উনারে উইকিতে পাওয়া গেল ম্যারি হেলভিন নামে। এই নামেই ইমেইজ সার্চ দিয়া সন্দেহ ঘুচল অবশেষে। এবং একখানি ইমেইজ বাইর করতে যেয়ে এইসব ঘাঁটাঘাঁটিতে বেশকিছু উপ্রি ইনফো জানা হয়ে যায় ইত্যবসরে, এর মধ্যে একটা হচ্ছে যে এই ম্যারি ইমরান খানের পার্টনার/সঙ্গিনী ছিলেন নাইন্টিসের একটা ভাগে। এককালের ফ্লেইমবোয়েন্ট ক্রিকেটখেড়োয়াল ইমরান খান সম্প্রতি বিশ্বপোলিটিক্সে খেড়োয়াল হয়েছেন। উনি শাদিশুদা নিয়া নানাবিধ পরীক্ষানিরীক্ষা করে গেছেন বাল্য হইতেই। রিসেন্টলি পাকিস্তানের মসনদে আসীন হবার দিনকয় আগে একখানা ম্যারিজ করেছেন, সম্ভবত ভোটারের ভাবগতিক দেখে হেন মোক্ষম ভাওতা। অ্যানিওয়ে। ম্যারি হেলভিন বা উৎপলজবানে যিনি মারী বেইলি, উনারে নিয়াই নিবন্ধ। রচনাটি লিখিত হবার কালে মডেলজির জীবনে ইমরানজির উদয় নিশ্চয় হয়নি, হলে পরে উৎপলের দুষ্টুমিষ্টি দৃষ্টি নিশ্চয় এড়াত না। ম্যারির জন্ম ১৯৫২ সনে। ১৩ অগাস্ট উনার বার্থডে। এখন তো আর মডেলিঙের বয়স নাই। তিনি ভালোই আছেন অবশ্য। খোঁজ নিয়া জানা যায়, ব্রিটিশ ‘ভ্যগ’ পত্রিকায় ফ্যাশনস্টোরিগুলোতে ম্যারি ফিরে ফিরেই মডেল হয়েছেন সেভেন্টিসের গোড়ায়। আরও নানান পত্রিকায়। ফ্রেঞ্চ এবং ইতালিয়ানেও। পরে টেলিভিশন ইত্যাদিতে। ডেভিড বেইলির সঙ্গে একাধিক প্রোজেক্টে এক্সটেন্সিভলি কাজ করেছেন মডেল হিশেবে। তাদের যৌথ প্রয়াসের নজির হিশেবে রয়েছে চার-চারটে কোলাবোরেটিভ ফোটোগ্র্যাফিক ব্যুক্স। ন্যুড ইত্যাদি জিনিশের আর্টিস্টিক হাজিরা সম্বলিত বইগুলো। ম্যারি (Marie Helvin) বা ডেভিডের (David Bailey) নামে গ্যুগল্ করে এইসব কাহিনি আরও বিশদে জানতে পারবেন যদি কারো দরকার পড়ে। এর বেশি কিছু না। — গানপার
… …
- যেভাবে হয়ে ওঠে ‘এসো আমার শহরে’ || শিবু কুমার শীল - March 6, 2025
- Basudeb Dasgupta’s ‘Randhanshala’ The Cooking Place translated by Sourav Roy - March 4, 2025
- ভিক্টোরিয়া অ্যামেলিনা ও যুদ্ধদিনের ইউক্রেনীয় কবিতা || জয়দেব কর - February 17, 2025
COMMENTS