সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট শেষাংশ

সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট শেষাংশ

ইন্টার্ভিয়্যুটার ফোর্থ  পার্ট এইটা। লাস্ট পার্টও। সমাপ্ত হচ্ছে কেইট উইন্সলেট সাক্ষাৎকারের বাংলাধারণ এই কিস্তির মাধ্যমে। এর আগের দুইটা পার্ট গানপারেরই কথাবার্তা   বিভাগে ছাপা হয়েছে। মেইন ইন্টার্ভিয়্যু গ্যুডহাউসকিপিং  নামে এক পত্রিকায় পাব্লিশ হয়েছিল ২০০৭ ফেব্রুয়ারিতে। এর তর্জমা প্রায় একদশক পরে হলো।

অত পুরানা সাক্ষাৎকার কেন, নয়া সাক্ষাৎকার চাইলেই কি ছাপানো যেত না বাংলা করে? তা যেত হয়তো, তবে কেন দশকপুরানা সাক্ষাৎকার বাছা হয়েছে, পড়তে স্টার্ট করলেই ক্লিয়ার হবে আশা আছে।

একটা পারিবারিক চেহারার কেইটকে দেখতে পাই আমরা এইখানে। এবং অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত। অত্যন্ত অন্তরঙ্গ। ঘরকন্না নিয়া আলাপেও অভিনয়শিল্পীরা দার্শনিক বোধির বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারেন, কেইটের মতো কেউ কেউ সেইটা আমাদেরে দেখান।

অবশ্য কেইট উইন্সলেট বরাবরই এইরকম। উজ্জ্বল। সরস। জীবন্ত। আশাকরোজ্জ্বল। অভিনয়ে যেমন, অনভিনয়েও। জৈবনিক অভিজ্ঞতার বর্ণনা তার বয়ানে প্রাণ পায় ভিন্ন মাত্রায়। এইখানে সেই জিনিশটার হাজিরা আরেকবার দেখে নেব।

কথালাপটার আগের অংশগুলো গানপারস্থিত ‘কথাবার্তা’ আর্কাইভ হাতড়ে পেয়ে যাব। তবু সুবিধার দিকটা মাথায় রেখে এই লাস্ট পার্টের লেজে আগের পার্টত্রয়ের লিঙ্কগুলা রাখা আছে। দেখে নেবেন কেউ দরকারমতো।

পূর্বে বলা হলেও অধিকন্তু ন দোষায়, লিজ স্মিথ নিয়েছেন মূল সাক্ষাৎকারটা। আংরেজিতে। এইখানে বাংলায় ট্র্যান্সলেইট করা হয়েছে। একটানা নিচে দেখে যেতে পারব কথাবস্তুটা।

একটা ম্যাগাজিন তাদের প্রচ্ছদে আপনার ছবি রিটাচ করে ছেপেছিল যাতে আপনারে আরও লম্বা আর ছিপছিপে দেখায়। এই জিনিশটা আপনি সেইসময় আপত্তিকর বলে এই রিটাচের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন।
আরে, আর বলবেন না, খালি কি রিটাচড ইমেইজই ছাপিয়েছে? টেনে ছেঁচড়ে চ্যাপ্টা বানায়েছে এরা আমার শরীরী ইমেইজটারে, যেন আমারে দেখতে ছয়ফিট লম্বা আর সাইজে বেশি-থেকে-বেশি দুই পর্যন্ত দেখায়। কিন্তু গোটা ইমেইজটাই মিথ্যাচার তো! সত্যিকারের আমি দেখতে এর চেয়ে খাটো এবং শরীরসাইজের দিক থেকে ইদানীং ছয় বা আট অন্তত। ওরা আমারে খাটো আর স্লিম দেখাইতে গিয়া আমারে অপমান করেছে আর আমার ভক্তদের লগে করেছে প্রতারণা। আমি যা, আমার ছবিতে কেন তা না দেখিয়ে মিছামিছি স্লিম দেখাতে হবে? আমি তো ছয়ফিটের মতো অত লম্বা না আর সাইজেও মোটাসোটা।

আমার তো মনে হয় আপনি যা তাতেই বিউটি আপনার।
আমি বলব, নর্ম্যাল। মোটামুটি স্বাভাবিক একটা দৈহিক সৌন্দর্য আমারও রয়েছে আর-দশের মতো। দরকার নাই এই সাইজ নিয়া ভাওতাবাজির, দরকার নাই এরচেয়ে বেশি উচ্চতা, আমার সাইজের চেয়ে আমারে লিন-অ্যান্ড-থিন দেখাইবার কোনো দরকারই তো নাই। বাচ্চা প্রসবের সময় থেকে আমার শরীর মোটামুটি থিতু হয়েছে এই সাইজে এই শেইপে। এবং আমার মনে হয় বেশিরভাগ নারীই সন্তান জন্মদানের সময় এইরকম একটা আকারে সেটল-ইন করে। তাদের হরমোন এইভাবে সেটল-ডাউন করে বাচ্চা প্রসবের পরে। কাজেই আমারে এই ওজন এই শেইপ বজায় রাখতে হবে আরও কিছুদিন আমার বাচ্চাদেরই সুস্বাস্থ্যের স্বার্থে। এখন আমি নিজের স্বার্থ দেখলে বা আমার পেশার উন্নতিস্বার্থ দেখলে তো হবে না। আমার বাচ্চাদের স্বার্থ সবসময় আমারেই প্রাধান্য দিতে হবে। এখন আমি আর আমার ওজন নিয়া ভাবি না। খামাখা দুশ্চিন্তা করি না গাগতরে বেশি ভারী হয়ে গেলাম কি না। আমি বরং স্বাভাবিক থাকি। ক্রিসম্যাসে যতটা পারি গেলাশ ভরে শ্যাম্পেইন খাই বা ক্যানাপি ইত্যাদি। কিছুই বাদ দিয়া আমি বিউটি বজায় রাখার পক্ষে না। আমি সবকিছু সঙ্গে নিয়াই সিনেপেশায় থাকতে চাই। কিছু-একটা বাদ দিয়া আমি সিনেমাশিল্পের চূড়া আরোহণের পক্ষপাতী না। আমার মনে হয় এইভাবে জীবনযাপনে একটা ভয়ঙ্কর অতৃপ্তির ফাঁকা জায়গা পেছনে থেকে যেতে পারে। এতটা ফ্যানাটিক হয়ে স্রেফ পেশার উন্নতির জন্যে বেবাক জলাঞ্জলি দিয়া বাঁচা আমার পক্ষে সম্ভব না।

সাতফিট লম্বা আপনি নন বুঝলাম, কিন্তু এর বাইরে এমনকিছু কি আছে যেইটা মানুষ আপনার সম্পর্কে এখনও জানে না আর জানতে পারলে শকড হবে?
দেখেন, আমি আমার পায়ের ব্যাপারে অ্যা লিটল বিট অবসেসিভ। সমস্ত নষ্টের গোড়া আমার পা। আমার মনে হয় এর বেশি কিছুই তেমন জানাইবার নাই নিজের সম্পর্কে। হা হা হা …

আপনার সত্যিই কি কোনো রহস্যময় রেসিপি আছে এই সৌন্দর্যের পিছনে?
ইয়া মাবুদ, না না, মোটেও না। আমি শুধু শুতে যাবার আগে খেয়াল করে মেকাপ তুলি মুখ থেকে চেঁছে, এইটা আমি ভুলি না, এই কাজ আমি রোজ ঘুমাবার আগে ধৈর্য ধরে করি। এমনকি দিনের হাজার হন্তদন্ত রুটিনের পরে আমি যদি হাঁপিয়েও উঠি কিংবা পরের দিন সকালে ফের যদি মেকাপ-প্রসাধনের পুনরায় প্রয়োজনও থাকে, তবু আমি রাতের বেলা খাটে-বালিশে গা ছাড়বার আগে মেকাপ তুলে ফেলতে ভুল করি না। তার মানে এ-ও না যে আমি ভীষণ মেকাপভক্ত। মোটেও না। আইশ্যাডো চোখে কেমন করে দিতে হয় তা-ও আমি ঠিকঠাক পারি না। আমি মেকাপ জিনিশটায় ঠিক স্বস্তিও বোধ করি না।

আপনাকে দেখে মনে হয় না আপনি বিখ্যাত হবার বিড়ম্বনায় বেশি ভোগেন বা আপনি ঠিক খ্যাতির ফাঁদে নিজেরে জড়াইতে দেন অল্পই।
আচ্ছা, আমি বলব যে খ্যাতি পাওয়া আর সেলেব্রিটি হওয়া আলাদা দুই জিনিশ। আরেকটা ব্যাপার কি জানেন, এই যে রেড কার্পেটে হেঁটে বেড়ানো বা ফ্যাশন প্রদর্শনীতে যাওয়া বা নানানকিছুর শুভমহরতের অনুষ্ঠানে হাজিরা দেয়া — একটা সময় এইগুলায় একদম মজা পেয়ে যাওয়া মত্ত হয়ে যাওয়ার ব্যাপার ঘটে। এইগুলা ফানি জিনিশই তো। তবে এই জিনিশগুলা আমি নিজের জীবনে প্রত্যেকদিনই ঘটুক তা চাই না, অ্যাট-লিস্ট হপ্তায় হপ্তায় এই ফান আইটেমগুলায় নিজের হাজিরা আমি চিন্তাও করতে পারি না। আমার মনে হয় এইটা রিয়্যাল না, ফেইক একটা ফান।

খ্যাতির সবচেয়ে খারাপ দিকটা কি বলে মনে হয় আপনার কাছে?
পাপারাৎসি। ক্লিয়ার্লি। পাপারাৎসি। নিজের মনে একা থাকি যখন, থাকতে চাই, তখন তো আমি চারপাশ সম্পর্কে চেতনা জাগায়ে রাখব না। আমি তখন পরোয়াই করি না চারপাশের। পাপারাৎসিরা আমার কি আর এমন ক্ষতি করবে? এরা আমার চারপাশ ঘিরে আছে, এরা থাকবে, যেমন অনেককিছু আরও রয়েছে। এই পাপারাৎসিরা আমার বাচ্চাদের জীবন কিন্তু দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। এইটাই আমারে ভীতসন্ত্রস্ত রাখে সবসময়। আমার ছেলেটা পাপারাৎসি জিনিশটা সম্পর্কে এখনও বুঝসমজ পায় নাই, কিন্তু আমার মেয়েটা পাপারাৎসি জিনিশটা এরই মধ্যে জেনেছে, এদের দৌরাত্ম্যও ও খানিকটা জানে এখন। বাইরে বেরোলে সে আমার পেছনে লুকিয়ে থাকে এই রকম সিচ্যুয়েশনে। সতর্ক থাকে কোনদিকে কে ঘাপটি মেরে ক্যামেরা নিয়া খাড়ায়া আছে। দেখতে পেলেই বা সন্দেহ হলেই কিন্তু বলে, মা, ডাইনে যেও না, পাপারাৎসি! দৌড়াও! আমরা মায়েঝিয়ে চেষ্টা করি ‘ওরা ভার্সাস আমরা’ লড়াইয়ে নেমে অক্ষত ঘরে ফিরতে। এইটাও কতটা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন তা আমার অজানা অবশ্য। (হাসি) …

নিউইয়র্কে একটু মনে হয় নিরিবিলি থাকতে পারছেন, অল্প হলেও। লোকের ভিড়ে তেমন সমস্যা কমই হয় মনে হয় …
এইটা দারুণ মজার একটা ব্যাপার হয়েছে যে এইখানে লোকে আমারে চট করে চিনে উঠতে পারে না … তারা বুঝতে পারে ঠিকই যে কোথায় যেন চেহারাটা আগে দেখেছে, আগের দেখা কারো মুখের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে, এরপরও তারা নিশ্চিত হবার আগে পথচারীর ধাক্কায় আগায়া যায় সামনের দিকে।

স্যাম আর আপনি যখন ঘর বাঁধতে শুরু করেন তখন প্রেসপাড়ায় কথা উঠেছিল যে একটা সাক্সেসফ্যুল পতিদেবতা দেখে কেইট এইবার ভালোই দাম্পত্যবাণিজ্য করলেন। এমন গা-জ্বালানো কথার তোড়ে নিজেরে সামলেছিলেন কেমন করে?
আসলে জানেনই তো যে প্রেসপাড়ায় এই কিসিমের স্পেক্যুলেটিভ কথা হাওয়ায় ভাসে। এইটা আদি থেকেই এবং প্রায় সবার ক্ষেত্রেই। জিনিশটা আমার গায়েও লাগে নাই কারণ আমি তো জানতাম আমি কি করছি। নিজে যখন নিজের ব্যাপারে সুস্থির ভেবেচিন্তে একটাকিছু করবেন তখন অন্যের বলাবলি বিশেষ টলাতে পারে না আপনারে।

