হার রয়্যাল হেল্থি-ল্যুকিং ফিগার

হার রয়্যাল হেল্থি-ল্যুকিং ফিগার

সেই-যে একটা আজদহা জাহাজ, নাম ছিল টাইটানিক, সেই জাহাজে চড়ার মুহূর্ত থেকেই তিনি স্টার। জাহাজ যত ডুবছিল, ততই তিনি উঠছিলেন ভেসে। দেখছে দুনিয়া তার উত্থান, ঊর্ধ্বারোহণ, দেখেই চলেছে। মেঘে মেঘে, রোদের কিরণে, পাইনঘেরা পাহাড়চূড়ায়, সমুদ্রের পানিশীর্ষে, আকাশে আকাশে এই নিগূঢ় উত্থান। তিনি কেইট উইন্সলেট (Kate Winslet)। টাইটানিকস্টার।

সিন্স কেইট উইন্সলেট বিকেইম অ্যা স্টার ইন টাইটানিক, হার হেল্থি-ল্যুকিং ফিগার হ্যাজ অ্যাট্র্যাক্টেড অ্যা লট অফ অ্যাটেনশন। বহু লোকে তারে পেছন থেকে দুয়ো দিয়েছে, এমনকি সামনাসামনিও শুনতে হয়েছে মেদস্ফীত মুটকির মুচকি টিপ্পনী। তিনি নির্বিকার। খোদার খাসি বলেছে কেউ, উনি ইজিলি নিয়েছেন ব্যাপারটা। আস্ত দুনিয়া আজকে কেইটের মেদমুগ্ধ।

তুমি যখন খোদার উপর খোদকারি করে হেল্থ-কনশাস্ সাজছ, যখন দুই লোকমা খাইতে যেয়ে এগারোবার ভাবছ, অসুখী থাকছ চৌপর নিজের ফিটনেস নিয়া খামাখা ভেবে, এটা-ওটা সার্জারি করাতে হেঁদিয়ে মরছ বদ্যিখানায়, কেইট উইন্সলেট মোক্ষম সময়েই হাজির হতেছেন তোমার সামনে। এবং উচ্চারিছেন মাভৈ! মেদ আছে তো কী হয়েছে? কুচ পরোয়া নাই।

জিরো ফিগার হাসিল করবার জন্যে এত যে মরিয়া, আস্তে চলো, গার্লফ্রেন্ড! ভাইট্যাল স্ট্যাটিস্টিক্স দেখে কেউ যদি ভালোবাসতে আসে তোমায়, তেরোটা আপার-কাট আর আঠারোটা ফিস্ট বাগিয়ে তেড়ে ওঠো ওই বিদঘুটে প্রেমিকটির সামনে। একুশ দিনের জিন্দেগি তোমার, ভবে এই নিতান্ত হ্রস্ব মানবজনম, যথেচ্ছা খাওদাও। শুধু ন্যাচারাল বিউটিটারে হেফাজতে রেখো।

উইন্সলেট আজ যা হয়েছেন, মেদস্নিগ্ধ মন্দ্র গজগামিনী, সেজন্যে এক্সট্রা কোনো উয়্যিয়্যার্ড গ্রুমিং নিতে হয় না তারে। যেমন আল্লা তারে রেখেছেন, তাতেই তিনি হৃষ্টচিত্ত। শরীর তলোয়ার নয়, দীপ্ত বুদ্ধি আর ইউনিক ব্যক্তিত্বই তীক্ষ্ণ সোর্ড তোমার, এই কথাটি মনে রেখো। পুরুষের পৃথিবীতে হেল্থচেতনা আরেকটা ধাপ্পার নাম, ভাবো, বুঝে দ্যাখো। উইন্সলেট কি বলছেন, শোনো :

Kate Winslet

জিরো সাইজ ফিগারের চাপ বিষয়ে কেইট
আমার আজকাল মনে হয় যে অ্যানোরেশিক্স রোগে ভোগা একটা আস্ত প্রজন্ম হলিউড পয়দা করে চলেছে এভ্রিডে। এই বিশাল লোকগোষ্ঠীর দিকে তাকাই আর খালি চিৎকার দিয়া তাদেরে ডেকে ডেকে বলতে ইচ্ছে করে, আরে বাবা, এত শুঁটকিয়ে না যেয়ে একটু খাওয়াদাওয়া করো ভালোমন্দ মনটা যা চায়। কিচ্ছু হবে না দ্যাখো, তুমি ঠিকই আছো, তুমি ঠিকই থাকবে।

প্ল্যাস্টিক সার্জারি বিষয়ে কেইট
মনে হয় না আমি ইহজন্মে এই জিনিশটার ভিতর দিয়া যাব। প্ল্যাস্টিক সার্জারি জিনিশটা আমার জন্যে না। আমার যত বয়স ঘনাচ্ছে, এই-সমস্ত বডি-ইমেইজের বদমায়েশি বিষয়ে আমি আরো বেশি রিল্যাক্সড হচ্ছি। আমি হই তা, যা আমার চিন্তা; আমার চিন্তা দিয়াই আমি, শরীর দিয়া না। আমার শরীর আমার চিন্তার উপরে শাসন করে না, আমার শরীর আমার চিন্তাকে ডমিনেইট করে না। গায়ের চামড়ায় কোথায় কয়টা ভাঁজ পড়ল, কতটুকু বলিরেখা প্রকট হলো গতরে, এইসব নিয়া ভাবনায় বেহুদা আমি দিন কাটাই না।

স্থূলাঙ্গী মুটকি ডাকত যখন সহপাঠীরা
বালিকাবেলায় ক্লাসমেইটরা আমায় মুটো বলে ভেংচাত হরদম। আমি খালি মাথা নিচাইয়া রাখতাম, কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতাম না, খারাপ লাগলেও সয়ে যেতাম। ওইভাবেই দিনগুলা পার করে এসেছি। টিন্যাইজ দিনগুলা। সার্ভাইভ করেছি স্রেফ এইভাবে।

কেইটের বাণী টু আদার্স
মনে হয় এখন আমি কিছুটা হলেও রোল-মডেল হতে পেরেছি; জিনিশটা হওয়া সম্ভব হয়েছে কেননা আমি ভিড়ের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে গলা উঁচায়েছি এবং বলেছি, দ্যাখো, ঈশ্বর আমারে একটা স্বাভাবিক শেইপ দিয়েছেন, এইটারে আমি বিকৃত করব কোন দুঃখে! এই জিনিশটা আমার জন্য বুঝতে শেখা জরুরি ছিল যে আমি রিয়্যাল ফ্যুড খাচ্ছি কি না, আর আমি তিরিশদিনই চিক্না থাকবার ডায়েটচিন্তা মাথায় নিয়া বাঁচব কি না। আমি ঈশ্বরের চব্বিশ ঘণ্টা খালি খাওয়ার চিন্তা করে কাটাব? খোক্কসরাক্ষসও তো তা করে না।

অনুসরণীয় সহনাগরিকার কাছ থেকে অ্যাডভাইস
এমা থম্পসন, ‘সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি’ সিনেমায় তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল, বলেছিলেন আমায়, এই-যে মেদটুকু তোমার, তুমি যদি মেয়ে এই মিষ্টি মেদটুকু কোনোদিন ঝরায়ে ফ্যালো কসরত করে, সেইদিন থেকে আমি তোমার সঙ্গে একদম বাক্যালাপ বন্ধ করে দেবো।

… …

পরের পোষ্ট

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you