নিউ মানি এবং আর্টের ট্র্যানজেকশন || আনম্য ফারহান

নিউ মানি এবং আর্টের ট্র্যানজেকশন || আনম্য ফারহান

জিডিপি যে বড় হইছে, তা খালি বড়লোকেরই পকেট হইছে, তা তো না। মধ্যবিত্তেরও হইছে।
*
সামিট গ্রুপের মালিক আজিজ খান শিল্পী শাহাবুদ্দিনের ছবি কিনছেন। শিল্পী বীরেন সোমের পেইন্টিংও কিনছেন। আমি তাতে খুশি হইছি। সিঙ্গাপুরের অথেনটিক আর্টও উনি কালেকশন করছেন। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সাংবাদিক মেলিসা স্টুয়ার্ট সিএনএ ডিজিটালে মূল প্রতিবেদন যেইটা করছেন, ওইটা ধইরা বণিক বার্তা রিপোর্ট করছে গতকালকে। উনার শিল্পরস এবং কালেকশন বিষয়ে কথাবার্তা আছে। লিঙ্ক দিলাম।

পরে আবার আরেকটা রিপোর্ট দেখলাম শেয়ার বিজ পত্রিকায়, ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২২-এর, সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলা পুরাদমে চালু না কইরাও ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাবে ১০,৫৮২.৮৯ কোটি টাকা এ-পর্যন্ত ১৪ বছরে পিডিবির পরিশোধ করা নিয়ে। লিঙ্ক দিলাম।

কোনোই সমস্যা নাই এসবে। যেহেতু পলিসি মেক হইছিল এইভাবে। সমস্যা হইল পয়েন্টে। মানে সামিটের কি তা ফাও কামাই? না, তা তো না।

বণিক বার্তার অ্যাপ্রোচটা হইতেছে ওনাদের অর্জনটাকে প্রচার করা এবং একটা মুখপাত্র লাইক আপহোল্ড করা। আর শেয়ার বিজ করছে হইল বিজনেস রিপোর্ট, তাতে পয়েন্ট আছে। ঠিকই আছে এই রিপোর্ট।

*
এখন এই দুই পত্রিকার রিপোর্ট দেখে মনে হইতেই পারে সামিটের মালিক এইভাবে কামাইয়া সিঙ্গাপুরে গিয়া শীর্ষ ধনী হইছেন এবং আর্ট কিনতেছেন। স্পষ্ট কইরা কোন্ জিনিসটা উনারা খারাপ করছেন বা আইনের ব্যত্যয় ঘটছে, তা কেউ বলতেছেন না। কোম্পানি খুলছেন এবং তার হেডকোয়ার্টার সিঙ্গাপুরে, আর সেই হিসাবে উনি ওইখানকার শীর্ষ ধনীও হইছেন — তো এইখানে পয়েন্টটা কি? তা বলেন নাই পত্রিকারা।

আর এই খাতেরই আরেক পত্রিকা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডও মোটামুটি উনাদের মুখপাত্রের ভূমিকায় আছেন। বণিক বার্তার মতো। ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসও দেখলাম ঠিক লাইনেই আছেন। মানে সাংবাদিকতার জায়গা থেকে।

*
ওকে। আমার পয়েন্ট হইতেছে আরেক জায়গায়। বড়লোক আরও যারা হইছেন, বা সরকারের মদদপুষ্ট নতুন ধনীরা, এই বৃহৎ জিডিপির স্টেকহোল্ডাররা, তাঁরা আর্ট কিনতেছেন না কেন? নতুন মধ্যবিত্ত বা নতুন উচ্চ-মধ্যবিত্ত? তাদেরও জিডিপি শুরুতে যেমন বলছিলাম, বাড়ছে।

সামাজিক শ্রেণীর ফরমেশনটাই তো এমন, জাতে উঠতে চাইলে প্রয়োজনীয় টাকা হওয়ার পরে, আর্ট-কালচার কইরা, তা লোকজনকে দেখাইয়া সমঝদারে কনভার্ট করা নিজেকে, আর সাথে আর্টের সামাজিক শক্তিকে কাজে লাগাইয়া কালচারাল প্রতিপত্তি অর্জন ও নতুন শ্রেণীতে নিজেকে অভিজাতে রূপান্তর করা। তা যেন পরে অপরাপর শ্রেণীকে ডমিনেট করতে পারে। জ্বি, আর্টের ওই শক্তি আছে। তাই বুদ্ধিমানরা এইটা করেন।

কিন্তু আর-যারা টাকা বানাইছেন, তারা কী বুদ্ধিহীন? তাদের কী জাতে উঠতে হবে না? ফ্রিজ ,টিভি, গাড়ি ও বাড়ি কিনার সাথে উনাদের আর্ট কেনা কই? বই, চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, গানের সাবস্ক্রিপশন— এইগুলা সবই আর্টের ভিতরে ধইরা বলতেছি।

নিশ্চিতভাবেই, জিডিপির গ্রোথের মতো এক্সপোনেনশিয়াল গ্রোথ আর্টের হয় নাই। তা হওয়া ইকোনমিক্সের ইকোসিস্টেমের জন্যই দরকার।

রচনাকাল ১২/০৬/২০২৩


COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you