নির্বাচিত নববর্ষ

নির্বাচিত নববর্ষ

নবনির্বাচিত বর্ষ শুরু হলো। নবতর গণতন্ত্রবর্ষ। জোসেফ গ্যয়েবল্সের স্ট্র্যাটেজি মান্য করলে স্টেইটমেন্টটা মাল্টিপ্লাই করে যেতে হবে হান্ড্রেড টাইম্স। জোসেফ গ্যয়েবল্স কে এবং কোথাকার বা মানবসিভিলাইজেশনে তার অবদান ও দর্শনপ্রভাব নিয়া কারো সন্দেহ রইবার কথা না আজকের বাংলাদেশে। অ্যাট-লিস্ট দুইসহস্রচোদ্দ থেকে ন্যাশন্যালি ইলেক্টেড যে ডেমোক্রেসি পেয়ে চলেছি আমরা, তা নিয়া প্রাইডের সীমা নাই আমাদের। জার্মান নাৎসি শিবিরের পাণ্ডা রাইখ মিনিস্টার অফ প্রোপাগান্ডা, অ্যাডল্ফ হিটলারের অন্যতম মন্ত্রণাদাতা, জোসেফ গ্যয়েবল্স আদতে হের হিটলারের সাধাহ্লাদ পুরা করতেন অক্ষরে অক্ষরে। হেরের একটা বাণী জীবনের ধ্রুবতারা বানায়ে নিয়ে গ্যয়েবল্স ইমপ্লিমেন্ট করতেন তার দিনানুদৈনিক কাজকাম; কম্ম বলতে কেবল ওই মিহি কায়দায় মানুষ নিকেশ করা; বাণীটি হয় এইমতো যে “ইফ ইয়্যু টেল অ্যা বিগ এনাফ লাই অ্যান্ড টেল ইট ফ্রিক্যুয়েন্টলি এনাফ, ইট উইল বি বিলিভড।” নয়া সালে এবং তার আগের পাঁচ সাল ধরে এই বিগ লাই এবং এর ফ্রিক্যুয়েন্সি নিয়া আমরা হ্যাপি। ডিসেম্বরে এসে, বিজয়ের মাসে, এই বিগ লাইয়ের কারিকুরি বিলিভড হয়েছে দেশবাসী বিলিভারদের কাছে। অ্যানিওয়ে, দেশের সর্বস্তরের বিলিভারবর্গ, নববর্ষ ও নবনির্বাচিত গণতন্ত্রের সলজ্জ শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন! কথাটা হচ্ছে যেয়ে এই যে, হ্যাপি নিউইয়ার রিটার্ন করবে বেহায়ার ন্যায় বেঁচে থাকলে বারেবারে এবং আমরা তা আলাদা করে ইয়াদও রাখব না। বাট ডিসেম্বর টোয়েন্টিএইট আমরা সানন্দ মনে রাখব। ভুলব না, আমরা কোনোদিন ভুলব না, একসাগর রঙতামাশা আর মিথ্যার বিনিময়ে এই বিগ লাইয়ের বিপন্ন বিস্ময়ানন্দ কোনোদিন ভুলব না।

লাস্ট নোট অফ দ্য ইয়ার
সাংঘাতিক হিম দিন। সন্ধ্যার পর যখন ফিরছিলাম শহর ছুঁয়ে, আপিশাঞ্চল থেকে গেহ অভিমুখে, হিমে একেবারে জমে যাচ্ছিল হাত-মুখ-শরীর। শীতে হি হি কাঁপছিল হৃদয়। হৃদি কেঁপে কেঁপে কঁকাচ্ছিল পারমিতা হিমে। বিশেষত স্যোয়েটারের হাতার বাইরে বেরিয়ে-থাকা হাতের পাতা আর তালু যেন শীতে আর্তনাদ করছিল। শরীর জুড়ে তীক্ষ্ণধার শীতকাচ যেন ফুটাচ্ছিল হুল। অতিকায় শীতের সংক্রাম গত কয়দিন ধরে একটানা। সাংঘাতিক শীতের তেজ এমনিতেই এতদঞ্চলের বৈশিষ্ট্য। সকাল দশটা-এগারোটা পর্যন্ত সূর্যমুখ নজরে আসছে না আজকাল, অনেক বেলা অব্দি কুয়াশা বিরাজিছে বায়ুমণ্ডল ব্যেপে, যেমন আজকেও। ফলত কাজে বেরোতে দেরি হতেছে। যেমন হলো আজকেও। কাজেকর্মে মন বসানো মুশকিল হতেছে এই দাঁত-শিরশির শীতে, মন কোনোমতে বসানো গেলে শরীর ফুঁপিয়ে উঠছে, এই নিধুয়া জাড়-পড়া পৌষের দিনরজনীতে। মন পড়ে রইছে দূরবর্তিনী লীলাপটু কুয়াশায়। ক্লিয়ার হইল না হে কথাটা! তা, এমন ঘনসর কুয়াশায় কিছুই তো ক্লিয়ার হবার কথা না। তাছাড়া বছরের অন্তিম, দৌড়ের উপর দুনিয়া, চারিধারে শয়ে শয়ে পটকা আর আতসবাজি। হ্যাপি নিউইয়ার নিনাদিত ভূলোক-দ্যুলোক। শুভ নববর্ষ।

শেষের ডায়রি
বছরের শেষদিন। ঘুম টুটেছে বেলা করে। বাতায়নে রোদ যদিও ছিল, মরাটে ফ্যাকাশে রোদ, হিমের ছ্যাঁকা-লাগা সকালবেলা। আর লেপমুড়ি শরীর থেকে যেন সরতে চাইছিল না শীত। দুশ্চিন্তা হচ্ছিল চানঘরে যাওয়া নিয়া, আর ভাবছিলাম, এককালে তো পুকুরে ঝাঁপিয়ে নেমে দাপিয়ে সাঁতরেছি হিম সকালে ও সন্ধ্যায় নিয়ম করে দুইবেলা। ইশকুলে যাবার আগে, ফের সন্ধ্যার কুয়াশায় খেলাধুলো থেকে ফিরে। এইটা তো অথচ পৌষ মাত্র, খুব সম্ভবত পৌষের এখন মধ্যমাঠ, অবশিষ্ট শীতকালের সনে সাক্ষাৎ ঘটবে তো সমুখে। সেইটা মাঘের শীত। কতশত প্রবাদ-ডিঠান রয়েছে এই শীতশীর্ষ মাঘ মাস নিয়া! কথায় বলে, মাঘের শীতে বনের বাঘেও কাঁপতে কাঁপতে মরে। এইবারকার শীত, মনে তো হচ্ছে যে, সেলিব্রেট করবার মতো। উদযাপনীয় শীত সেইটাই, যেই শীতে শয়নকক্ষে থেকেও মনে হবে রয়েছি ইগলুঘরে। তেমনি যত বেশি ঝমঝম ঘনঘোর বরিষন, তত বেশি সম্ভোগ্য বর্ষা।

গত একটা আস্ত বছরে তেমন কিছুই সিগ্নিফিক্যান্ট করে ওঠা গেল না। যাপিত পুরো বছরটাই তো সমস্ত অর্থে বন্ধ্যা কাটিয়া গেল। কোনো-একটা ভালো লেখা, বা অন্য কোনো কাজও, ঠিকঠাক পেরেছ বুঝি করে উঠিবারে! তেমন পড়াশোনাও তো হলো না ভালো। বদখত যত বাহাসে গেল ফুরাইয়া বেলা। তা, তার আগের কোন বছরে কী-এমন রসগোল্লা সারিয়াছেন, ভদ্রে! এত অকর্মণ্য ও অনুৎপাদনশীল খাতে বয়ে যায় একেকটা বছর! ফলে যাকে বলে সালতামামি, ইয়ার-এন্ডিং প্রোগ্রেস স্ট্যাটম্যান্ট, ঠিক তেমনধারা কিছু তো অত্র ক্ষেত্রে অনাবশ্যক। কোন আমড়াবাগানের প্রোপ্রাইটর তুমি যে বছর শেষে খতিয়ান নিতে হবে! কিছুই তো করো নাই, কিচ্ছুটি করার মুরদও তো তোমার নাই, কিছুই তো করি না। হাত গুটিয়ে বসে থাকা, আর মুখে বিশ্বসংসার তন্নতন্ন করা ছাড়া তো করতে তেমন দেখা যায় না কিছু। নীলপদ্ম তো ফোটে কোথাও-না-কোথাও, বরুণারাও চরে বেড়ায় নিধুয়া পাথার ও বিপণীবিতানের আলোকসজ্জিত এলাকায়, উদয়াস্ত শুধু দেখে যাওয়া আর আকাশকুসুম রচনা ছাড়া তো কোনো উদ্যোগ নাই। নিরুদ্যোগ, নিরুদ্যম, নতশির উদ্বেগ শুধু।

অ্যানিওয়ে। হ্যাপি নিউইয়ার বলা ছাড়া তো কোনো উইশ নাই দ্বিতীয়। অন্তত আজকের দিনে একটু পরহিতাকাঙ্ক্ষী হওয়া যায়, রিস্ক কম, বিসাইড দিজ এইটা ফ্যাশনও। সো, শুভেচ্ছা নববর্ষীয়।

অ্যানুয়্যাল অডিট
খ্রিস্টবছরের শেষদিন। শেষ হয়ে গেল গোটা-একটা বছর। জীবন আরও হ্রস্ব হয়ে এল। অথবা আরও দীর্ঘ। দৈর্ঘ্য বাড়ল মানুষের অভিজ্ঞতার, মানবসভ্যতার, তোমার ও আমার। কতদূর এগোলো মানুষ, অথবা পেছালো কি না, কয়টা বাছুর দিলো দুনিয়ার বছর-বিয়োনি গাইগোরুগুলো, কয়জন আদমসন্তান পয়দা হইল মর্ত্যভুবনে, এইসব শুমারি করার লোকলস্কর আলাদা। আমরা খালিদৃষ্টিতে দেখিবারে পাই, দি এন্ড সম্বলিত সিনেমার স্ক্রিন, দিনের শেষে রঙের আবির ও বিষাদ, সঙ্গে দেখি সিনেমাহ্যলে ফের নতুন বই শুরুর প্রাককালীন পতাকা-পতপত।

সমস্তকিছু ফুরাবে, একদিন, এইভাবে। সত্যি কি তা-ই, সবকিছুই কি ফুরাবে একদিন?

সারাবছরে কয় কাপ চা, কয়টা সিগ্রেট, কয় গ্যালন পানি ও অন্যান্য তরল গলাধঃকরণ করিলে তুমি, এইসবও হিসাবকিতাব করতে পারো। কয়জনকে ঠকালে সেই হিসাব ভুলেও করতে যেও না। কয়্পাতা পড়লে কিংবা লিখলে কয়্পাতা, আর বকবকিয়ে গেলে ক-হাজার মাইল, কয়জনের মুখ ম্লান করে দিতে পারলে সাক্সেসফ্যুলি, এইসবও হিসাবযোগ্য। কয়টা মানুষের কাজে তুমি নিজেরে লাগাতে পেরেছ, সেই হিসাবে যেয়ে কাজ নাই। তুমি মানুষের বাড়ির চাকরবাকর তো নও, তুমি মিয়ার-ব্যাটা-মিয়া, তোমার আনুগত্য ও পা-চাটা শুধু মনিবের জন্য নির্ধারিত। অতএব তোমার সালতামামিও হবে সেইরকম।

কয়টা ভালো লেখা পয়দা হয় একটা আস্ত বছরে গোটা দেশ ও দুনিয়া জুড়ে, যা পড়লে শান্তি হয়, বুদ্ধসমাহিতি হয়, যা পড়লে পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ার মতন অশান্তি হয়, কিংবা পায়ের তলার মাটি ফিরে পাবার বরাভয়? এমন কয়টা কবিতা লেখা হয় সারাবছরে? এমন কয়টা আখ্যান? কয়টা লেখা পারে একজন পাঠকেরে মৃত্যুর আগে একটু মাটি ও মমতার আশ্রয় দিতে? এই হিলহিলে কেন্নো-সরীসৃপের মতো কুটিল সময়ের পাঠকদেরে একটু মমতাশ্রয় জোগানো দরকার। এই স্থবির সময়ের পাঠকদের পায়ের তলার মাটিতে কাঁপ ধরানো খুব দরকার। জরুরি এই কাজগুলো করার দিকে লেখক-কবিরা মনোযোগী কি না, তা হয়তো অধ্যাপক-পুরোহিত-ইমামগণ অবহিত করতে পারবেন।

