লোনলি ডে বাই সোয়াড || ইমরান ফিরদাউস

লোনলি ডে বাই সোয়াড || ইমরান ফিরদাউস

ভূমিকা
শিল্প-বিপ্লবের পরের দিনটা ক্যামন যেন ফ্যালেফ্যালে। গতকালও তো হাঙ্গামা ছিল, জোর-জবরদস্তি ছিল। টুইন টাওয়ার ছিল, আকাশ থেকে উড়ে আসা ছোট্ট একটা প্লেন ছিল। পথিক নবীর এক্টা নদী ছিল। কিন্তুক, নদীর নাম জিগানোর মতন কেউ ছিল না। এত ছিল্‌ ছিল্‌ ছিলা ছিল এর মধ্যে থাইকাও, একটা কী যেন থেমে ছিল। দাঁতের কোনায় ঝুলে থাকে, টুথপিকের নাগালের বাইরে থাকা খাদ্যকণার মতো। এইরকম দিনটারে মোনালিসা নাম দিলো লোনলি ডে। তাজমহলের মতো একা। পানির নিচে রাস্তা ভালোর মতো তাজা। অবাধ নির্বাচনের মতো সুষ্ঠু এক্টা দিন।

এমন দিনে ফেরেশ্তাদের শহরে বসে ড্যারন মালাকিয়েন লিখে ফেলে লোনলি ডে  গানটা। গীতে সুরারোপ করেন সিস্টেম অফ আ ডাউনের মেম্বারবৃন্দ। রটনা আছে, মালাকিয়েন গানটা লিখেছিল অগ্নিকাণ্ডে নাই হয়ে যাওয়া মায়ের পেটের ভাইয়ের বিগত স্মৃতির উপমায় । যে-কারণে, গানের ছায়াছন্দে বারবার দেখা গিয়ে থাকবে আগুনের লেলিহান শিখা, জমাটবাঁধা কালো ধোঁয়া। সোআড এক অনমনীয় শ্রদ্ধা অর্জন করেছে দুষ্টু লোকের রাজনীতি, গুমহত্যা, যুদ্ধবাজ সরকার ও রাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচক হিসেবে। এই গানের মধ্যেও তার অন্যথা ঘটে নাই। এই গানের মাআরেফতি বিন্দুটা হলো যে, ব্যক্তিমানুষ ভেদে এটি পুঁজিবাদ প্রযোজিত কিছু ভালো লাগে নার স্মারক হিসেবে কানে বাজতেও পারে, আবার প্রান্তিক মানুষের ঘাঁড়ে জোর করে গুঁজে দেওয়া দায়ের জের হিসেবেও শ্রবণ করা যেতে পারে গানটা।

আবেগী হার্ডকোর রক-এর গীতবাদ্যের তোড়ায় বাঁধা, পোস্ট গ্রানজের লিরিক্যাল চরিত্র নিয়ে সৃজিত হওয়া হার্ডরক ব্যালাডের এই গান বলে যায় নিঃসঙ্গ দিনের মতো স্লো-পয়জনের জবানবন্দি। বলে, প্রিয় প্রিয়-এর হাত ধরে মৃত্যুর দিকে হেঁটে যাওয়ার বিষণ্নতার কথা, বলে উদ্বিগ্ন সত্তার দেয়াল পিঠ ঠেকিয়ে লড়াইয়ের নিমীলিত গল্প। ২০০৭ সনে আলো-বাতাস লাভ করা এ গানের প্রডিওসার ছিলেন ওস্তাদ লোক রিক রুবেন এবং আবারো ড্যারন মালাকিয়েন।

যা-ই হোক, মনের চোরা পকেটে আলতো করে রাখা, মেনি বিড়ালের সঙ্গসুখ পাওয়া নিঃসঙ্গ দিনটারে সরকারি প্রেস্ক্রিপশনের হাহাকারে উদযাপন করবেন; নাকি সোম আর বৃহষ্পতিবারের মাঝখানে একটা অর্ধদিবস রূপে সোনা-লাল-সিস্টেমের সানডে-মানডে ক্লোজের উপলক্ষ্য হিসেবে সেলিব্রেট করবেন — সে রায় আপনার।

লোনলি ডে ।। সিস্টেম অফ অ্যা ডাউন
ভূ মি কা  ও  ত র্জ মা : ই ম রা ন   ফি র দা উ স


নিদারুণ একলাটি বার
বুকপকেট জুড়ে আমার
এমন নিঃসঙ্গতম বার জিন্দেগিতে আর একটাও হয় না।

এমন একলাটি বার
নিষিদ্ধ করা উচিত
এ এমনই একাকী বার যা বরদাশত করা জুলুম।।

এমন একলাটি দিনের
কোন কোন কারণ নেই।
এমন সব নিঃসঙ্গ দিনের স্মৃতি মনেও রাখতে চাই না।

নিদারুণ একলাটি দিন
হিপপকেট জুড়ে আমার
এমন নিঃসঙ্গতম দিন লাইফে আর একটাও হয় না।

আর [এমন দিন ফেলে] তুমি যদি যাও, পথের সাথি আমি রেডি
তুমি যদি বোধের অতীত হয়ে যাও, আমিও হবো ফেরারি বেদনা
হাতটা ধরে তোমার, যাবো জীবনের যবনিকাতে…

কিন্তু, কী দারুণ! বেঁচে আছি আনন্দের নোনা স্বাদ জিভে জড়িয়ে।।


ইমরান ফিরদাউস রচনারাশি

COMMENTS

error: