সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট তৃতীয়াংশ

সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট তৃতীয়াংশ

এইটা টাইটানিকস্টার কেইট উইন্সলেটের ইন্টার্ভিয়্যু থার্ড পার্ট। আগের দুইটা পার্ট গানপারেরই কথাবার্তা  বিভাগে ছাপা হয়েছে। তর্জমা করেই তো বলা বাহুল্য, মূল ইন্টার্ভিয়্যু ‘গ্যুডহাউসকিপিং’ পত্রিকায় পাব্লিশ হয়েছিল ২০০৭ ফেব্রুয়ারিতে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বেশ পুরানা সাক্ষাৎকার এইটা। অলমোস্ট টেন ইয়ার্স। ঘরোয়া আলাপের অন্তরঙ্গ উইন্সলেটের দেখা পাই আমরা এইখানে। নিজের বাচ্চা পালা নিয়াই আলাপ এগিয়েছে, এসেছে পেশাগত খুচরা গালগল্পও, কেইটের মুটিয়ে যাওয়া নিয়া হাসিঠাট্টা ইত্যাদি জিনিশগুলাও কথায় কথায় এসেছে দেখতে পাবো। ফলে এইটা কোনো নক্ষত্রলোকের ‘ললনা’ টাইপের কেইটকে নয়, হাজির করে ব্যক্তি কেইটকে। এই ব্যক্তিটি ভীষণ শক্তিধর অভিনয়শিল্পী।

অ্যানিওয়ে। ভেবেছিলাম এই কিস্তি দিয়া আলাপের পুরাটা বাংলায় কাভার করতে পারব। হলো না। টাইমের টানাটানি। পুরাটা তর্জমা এইবারেও করা হয়ে উঠল না। হোপফ্যুলি নেক্সট টাইমে পারব। উইন্সলেটের বৈবাহিকতা, দাম্পত্য জীবন, তার সংসার, ঘরকন্না, ন্যাচারাল ফিগারের একটু মোটাঝোঁকা স্বাস্থ্য নিয়া মিডিয়ার ঠাট্টাতামাশা, স্বামীসন্তান, দৈনন্দিনতা ব্লা ব্লা নিয়ে এই ইন্টার্ভিয়্যু উপভোগ্য একটা পাঠবস্তু বলিয়া পাঠকের স্বীকার করতে নিশ্চয় কার্পণ্য থাকবে না। আর পরেরবার এই ইন্টার্ভিয়্যু হয়তো খতম দেয়া সম্ভব হবে।

একটা মুদিখানায় বা গ্রোস্যারি শপে এই ইন্টার্ভিয়্যুটি গৃহীত হয়েছিল। প্রথম কিস্তির তর্জমায় একটা আনুপূর্বিক বর্ণনা আছে সেই মুদিদোকানটার। গানপারস্থিত ‘কথাবার্তা’ আর্কাইভ হাতড়ে সেইটা পাঠক খুঁজে নেবেন দরকারমতো।

ও হ্যাঁ, লিজ স্মিথ নিয়েছেন মূল সাক্ষাৎকারটি। ইংলিশে। এইখানে বাংলায় ট্র্যান্সলেইট করা হয়েছে।


লিয়োন্যার্ডো ডিক্যাপ্রিয়োর লগে আপনার করা টাইটানিক ম্যুভির অভিনয় আপনার জীবনে চেইঞ্জ আনতে হেল্প করেছিল কিছু?
কথা হচ্ছে কি যে এই ম্যুভিটা আমারে একটা স্বাধীনতা পাইয়ে দিতে হেল্প করেছে, বেছে নেবার হিম্মৎ দিয়েছে। এই যে এখনকার আমারে দেখছেন, এখন আমি দস্তুরমতো সন্তানাদির মা, আমি বাচ্চা পালি, আমার পেশা অভিনয় করা। টাইটানিক আমারে এমন একটা জায়গায় এনে দিয়েছে যেখান থেকে আমি চ্যুজ করতে পারি কিসে অভিনয় করব আর কিসে করব না। আমি নিজের প্ল্যানমতো ছুটি নিতে পারি ইয়ারের একটা টাইমে। এইগুলা টাইটানিকই দিয়েছে আমারে। এই মুহূর্তে আমি দীর্ঘ কর্মবিরতির মাঝভাগে আছি। কিছুদিনের মধ্যেই ফিরব আবার অভিনয়ে। এ-ই তো।