কবিরা কেবল রহস্যসৃজনের কাজে ব্যাপৃত, অভিযোগ করেছিল আমার এক বন্ধু। শুনে বেজায় অস্বস্তিতে আমতা-আমতা করা ছাড়া আমার মুখে কথা জোটে না, খালিচোখে সেইরকমই লক্ষ করা যায় নিশ্চয়, কিন্তু কবিদের এলাকার খবরাখবর সম্পর্কে আমি বিশেষভাবেই অজ্ঞ। কবিদের চামড়া কি গণ্ডারের চেয়েও শক্ত নাকি — জিগায়েছিল বন্ধুটি। দিতে পারিনি উত্তর। বন্ধু তখন আইডিয়া শেয়ার করে, একটা ব্যবসা শুরু করার আইডিয়া। অ্যান্টেনা বিক্রির ব্যবসা। মাঝে মাঝে মনে হয়, সেইটা মন্দ হইত না, কবিদের জন্য অ্যান্টেনা বানায়ে ব্যবসা শুরু করে দিলে মন্দ হইত না। যেই অ্যান্টেনা দিয়া কবিরা নিকটদৃশ্য দেখিতে সক্ষম হইতেন অনেক কার্যকরভাবে। এমনিতে কবিরা তো দূরদুরান্ত দেখিবারে মশহুর, দূরদৃশ্যের কারবারি, মহাকালের ময়রা তারা, মাগার পড়শিবাড়ি ও পড়শিকালের হদিস তারা বিশেষ ঠাহর করেন না বা করতে পারেন না। তা, নতুন বছরে সেই ব্যবসাটা ক্যাপিট্যালিস্ট কোনো কর্পোরেট হাউজ প্রবর্তন করে দিতেও পারে। লেট’স্ সি, মন্দ হয় না। ভালো প্রোফিট-মার্জিন থাকবে, সেবাশুশ্রুষাকারী হিশেবে ট্যাক্স-রিবেটের বেনিফিটও লাভ করা যাবে তাতে। সো, অফারটা কিন্তু যথেষ্ট ল্যুক্রেটিভ।

বছর ফুরায়ে এলে বেড়ে যায় বয়স, কমে যায় আয়ু, ঘনায় পায়ে পায়ে মৃত্যু। তবু, ভাবতে ভালো লাগে, একভাবে-না-একভাবে থেকে যাব আমরা এই পৃথিবীতে। থেকে যাব হয়তো কোনো ফলভারানত টোম্যাটোঝোপের গোড়ার মাটিতে সার হয়ে, সেই টোম্যাটোতরুর গায়ে হাত রাখা শিশুর সুগন্ধস্পর্শ সকালবেলার শীতে টের পাবো আমি, ভাবতে ভালো লাগে। এত হতাশাপ্লাবিত দুনিয়া, হা-হা-হি-হি ইড়িঙ্গি বিন্ধ্যাচলভুবন জুড়ে, আমাদের তো খুঁজে নিতেই হবে ভাবনায় পরিত্রাণ। এইভাবে নিতে হবে নিঃশ্বাস, শেখায়ে যেতে হবে সন্তানেরে নিঃশ্বাস নিতে। কাজেই, আমরা আছি, আমরা থাকব তো! সমস্তই থেকে যাবে, কিছুই হারাবে না, সক্কলে থেকে যাব আমরা, খানিকটা প্রাণধর্ম কোথাও বদলাবে হয়তো, এমনধারা প্রতীতি কবিতায় ভীষণ সুন্দরভাবে প্রকাশ করেন সুজিত সরকার। অতএব, বিষাদ যখনই ছুঁতে চাইবে আপনারে, অধিকার করতে চাইবে আপনার অস্ত্বিত্ব, তখনই ভাবনায় এইসব উড়ায়ে দেবেন। বাঁচতে তো হবে আমাদেরে, বিষাদ ও অবসাদের খপ্পর থেকে মুক্ত থেকে পূর্ণ জীবন্ত যাপন করে যেতে হবে জীবন, কত-কী করার আছে বাকি এখনও তো! শুভ নববর্ষ।