রিসেন্টলি একটা জায়গায় দেখলাম আপনি বলেছেন যে জীবনের পয়লা প্রেম হারিয়ে আপনি ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ভিতর থেকে। সেই হৃদয়বিদারী রিয়্যালিটি কিভাবে হ্যান্ডল করেছিলেন পরে?
আমার মনে হয় হার্টব্রেইক জিনিশটাই হচ্ছে এমন যেইটা ভুলে না যেয়ে এরে সঙ্গে নিয়ে বেঁচে থাকতে শেখেন আপনি। জিন্দেগির কোনো অভিজ্ঞতা আমি অস্বীকার করে বেঁচে থাকতে চাই না। আমার মনে হয় না খারাপ অভিজ্ঞতাটা মন থেকে মুছে মুছে ফেলা যায় বা দুঃখবেদনার অভিজ্ঞতা ইরেইজ করে ফেললেই কিন্তু সুখী হয়ে গেলেন ব্যাপারটা তা কখনোই না। আমার জীবনেরই অংশ এই অভিজ্ঞতাগুলা, যাপিত জীবনেরই একটা সংক্ষিপ্ত পরিচয় এই আমিটা, তাছাড়া আর কিছুই কিন্তু আমি না। আমি কিচ্ছুটি নিয়াই রিগ্রেট করি না। আমার ধাতেই নাই পস্তানো জিনিশটা। আমি এমন মানুষ কখনোই না যে একটাকিছু নিয়া খালি রিগ্রেট করে, বেদনা নিয়া সন্তাপ করা আমার স্বভাব না, আমি অতীতে একপা রেখে একপায়ে বর্তমানে হেঁটে বেড়ানোর মানুষ না। আমি ভীষণ সম্মুখচিন্তার মানুষ, সামনের দিনগুলা লইয়াই ভাবি পিছনের না, আমি জীবনের সবকিছুতেই ইতিবাচক থাকি।

কি দেখে স্যামের দিকে অ্যাট্র্যাক্টেড হয়েছিলেন প্রথমে?
একটাকিছু দেখেই হুমড়ি খেয়ে পড়ার মতো মানুষ বোধহয় আমি না। আমার মনে আছে আমরা প্রথমে একটা-কিছু প্রোজেক্ট নিয়া আলাপের জন্য মিট করি। এর প্রায় মাসখানেক বাদে এক মিউচুয়্যাল ফ্রেন্ডের দেয়া পার্টিতে আমাদের দেখা হয় দ্বিতীয়বার। এবং এই দ্বিতীয়বারে দেখাসাক্ষাতের দিনটিতে একটিই আজব আচমকা অনুভূতি হয় যে, হ্যাঁ, এই তো সেই মানুষটা যারে আমি কি কারণে যেন খুঁজছিলাম! আমার জীবনে এত মমতাময় একজোড়া চোখের দ্বিতীয় কোনো মানুষ আর দেখি নাই। স্যাম চমৎকার একটা মানুষ।

একজন বিখ্যাত অভিনয়শিল্পী হয়ে একজন বিখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে ঘর করার অভিজ্ঞতাটা কেমন মনে হয়? আপনারা কি দিনরাইত নিজেদের কাজ নিয়া আলাপ করতে থাকেন না?
স্যামের সঙ্গে আমার কাজকর্ম তো নাই। ও বা আমি কি করি না-করি এইগুলা নিয়া আমাদের মধ্যে বেশি কথাবার্তা হয় না কখনোই। কিন্তু ঘরে ফিরে একে অন্যের সঙ্গে সারাদিনের কিছু কিছু জিনিশ নিয়া আলাপটা তো করিই। কিন্তু কখনোই আমি ওর পাশে বসে এমন গল্প জুড়ি না যে এ্যাই, শোনো না, আজকে আমি ইত্যাদি ইত্যাদি করতে যেয়ে দ্যাখো-না আটকে গেছি ভীষণ, বলে দাও না কেমনে কি করি এখন, এই দৃশ্যটা কেমন করে ফোটাই … ইত্যাদি আলাপ কখনোই হয়েছে মনে করতে পারি না। স্বাভাবিক কাজের কথাবার্তা তো হয়ই। কিন্তু ওই কিসিমের ন্যাকা আলাপ কখনোই আমি করি না। কারণ দুইটা, এক হচ্ছে যে এর ফলে যে-পরিচালকের সঙ্গে আমি কাজের সূত্রে আবদ্ধ তারে একটু হলেও অবজ্ঞা করা হয় এবং দুই হচ্ছে আমি সহজাতভাবে নিজের কাজের ব্যাপারটা ব্যক্তিক প্রকাশ বলেই মনে করি। সবসময়।

কত বছর বয়সে লাইফের ফার্স্ট ফিল্ম করলেন আপনি?
সতেরো। পয়লা ‘হ্যাভেনলি ক্রিচার্স’, তারপরে একে একে ‘সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি’, ‘হ্যাম্লেট’ এবং ‘জ্যুড’। এরপরেই-না ‘টাইটানিক’।

আমি আপনার অভিনয় খেয়াল করি ‘সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি’ থেকে এবং পছন্দ করতে থাকি। এইটা আপনাকে পয়লা মানচিত্রের অজস্র ফুটকিচিহ্নের ভিড়ে আলাদাভাবেই দৃষ্টিগ্রাহ্য ও হৃদয়গ্রাহ্য করে তোলে।
হ্যাঁ, তা করে, কারণ এইটার জন্য আমি একটা অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড নমিনেশন পাই প্রথমবারের মতো। এখন ভাবতেই অবাক লাগে যে কেমনে কি হলো লাইফে। বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়, মাত্র ঊনিশ বছর বয়সে অ্যাকাডেমি নমিনেশন!