আচ্ছা। এইবার একটু জিগাই। ‘লিটল চিল্ড্রেন’ সিনেমায় একটা ন্যাংটো দৃশ্যে দেখা গেল আপনারে। এইটা করতে যেয়ে কি আপনার নার্ভের ওপর চাপ পড়েছিল কোনোভাবে?
সত্যটা হচ্ছে, দেখেন, বেলাশেষে এইগুলা তো অভিনয়ই, তাই না? আচ্ছা। তাই বলে এইটাও বলছি না আমি যে এই ন্যুডসিনে অভিনয় জিনিশটা ভারি আরামদায়ক কিছু। মোটেও না। ফ্যাক্ট হচ্ছে যে এই জিনিশটা খুবই অস্বস্তিকর। তা, আমি তো ন্যুডসিনে অভিনয় আগেও করেছি। স্বীকার করছি যে সিনেমাপেশায় এই পার্টটাই আমার কাছে বিকট অসুবিধার মনে হয়। সিনেমায় যতবারই ন্যাংটা হতে হয়েছে ততবারই নিজেরে বলেছি, এইটাই শেষ, এরপরে আমি আর নগ্ন হচ্ছি না বাবা। তারপর আবারও করতে হয়েছে। কিন্তু তখনই জিনিশটা গুরুত্বপূর্ণ যখন চরিত্রের বাস্তব বিশ্বাসযোগ্যতার তাগিদ থেকে ন্যাংটো হতে হয়। ‘লিটল চিল্ড্রেন’ ম্যুভিতে আমি চেয়েছিলাম নারীরা যেন ম্যুভিটা দেখেন এবং ম্যুভিতে যেন তারা নিজেদেরেই দেখতে পান। চরিত্রটা দেখে যেন তারা একবার হলেও বলে ওঠেন, “আরে! এই তো! এইটা আমিই তো!” খুব যে আদর্শ কোনো চরিত্র, বা ক্ষুধার্ত কোনো চরিত্র, এমন হয়তো নয়, কিন্তু খুবই ন্যাচারাল একটা ক্যারেক্টার যার একটা বাচ্চা আছে, যে নয়া মা হয়েছে, এবং একবার আপনার বাচ্চা হয়েছে মানেই কিন্তু আপনার শরীর চিরতরে বদলে গেছে। এইটা খারাপ কিছু তা বলছি না, এইটা ভালো একটা ব্যাপার। কাজেই সিনেমাটা করার সময় কিচ্ছুটি নিয়াই শেষমেশ আপত্তি করি নাই।

শরীরী সংবেদনের প্রশ্নে এক্সাম্পল দরকার হলেই মিডিয়া আপনারে একনাম্বারে এনে রাখে। এতদিন হয়ে গেল অভিনয় করছেন আপনি, কিন্তু শরীরী স্বাস্থ্য ও ভঙ্গিলতা সবকিছুই যেন অপরিবর্তিত। মুটিয়ে গেলেও শরীর থাকে মেদুর, সংবেদনশীল, সংরক্ত। ইতিবাচক অর্থে এই স্থিতাবস্থাটাকে দেখতে চাইছি আমি …
জিনিশটা আমারে রীতিমতো রাগায়ে তোলে। শরীর দিয়া মানুষের বিচার করা যায় না। তাইলে ন্যাচারালি বছরে বছরে বিচার পাল্টাতে হয়। দেখেন, আমি পাঁচ ফিট ছয়, লোকে ভাবে আমি একটা মারদাঙ্গা শরীরের নারী। কিন্তু মোটেও তা না, আমি তো খুবই স্বাভাবিক, ন্যাচারাল, এবং খুবই গড়পরতা মানুষ একটা।

কিশোরী বয়সে আপনি ছিলেন অতিরিক্ত মোটা এবং এই সত্যিটা রাখঢাক না করেই কবুল করেন আপনি প্রায়শ, কথাটা কি ঠিক শুনেছি?
হ্যাঁ, ঠিকই। কিশোরবেলায় ভীষণ মোটাসোটা ছিলাম আমি।

এই বয়সে এসে, এই বড়বেলায়, খেতে বসে আপনি কি দেখেশুনে বেছেবুছে খান? ব্যায়ামট্যায়াম করেন কিছু নিয়মিত?
আরে নাহ্। আমি এক্সার্সাইজ কিছু হয়তো করি, কালেভদ্রে, যখন সময় পাই আর-কি। কিন্তু সময় এই মুহূর্তে আমার হাতে প্রায় নাই বললেও কম বলা হয়। আর ডায়েট করার কথা যদি জিগান, তয় আমি বলব যে একদম কেয়ার করি না। ডায়েটফায়েটের ধার আমি ধারি না। আগেই তো বললাম যে আমি একদমই সাধারণ একটা নারী। নিজেরে নিয়া সাধারণ একটা নারী যা যা করে, যেমনটা বা যতটুকু যত্ন নেয়, আমি তারচেয়ে বেশি কিছু করি না হারাম। ধরেন যে ক্যুকি জিনিশটা আমার খুবই প্রিয় একটা খাবার। তাই বলে একটা আস্ত বক্স ক্যুকি খেয়ে ফেলি হালুমহুলুম করে, নেভার দ্যাট। হয়তো রোজই একটা ক্যুকি খাই, পুরা বাকশো তো আর খাই না, কিন্তু একটা ক্যুকি খাইতেও যদি ডায়েটওয়ালা আমায় বারণ করে, আমি শুনবই না। মাঝেমধ্যে একটা খায়া আরেকটাও হয়তো খাই, তিনটাও কখনোসখনো। পুরা বাকশো কখনোই সাবাড় করি না।

[ইংরেজিতে এই ইন্টার্ভিয়্যু গ্রহণ করেছেন লিজ স্মিথ। মূল ইন্টার্ভিয়্যু ২০০৭ সনে ফেব্রুয়ারি নাগাদ ছাপা হয়। বিদিতা গোমেজ এইটা বাংলায় গানপারের জন্য অনুবাদ করেছেন। ইন্টার্ভিয়্যুটা আগামী কিস্তি দিয়া শেষ হবে। — গানপার]

চলবে

আরো পড়ুন : 
সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট : প্রথমাংশ
সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট : দ্বিতীয়াংশ

গানপার

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you