ফার্স্ট নোট অফ দ্য ইয়ার
ভোর। নতুন বছরের। হাঁসের ডিমের গায়ে যেই নীল আভা থাকে, সেই নীলাভা মেখে এসেছে নতুন ভোর। নববর্ষের ভোর। কুয়াশাপালক শরীরে তার, গলা তার ঝিরিঝিরি শিশিরের সুরে। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান সংগীতের মতো, সোপ্রানো সিঙ্গারদের মতো, কোমল ও পেলব সকাল। ভোরের বৈতরণী বেয়ে এল সকাল। দস্তুরমতো ঝকমকা সকাল। যদিও কনকনে শীতে তার প্যাঁচানো শরীর। উদিত হইলেন সূর্য অতঃপর। উদিত হইলেন দুঃখের এই দেশে সূর্যদেব, সুরুজকুমার। সূর্য নতুন যিশুবর্ষের। নিউইয়ারের সানশাইন। নতুন কোনোকিছু উদয় মানেই হলো নতুন উজ্জীবন, নতুন আশা, প্রণোদনা ও নবতর বোধন। সূর্য ঝরিলেন শিশিরের কণায়, বিতরিলেন হীরা তার গাছে-গাছে পাতায়-পাতায়, ঝিলিমিলি ঝিলমের স্রোতখানিরে একটু বাঁকাইলেন নন্দিত নৈপুণ্যে আমাদের নতুন দিনের রবিদেব। যখন লিখছি এই নিউইয়ার-আবাহনী, বিছানায় আধশোয়া কাৎ, জানালা গলিয়ে একফালি রোদ এসে বসেছে হাতের পাতায়। এসেছে সূর্য উপুড় হয়ে নেমে কিবোর্ডের উপর। দিকে দিকে রোদ্দুর, দিগন্তে রোদ্দুর, দুনিয়াভরা রোদ্দুর। রোদ যেন নওল কিশোরী এক, — সকালবেলার হিমেল হাওয়া তার সনে খেলা-করা নওল কিশোর। কাঁপুকাঁপু কথা যেন বলে চলেছে অবিরাম রোদের ওই কিশোরী তার কিশোর ক্রীড়াসঙ্গী হিমার্দ্র সকালের বাতাসের সনে। এদের কথাবার্তা ভালো ধরতে পারেন কবিরা। হায়! আমি তো পারি না। এতটা বয়স চলে গেল তবু আমি রোদ ও বাতাসের লুটোপুটি প্রেম লিখতে পারি না আজো। মওলা আমার, মালিক আমার, নতুন বছরে মুখ তুলিয়া চাইও গো মাবুদ! আমার পানে, তাহার পানে, সবার মুখপানে। লেখার আশা করে আছে যারা বসে, তাদেরে লিখতে দিও। হতচ্ছাড়া ষাণ্ডাগুণ্ডাগুলোরে একটু কন্ট্রোলে রেখো মনে করে। ছেড়ে যেন না-যায় মানুষেরে তার অবলম্বন আশা, মানুষের ভরসা। লিখনাশা, হায়, ছেড়ে যায় নাকি, ছেড়েই কি গেল কুহকিনী সর্বনাশা!

ভালো করেই পিকচার ক্লিয়ার হতেছে ক্রমশ
বছরটা ভালো যাবে। ডেফিনিটলি। নির্বাচিত হয়েছে আমাদেরই আশকারায়, ঠাট্টাতামাশায়, আমাদেরই নির্ভোট নর্তনকুর্দনে এই নওরোজ দুইসহস্রঊনিশ। খুবই ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছে ডেইজ আপকামিং। অনৈতিকতা আর অজাচারের একটা আখাম্বা আশ্চর্য হতবুদ্ধিকর বছরগুচ্ছ আমরাই ইলেক্ট করে নিয়েছি। পূর্বদিগন্তে সূর্যটাও আছে অবশ্য, স্পষ্টত প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদিগের লোভ আর ভয়ের বর্ণে বেসামাল, প্যুলিসি পিম্প কালারের সূর্য। পোঁদ আগেভাগে পেতে দেই, স্টিমর‍্যলার ঢুকাইতে যেন সুবিধা হয় নির্বাচিতদের। সালাম, আদাব, শুভেচ্ছা, স্বাগত হে নির্বাচিত নয়া নাৎসি দিন ও রজনী! ইয়্যু ফিল আপ মাই সেন্সেস লাইক অ্যা ডে ইন অ্যা ডেজার্ট …

লেখা : জাহেদ আহমদ

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you