ফ্যাসিবাদ, বৈদেশিক

ফ্যাসিবাদ, বৈদেশিক

ধন্যবাদ, সঞ্চালক, গানপার! ফ্যাসিবাদের ঐতিহাসিক বিবর্তন ও তার সঙ্গে বৈদেশি সৃষ্টিজীবীগণের সংযোগ (*আপনি যেহেতু দেশি চ্যাপ্টারটা উহ্য রাখতে চাইতেসেন এবং কেন চাইতেসেন সেইটা মনে হয় আঁচ করতে পারতেসি) নিয়া তাৎক্ষণিক বাগাড়ম্বরে গমন বেশ দুরূহ। রীতিমতো ওজনদার একখান বিষয়ে মগজের কোষ ধ্বংস করার উসকানি দিতেসেন আপনি। খোলাসা করেন নাই যদিও তবে গূঢ় কোনো ভাবনা মনে হয় আপনারে উত্যক্ত করতেসে। মিলান কুন্দেরার প্রয়াণজনিত অভিঘাত হয়তো সংগোপন সেখানে। যা-ই হোক, শোনা মাত্র এজরা পাউন্ডকে ইয়াদ করতে হয়। বোর্হেস উঁকি দিয়া যান একঝলক। হাইডেগারকে মনে পড়তেসে তাৎক্ষণিক। কাশ্মির ফাইলস  বা কেরালা স্টোরিকে আর্টিক্রাফট  বইলা বিবেচনায় নিতে আমার-আপনার মন কভু সায় দিবে না, উল্টা প্রবল বিবমিষা জাগ্রত হবে, কিন্তু ট্রায়াম্প অব দ্য উইলকে আর্টের শর্ত পূরণ করে নাই বইলা নাকচ করা কঠিন। মুভিটার নির্মাতা লেনি রিফেনস্টাহল যদিও পুরাদস্তুর নাজিপ্রেমী ছিলেন। প্রোপাগান্ডা ছড়াইতে ক্যামেরাকে কুশলতার সঙ্গে ব্যবহার করসিলেন এই নারী। ব্যবহারের কারণ পরবর্তীতে তাঁকে নিয়া নির্মিত তথ্যচিত্রে বিশ্বকে জানাইতে কৃপণতা করেন নাই।

ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সখ্য ও মোলাকাতের প্রশ্নে ওদিকে আবার হাইডেগারসখা হান্না আরেন্টকে আপনি ইয়াদ করতে বাধ্য। ইহুদি রক্ত ও তার শানমান দেহে বহন করায় তাঁর ওপর ইহুদি সম্প্রদায়ের অগাধ আস্থা ছিল। আইখম্যানের বিচারকার্যে ইহুদি সুশীলসমাজ হান্নাকে কাজে লাগাইতে মরিয়া ছিলেন। তাঁকে পর্যবেক্ষক হিসেবে বিচারকার্যে শরিক হইতে উনারা বাধ্যও করসিলেন। মনে আশা, তাঁর ক্ষুরধার কলম ও যুক্তিবাণ জল্লাদ আইখম্যানের দণ্ড নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে। হান্নার উপ্রে ভরসা রাখসিলেন তাঁরা। পরিতাপ এ-ই যে, উনাদের এই ভরসার দাম হান্না তখন দিতে পারেন নাই। আইখম্যান উল্টা তাঁর জীবনে দুঃসহ বিড়ম্বনা ত্বরিত করসিল। লোকটারে সকল নাটের গুরু বইলা দাগানোকে বাতুল ভাবতে বাধ্য হইসিলেন হান্না। কারণটা পরে Banality of Evil  নামক ফ্রেজিংয়ের সাহায্যে ব্যাখ্যা করসিলেন ধীমান এই বুদ্ধিজীবী। ব্যাখ্যাটা নিয়া অত্র বিস্তারিত হওয়ার সুযোগ নাই। তাড়ায় আছি বলতে পারেন। উইকি  নতুবা চ্যাট জিপিটিরে খানিক পুছতাছ করলে চটজলদি ধারণাটা তারা দিয়া দিবে। আমাদের পারপাস  যদি ভাবেন তাইলে ওইটুকু আপাতত কাফি মনে হয়। আরেন্টের জীবনে দেখা-দেওয়া ক্রাইসিস নিয়া তাঁর স্বদেশী মার্গারেট ফন ট্রটা দারুণ একখান ছবি বানাইসিলেন। সেইটা ফাঁক করে দেখে নেওয়া সওয়াবের কাম। Banality of Evil-র মামলা দিমাগে বিলকুল সফা হয়ে যাবে আশা করি।