অস্কার পাওয়া নিয়া আপনি কি এখনও এক্সাইটেড ফিল করেন?
আচ্ছা, কথাটা তাইলে স্বীকারই করে ফেলি যে আমি নমিনেশন ইত্যাদি পাওয়া নিয়া সাংঘাতিকভাবে প্রাউড ফিল করি। নিজে কোনো কাজ করার সময় আমি কখনোই ভাবতে পারি না যে নমিনেটেড হব। সত্যি কথাটা হচ্ছে, যে-অনুষ্ঠানে আমি নমিনেটেড হয়েছিলাম অস্কারের জন্য, আমি ইন্সটিঙ্কটিভলি ভেবে গেছিলাম যে আমি জিততে পারব না।

আপনি তো অভিনয়শিল্পীদের পরম্পরাঋদ্ধ একটা ফ্যামিলি থেকে এসেছেন। নিজের বাচ্চাদেরে কি উৎসাহিত করবেন এই শিল্পের পথে পা বাড়াইতে?
আমি উৎসাহিত বা নিরুৎসাহিত কোনোটাই করব না। আমি নিশ্চয় তাদেরে ঠ্যালাধাক্কা দিয়া কোনো পেশার দিকে ধাবিত করতে পারব না। আমি শুধু চাই যে তারা যেন তা-ই হতে পারে যা তারা নিজেরা চায় হতে এবং নিজেদের সিদ্ধান্ত যেন তারা নিজেরাই নিতে শেখে এবং যা তারা চাইবে করতে সেইটাতে যেন তারা তাদের বাপমায়ের সাপোর্টটা পায়। মানে, ওরা যদি অভিনয়ে যেতে চায় তাইলে আমি লম্বা একটা শ্বাস নিব আর জিভে একটা কামড় দিয়ে নিজেই নিজেরে শোনাব, সর্বনাশ! বেঘোরে খেটে গলদঘর্ম হবে আমার কলিজার টুকরাগুলা! কিন্তু মুখে কিছুই বলব না তাদেরে, ভয়ভীতি তো দেখাবই না, মুখে বরং বলব, বাহ্! খুব ভালো চিন্তা! যাও বাবারা! বাপমায়ের নাম রৌশন করো গিয়া।

একটা লেখায় সেদিন পড়ছিলাম কেউ-একজন আপনারে আপনার জেনারেশনের বেস্ট অভিনয়শিল্পী হিশেবে আখ্যা দিচ্ছে।
এই কথাটায় এইরকম আখ্যায়িকায় আমি যদি বিশ্বাস আনতে শুরু করি তাইলে কি হবে জানেন তো? গা ছেড়ে দেবো এক্কেরে, চেষ্টাটা থাকবে না আর কিছু করার, যেইটা আমার জন্যে একটা মারাত্মক দুর্ঘটনা হবে।

এইসব বাদ দিলে আপনার একটা দারুণ সুন্দর দাম্পত্যজীবন আর একজোড়া বাচ্চা রয়েছে যাদেরে নিয়া আপনি নিশ্চয় ভাবেন।
শতভাগ সত্যি। জিনিশগুলা আমার কাছে একশটা বাজারি সাক্সেস আর পৃথিবীজুড়ে ফেইমের চেয়েও অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওইটাই শেষকথা আমার এই জীবনের, সারকথা এইটাই।

[ইংরেজিতে এই ইন্টার্ভিয়্যু গ্রহণ করেছেন লিজ স্মিথ। মূল ইন্টার্ভিয়্যু ২০০৭ সনে ফেব্রুয়ারি নাগাদ ছাপা হয়। বিদিতা গোমেজ এইটা বাংলায় গানপারের জন্য অনুবাদ করেছেন। ইন্টার্ভিয়্যুটা আজকের কিস্তি দিয়ে শেষ হলো। — গানপার]

… …

আরো পড়ুন : 

সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট তৃতীয়াংশ 
সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট দ্বিতীয়াংশ 
সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট প্রথমাংশ

বিদিতা গোমেজ

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you