বানাম ভুল || ইমরুল হাসান

বানাম ভুল || ইমরুল হাসান

বানান ভুল নিয়া তো কয়দিন আগেই কিছু জিনিস লিখছিলাম, যে, ভুলগুলা অনেক সময় ইচ্ছা কইরাও হয়, খুব ইনটেনশনালিও হয়, এমন না যে ঠিক বানানটা আমরা জানি না বইলা হয়। তো, কোনো চিন্তা তো আর পুরাপুরি শেষ হয় না, একটু একটু কইরা ছড়াইতে থাকে।

হিউমার নিয়া একটা বই লেখার কথা ভাবছিলাম, অইটা তো আর হইলো না। এখন ভাবতেছি ভুল নিয়া একটা বই বানানো যাইতে পারে। লিখছি তো কিছু জিনিস। আর কিছু জিনিস লিখবোও।

তো, এইবার মনে হইছে, জীবনানন্দ দাশের দাশ  নিয়া। অনেকে তো দাশ  লেখেন আর দাসও আছেন। হাইস্কুলে থাকার সময় আমার এক ক্লাসমেট ছিল, অর নামের পদবী দাস  ছিল। জীবনানন্দের নামও দাস  ছিল, উনি পরে দাশ  লেখা শুরু করছেন, দাসগুপ্ত  আর দাশগুপ্তও লিখছেন কিছুদিন। সার্টিফিকেটে যে কি আছে, সেইটাও দেখা যাইতে পারে,যদিও সার্টিফিকেট মানেই সত্যি না, কিন্তু নমুনা হিসাবে দেখা আর কি! উনি ব্রাহ্মধর্মের দোহাই দিছিলেন, এই পদবী চেইঞ্জ করার ব্যাপারে। দুইটা রেফারেন্স দিতেছি, নিচে। চিত্তরঞ্জন দাশও দাশ  লিখছেন। মেবি উনারে ফলো কইরা থাকতে পারেন জীবনানন্দ। আর উনার নামে দাশ  না লিইখা কেউ দাস  লিখলে উনি মাইন্ড করতেন অনেক, এইরকম কথাও আছে।

তবে একটা ‘সত্যি’ কথা বলছেন সুধীন দাশ, মিউজিশিয়ান। উনি কইছেন, উনারে দাস  বইলা ইনসাল্ট করত কলকাতার লোকজন, দাস  না লিইখা দাশ  লিখেন বইলা। কারণ দাস  যাদের পদবী তারা নরমালি লোয়ার কাস্টের লোকজন। তো, কলকাতার একটা সাইটে দেখলাম এইরকম একটা কথা বলছে যে, দাস  মানে চাকর আর দাশ  মানে জেলে … এইরকম একটা জায়গা থিকা আসছে, দাস ও দাশ। কিন্তু ইউজের যেই প্যাটার্ন দেখা যাইতেছে সেইখানে এই অরিজিনালিটির আর্গুমেন্ট এতটা ভ্যালিড বইলা মনে হইতেছে না।

মানে, খোঁজখবর করলে তো একটাকিছু বাইর হয়া আসবেই যে, দাশ  ও দাস  আলাদা কিছু কি না, নাকি দাস  পদবীটা পরে কনভার্ট হয়া দাশ  হইছে। কিন্তু এইটা তো জীবনানন্দ দাশের কনভার্শন আর সুধীন দাশের বলা থিকা এইটা তো বুঝা যাইতে পারে মনেহয় যে দাস  জিনিসটা খুব-একটা ভালো জিনিস না, নামের সাথে ক্যারি করাটা। এই কারণে এই ভুলগুলা করছেন অনেকে। করাটা জাস্টিফাইড কি না, সেইটা কখনোই ঘটনাটা না। কিন্তু ভুলগুলা যে হইছে খুব কনশাসলিই, সেইটার কথাই বলতে চাওয়া আসলে।

আবার যদিও ইসকনের মেম্বাররা মনেহয় একভাবে দাস  ইউজ করেন, মানে, অন্য-একটা মিনিঙে গিয়া, উনারা ভগবানের দাস হয়া যান, সোশ্যালি লোয়ার কাস্টের কোনো লোক না হইয়া। সেই দাসেরা এতটা ইনফিরিয়রিটি নিয়া থাকার কথা না।

দ্রষ্টব্য


১. উইকিপিডিয়ার এন্ট্রি জীবনানন্দ দাশের। শিক্ষাজীবন সেকশনে পাইবেন। https://bn.wikipedia.org/…/%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A…

২. একটা ব্লগের লেখা, পরে একটা নিউজসাইটও ছাপাইছিল। https://blog.mukto-mona.com/2015/01/09/44139/

৩. সুধীন দাশের কথা। https://www.kalerkantho.com/…/kothaikothai/2016/01/29/318569

৪. কলকাতার একটা সাইটে দাশ ও দাস নিয়া বলা। অথেনটিক কোনো সোর্স নাই। https://www.kolkata24x7.com/tittle-mistry/

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you