আরেন্টকে স্থগিত রেখে এইবার মাও-সে-তুংকে ইয়াদ করেন। উনার সাংস্কৃতিক বিপ্লব যে-কর্তৃত্ববাদকে চিনদেশে অমোঘ করসিল তার হালত নিয়া ক্যাচালের অন্ত ছিল না সেই সময়। দেশ পুনর্গঠনের বাহানায় সংঘটিত বিপ্লবের স্বপক্ষে বড়ো-বড়ো নামের মিছিল তখন দেখসে বিশ্ব। বুড়াকালে হিটলারি কাজকারবারে নিজের সম্মোহন ও সংযুক্তির ঘটনা নিয়া গুন্টার গ্রাসের স্বীকারোক্তির কথাও ইয়াদ করা যাইতে পারে। নিটশে কস্মিনকালে ফ্যাসিস্ট মতবাদের পরিপোষকতা করেন নাই, আমার যৎসামান্য পাঠজ্ঞানে সেরকম মনে হইসে, তথাপি তাঁর উবারম্যানশ  থুড়ি অতিমানবের দার্শনিক ভাবনাটারে নির্মমভাবে নিজের গড়ন মোতাবেক ভাষান্তর করতে হিটলার তিলেক দ্বিধায় ভোগে নাই! নিটশে ও হাইডেগার হইতেসেন পশ্চিমের হতভাগা দুই দার্শনিক! পাবলিক আজোবধি ভুল জায়গা হইতে এই দুইজনকে অবিরত ব্যাখ্যা ও পাঠে শামিল হয়। সমস্যাটা বোধ করি উনাদের দার্শনিক বচন ও যুক্তি বিরচনের ধারায় নিহিত। বচনগুলা এমনধারা হেঁয়ালিতে ভরাট, এর দেহ থেকে উদ্দেশ্যমূলক একরৈখিক অর্থ পয়দা বা প্রয়োজনে এস্তেমাল করা আদতে লোকের কাছে বেশ সহজ মনে হইতে থাকে। হিটলার এই সুযোগটাই নিসিলেন তখন।

কত নাম নিবেন আপনি! ত্রিশের দিনকালে ফ্যাসিবাদকে চুপিসারে নয়তো সরবে কোনো-না-কোনোভাবে বৈধতা দান করতে তৎপর লিটারারি জায়েন্টদের নিয়া জুলিয়া বয়েডের একখানা রচনা পাঠ করসিলাম লিট হাব-এ। নেট হইতে তার লিংকটা শেয়ার দিতেসি এইবেলা। বয়েড যাদের নাম নিসিলেন তাঁরা সাহিত্যের রথিমহারথি। উইন্ডহ্যাম লুইস, হেনরি উইলিয়ামস, নুট হামসুন, এজরা পাউন্ড দাপুটে স্বরে ফ্যাসিবাদের স্বপক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে উতলা ছিলেন। এলিয়ট ও ইয়েটসের ঘাড়েও নাকি এর ভূত চড়ে বসছিল প্রায়!

