আমারে কেউ ম্যুভিস্টার বললে এখনও চউখমুখ কুঁচকায়া যায় আমার। আমি বিব্রত হই রীতিমতো। মনে মনে নিজেরে শাসাই, কি হইসে, খামাখা নাটক কইরো না। আরে, তুমি তো ম্যুভিস্টারই। অ্যানিওয়ে। ব্যাপারটা ঘটে বোধহয় আমি ব্রিটিশ হওয়ায়। আমার কাছে ম্যুভিস্টার হলেন জুলিয়া রবার্টস্। লোকে আমারে যখনই ম্যুভিস্টার কয়া ডাকে, এইটারে স্রেফ কমপ্লিমেন্ট বইলা মাইনা লই। বিরাট কমপ্লিমেন্ট আমার লিগা। আল্লা, খালি কি কমপ্লিমেন্ট এইটা? না, আমার মনে হয় এর দায়িত্বটাও অনেক বিশাল।
বিখ্যাত হওয়ার লিগা আমার মধ্যে একদমই খাই ছিল না কোনোদিন। মোটাসোটা মানুষ আমি ছোটবেলা থিকাই। নিশ্চয় আপনারা জানেন যে একবার যে মোটা সে চিরকালই মোটা। ফ্যাট ভুঁড়ি কমাইলেও লোকে তারে মুটকি ফ্যাটি বইলাই চিল্লায়া ডাকে। এই জিন্দেগিতে আমি বিখ্যাত কোনো মোটা অভিনেত্রীর দেখা পাই নাই। কিন্তু সবসময় এই জিনিশটা আমি ভাবতাম যে, যা-ই হোক, লোকে আমারে যা-ই বলুক যেভাবেই দেখুক, ওদের দেখার মধ্যে একটা ভুল থাইকা যাইতেসে নিশ্চয়। এখনও আমি তা-ই মনে করি।
সবসময় চাই আমারে কেউ যত্ন করুক। খুব যত্ন করুক কেউ আমারে, এইটা আমি চাই। না, আমি হীরার আংটি পাইতে চাই না কারো কাছ থেকে, বা চাইলেও যত্ন বলতে সেইটা আমি মিন করছি না। নামিদামি খাইবার জায়গায় নিয়া খাওয়াইবার কথাও বলতেসি না আমি। এইগুলা আমারে বিব্রত করে। এইভাবে বাইড়া উঠি নাই আমি। কিন্তু খুব করে চাই আমি যে কেউ আইসা আমারে বলুক, আসো, তোমারে গোসল করায়া দেই, পিঠে ভালোমতো ডলা দিয়া নাওয়াইয়া দেই তোমারে আসো। অথবা চাই কেউ আইসা আমারে কউক যে আসো, তোমারে লইয়া মোড়ের চায়ের দোকানে যাই, গলাটা ভালো কইরা ভিজাই, আসো, তুমি আর আমি খালি। আর কেউ না। আর কিছু না।
আমি যখন ‘ইটার্ন্যাল সানশাইন অফ দি স্পটলেস মাইন্ড’ করতেসিলাম, আমারে কে একজন আইসা জিগাইসিল যে তোমারে যদি বলা হয় জীবনের একটা অংশ মুইছা ফালাইতে যেই অংশটা তোমারে কষ্ট দ্যায়, তাইলে কোন অংশটা মুছতে চাইবা তুমি? প্রশ্নটায় আমি ভীষণ চিন্তিত হইসিলাম। পরে ভেবে দেখসি যে এমন কিছুই নাই আমার জীবনে যা ফালায়া দিতে চাইব আমি। ভালা হউক বা খারাপ সবকিছুই আমার লাইফের পার্ট এবং আমারে এই আজকের আমি পর্যন্ত নিয়া আইতে খারাপটাও অবদান রাখসে। কাজেই কিচ্ছু মুছতে চাইব না আমি।
আমার জীবন বদলে দেয় ‘হ্যাভেনলি ক্রিচার্স’ ম্যুভিতে জুলিয়েট চরিত্রে অভিনয়, একইভাবে বলব যে ক্লেমেন্টাইন নামে একটা ক্যারেক্টারে অভিনয় করসিলাম আমি ‘ইটার্ন্যাল সানশাইন অফ দি স্পটলেস মাইন্ড’ সিনেমায়, এইটা আমারে হেল্প করসিল অনেক অনেক দরোজা খুইলা দিতে, যে-দরোজাগুলা দিয়া আমি জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিশ সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা আরম্ভ করতে পারসি।
চয়ন, সংকলন ও অনুবাদন : বিদিতা গোমেজ
… …
- শৈলিন উডলির কথাগুলি (৭) - August 11, 2019
- কেইটের কথাবাত্রা (১০) - July 25, 2019
- টিল্ডা টোল্ড (২) - May 12, 2019
COMMENTS