সালভাদর দালির কথা ইয়াদ করা লাগে একবার। ফ্যাসিবৈকল্যে দারুণভাবে সম্মোহিত ছিলেন দালি। পরাবাস্তববাদী আন্দোলনের ইশতেহার, অঁদ্রে ব্রঁতো যার খসড়া লিখসিলেন, খেয়াল করে যদি কেউ পাঠ করেন তাইলে এর মধ্যে ফ্যাসিবাদী ফ্যাসিনেশনের ঝিলিক ঠার পাওয়ার কথা। দালির পরাবাস্তব বিশ্বে সময় গলতে থাকে। গলিত সময়টাকে অতিক্রম করে তিনি কিন্তু পা রাখেন কর্তৃত্ববাদে ভরপুর এক স্বপ্নগ্রস্ত দুনিয়ায়। হিটলারের গুম্ফ যেখানে তাঁর কাছে পৌরুষের অপরাজেয় প্রতীক বইলা গণ্য হইতে থাকে। ওই গোঁফের মধ্যে রমণীর রমণীয়তা ও পুরুষের পরাক্রমকে অর্ধনারীশ্বর রূপে বিরাজ করতে দেখার বিমার দালিকে পেয়ে বসছিল। বদ খোয়াবটা তাঁকে দিয়া দারুণ সব ছবি আঁকাইতে সক্ষম হইলেও ফ্যাসিমোহের কবল থেকে মুক্তি মিলে নাই। মইষের শিংয়ের মতো দুই দিকে খাড়া দালির গোঁফটা এইবেলা স্মরণ করেন, হিটলারকে সেখানে বিলকুল হাজির দেখতে পাইবেন। গোঁফ নিয়া এই ফ্যাসিনেশন ও এর মধ্য দিয়া নিজের পার্সোনাকে সাড়ম্বরে তুলে ধরার পরাক্রম অদ্য উপভোগ্য মনে হইলেও দালির কাছে ওইটা জীবনমরণ সমস্যা ছিল। হিটলার যেমন নিজের পরাক্রমে গোটা মানবপ্রজাতিকে দাবিয়ে রাখার মধ্যেই আর্যরক্তের উত্থান ঘটতেসে বইলা বদ্ধমূল ছিলেন।

এরকম শত-শত নাম বোধ করি নেওয়া সম্ভব, তবে তার জন্য ব্যাপক ঘাঁটাঘাঁটি করতে হবে এই যা! সমস্যা সেখানে না, সমস্যা বরং এই প্রশ্নের মধ্যে নিহিত, উনারা কেন ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করতে এতটা সবাক ও তৎপর ছিলেন ওই সময়? এর জবাব কার্যত জটিল ঘূর্ণির সমতুল। হাইডেগারের অনুপম দিনলিপি ব্ল্যাক নোটবুক  পড়তে গিয়া বিষয়টা খানিক মালুম হইসিলো। সে এক লম্বা কাহিনি। হান্নার Banality of evil  নামক ফ্রেজিংটারে মগজের ভিত্রে নিতে পারলে খানিক ধারণা হয় তার।


যা-ই হোক, ভীষণ ভালো একখানা উসকানি আপনার মাথায় ভর করসে এইটা কবুল করতে দ্বিধা নাই। ইচ্ছা আছে সময় করে লেখার। লেখাটা জরুর। মোদের ছোট দেশকালে ফ্যাসিবাদ কতটা কী পরিমাণে আছে সেইটা নিয়া আমার সন্দেহ অবশ্য আজো দূর হয় নাই। আমাদের এখানে কথায়-কথায় ফ্যাসিবাদ নামে লোকজন যারে দাগায়, ওইটা কি সত্যি-সত্যি ফ্যাসিবাদ নাকি সুবিধাবাদ, এই ধন্দটা মনে কাজ করে বিলক্ষণ। পশ্চিম গোলার্ধে যেইটা দেখতে পাই, যার নবীন স্বরূপ অদ্য পুতিনচাচার মন্ত্রণাদাতা বইলা বিদিত আলেকজান্ডার ডুগিনের ফোর্থ পলিটিক্স-এ ক্রমশ নগ্ন হইতে দেখতেসি, অর্থাৎ জাতীয়তা ও ঐতিহ্যে ফেরত যাওয়ার নামে বিশ্বের উপ্রে পূর্ণ কর্তৃত্ববাদ ও নিয়ন্ত্রণ আরোপণ, এইগুলা হইতেসে ফ্যাসিবাদের খাঁটি চেহারা। ভেজাল হওয়ার কারণেও বটে, আমাদের ফ্যাসিবাদের সেই এলেম নাই।

প্লেটোর রিপাবলিক  গণতন্ত্রকে জুতাপেটা করতে বাকি রাখে নাই একদা। গণতন্ত্রের সাক্ষাৎ পরিণতি নিয়া সক্রেটিসের লম্বাচওড়া ভাষণটারে সোজা কথায় অযৌক্তিক বইলা খারিজ করা তা-বলে সহজ না। অন্যদিকে কর্তৃত্ববাদ, স্বৈরতন্ত্র ইত্যাদিকে প্লেটো তাঁর কিতাবে ছাড়পত্র দিসিলেন এই শর্তে, রাষ্ট্রের থাকবন্দি কাঠামোটা যদি দার্শনিক ভিত্তির উপ্রে খাড়া থাকতে পারে, যেখানে শাসক আক্ষরিক অর্থে সক্রেটিস টাইপের কেউ হয় তাইলে কর্তৃত্ববাদে ফায়দা অশেষ। হাস্যকর হইলেও রিপাবলিক-এ চাউর আইডিওলজি বা ভাবাদর্শে ভর দিয়া ফ্যাসিবাদের প্রথম ভিত্তি পশ্চিম গোলার্ধে গতি লাভ করসিলো। নিটশে এই বিষয়টারে দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করসিলেন আর হাইডেগার প্লেটোকে তুলাধুনা করতে বাকি রাখেন নাই নিজ কিতাবে। মোদ্দা কথা, পশ্চিমে ফ্যাসিবাদ একটা পরিষ্কার ভাবাদর্শের বাহক রূপে হিটলার, মুসোলিনি আর সমাজতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদের কাণ্ডারি স্টালিন কিংবা প্রাচ্যে মাও-সে-তুংকে অবধারিত করে তুলসিলো। উক্ত ভাবাদর্শের সঙ্গে সুবিধাবাদী ওরফে অপরচুনিস্টের বিস্তর ফারাকটারে বিবেচনায় রাখা যাইতে পারে। আমাদের এখানে রাষ্ট্র ও তার পক্ষে-বিপক্ষে যত ক্যাঁচাল তার সবটাই সুবিধাবাদের উপ্রে দাঁড়ানো। আপাতভাবে ওইটা স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের ভেক ধারণ করলেও প্রকৃত ফ্যাসিবাদের সঙ্গে তার দূরত্ব সুদূর। মোদের কবিলেখকচিত্রী তথা সুশীল সমাজ নিছক হালুয়ারুটির কারবারি, ফ্যাসিবাদকে নিজে দেহে আত্মস্থ করার এলেম বঙ্গ বা ভূভারতে এখনো দৃষ্ট নয়।

কথার কথা, ভারতবর্ষে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন বা গণ্ডি আরো ছোট করে আনলে চারু মজুমদারের নকশালকে যদি বিবেচনায় রাখি, নকশালটা ধরেন যদি সফলকাম হইতে পারত তবে পরিণামে তার ফ্যাসিবাদে মোড় নেওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল। জর্জ অরওয়েল যে-কারণে এ্যানিম্যাল ফার্ম  ও 1984-এ সকলপ্রকার রাজনৈতিক কর্তৃত্ববাদ ও ভাবাদর্শকে নিয়া ইয়ার্কি করসিলেন। ইংরেজের হয়ে ভারতবর্ষে কামলা দিতে আসা অরওয়েল সাক্ষাৎ সায়েব ও ডাকাবুকো ইংরাজ হলেও রাজনৈতিক পন্থাগুলা কীভাবে ফ্যাসিবাদী বেশভূষায় চকমক করে সেইটা ঠার করতে পারসিলেন তখন। সো, মেইলে আপনার পয়লা সতর্কবার্তা ‘ভাবার সময় দেশের ভাষার লেখকদের প্রসঙ্গ একবারও না এনে ভাববেন…’, কথাটা আপনা হইতে অবান্তর হইতে বাধ্য। বিষয়টা নিয়া যদি মগজের কোষ ধ্বংস করার মতো অবকাশ পাই তাইলে কথা কবুল,—হালুয়ারুটির কামড়াকামড়ি বাদ দিয়া বৈদেশে দৃষ্ট ফ্যাসিবাদের হররতুল্য  কাজকারবার, মুসোলিনিকে জুতাপেটা করার খায়েশে পিয়ের পাওলো পাসোলিনি Salò, or the 120 Days of Sodom নামের মুভিতে যার চেহারা তুলে ধরসিলেন, তো এই পায়ুসঙ্গমে গভীরনিবিড় ফ্যাসিবাদ কিংবা তার সঙ্গে সৃষ্টিজীবীদের কামলীলায় শায়িত মনোজাগতিক বৈকল্য নিয়া বাক্য খর্চা হবে। যেসব রথি-মহারথির নাম তাৎক্ষণিক নিতেসি এখানে, উনাদের এহেন ফ্যাসিমোহের নেপথ্যে সময় ও তার গর্ভে জন্ম নেওয়া ঘটনাপ্রবাহের ভূমিকা মর্মান্তিক। আমাদের ফ্যাসিমোহ থেকে ওইটা পৃথক প্রজাতির। সবিস্তার ব্যাখ্যায় গমন ভিন্ন এই বিমারে উনারা কী কারণে আক্রান্ত তার রহস্য বুঝে আসবে না। এর জন্য সময় প্রয়োজন। কাজেই সুযোগ করে লেখার ইচ্ছা রাখি সবিস্তার।

আল বিদা বলার ক্ষণে এজরা পাউন্ডকে ফের একবার ইয়াদ করে যাই। নাজিবাদের পরিপোষকতা করায় তাঁকে বিচারের সম্মুখীন হইতে বাধ্য করা হয়। জন্তুকে যেমন খাঁচায় কয়েদ করে রাখে, পাউন্ডকে সেভাবে রাখা হইসিল তখন। জগৎবিখ্যাত কবির দুর্দশা অনেকের সহ্য হয় নাই। তারা বহুত আবেদন-নিবেদন করসিলেন কবির পক্ষে। যে-কবি ঘাসে একরত্তি কাঁপন না তুলে মেঠো ইঁদুরের গর্তে জীবনকে সেঁধিয়ে যাইতে দেখে শিহরিত বোধ করসিলেন, তাঁর অন্তটা কিন্তু ওই সেঁধিয়ে পড়ার অনুরূপ নাটকীয় ছিল। ফ্যাসিমোহে আক্রান্ত হওয়ার মূল্য দিতে বাধ্য ছিলেন এজরা পাউন্ড। চিন দেশে ভ্রমণের সুবাদে হাইকুর প্রেমে পড়সিলেন কবি। সেই সময় এর ইমেজারিকে ধরার খেয়ালে দুই হাত খুলে হাইকু আঙ্গিকে কবিতা লিখসিলেন। তার একটি অদ্য মনে পড়তেসে। নিটশের ভ্রান্ত পঠনের সঙ্গে পাল্লা দিয়া মানবিক এক সংবেদন যেখানে বহমান রাখসেন কবি। তো সে-কবিতার চরণগুলা (*নিজের অখাদ্য তরজমায়) গুণগুণ করে যাই এবার : নিটশে সত্য কথাই কইসেন জানি / কিন্তুক / রাস্তায় এক শিশুর মুখের লগে সাক্ষাৎ / বড়ো সুন্দর লাগসিল তারে। এই দ্বন্দ্বটাই বোধহয় বৈদেশের কবিলেখকচিত্রী কিংবা বিজ্ঞানী-দার্শনিক আর এ-রকম অতিকায় সব জায়ান্টদের ফ্যাসিবাদী মোহে বারবার সম্মোহিত করে যায়, যার মধ্য দিয়া উনারা শিশুমুখ দর্শনের পরম মানবিক সুন্দরকে বিস্মৃত হইতে থাকেন। বিস্মরণের এই ফাঁদ নিয়া আপাতত এটুকু, বাকিটা তোলা থাক ভবিষ্যে।

আহমদ মিনহাজ


রিলেটেড রচনারা
গ্রাসরুটসের গান
সাহিত্যমেলা নিয়া দু-চার কথা
জেলায় জেলায় বিভাগে বিভাগে সরকারি সাহিত্যমেলা
প্রশাসনের সাহিত্যমেলা আয়োজন ও বয়কটকারীদের অবস্থানপত্র

COMMENTS

error: