লক্ষ লক্ষ পোশাকহীন সিনেদৃশ্যের ভিড় থেকে একুনে টেন সিনস্, দশখানি দৃশ্য মাত্র, তুলিয়া আনা চাট্টেখানি কথা নয়। আবার অত কঠিনও নয় র্যান্ডোম চয়েসের দ্বারস্থ হলে। এইখানে যে-দশটি দৃশ্য উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো নব্বইয়ের দশকের সীমা অব্দি নির্মিত চলচ্চিত্রের অন্তর্গত। পরের দুইটি ডিকেডে, এবং এর আগেরও চলচ্চিত্রেতিহাসে, এমন অসংখ্য খুঁজে বের করা যাবে আরও।
তবে এইটা প্রামাণ্য/তর্কোর্ধ্ব কোনো সিলেকশন/নির্বাচন নয়। এইটায় চোখ বুলিয়ে পাঠক নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এমন বহু দশ/কুড়ি নির্বাচিতা বানাইতে ব্যাপৃত হতে পারেন। হলে পরে সেইটাই হবে একটা সাক্সেস্ এই নির্বাচিতার। ম্যুভি/সিনেমা আমরা আজকাল তো রোজই দেখি। দিনের মধ্যে একাধিকও দেখে থাকি। বিচিত্রভাবে সেই দেখাটাকে লেখায় শেয়ার করতে পারি ইচ্ছে করলে। এইভাবে একটা ক্রিয়েটিভ বিনিময়ধর্মী শিখননির্ভর কালচার স্পিডআপ করে। এই নিবন্ধ নমুনা মাত্র। কমার্শিয়্যাল ম্যুভি দেখেই জীবনের বড় অংশটা কাটবে আমাদের, এই স্বীকারোক্তি দিতে কেপ্পন হবার রিজন দেখি না। বাণিজ্যিক সিনেদেখার চোখেও উদ্ভাবিত হতে পারে শেয়ারযোগ্য বহু মুহূর্ত।
সংকলিত দশটি সিনেদৃশ্য আমরা নির্বাচন করিনি এইখানে। এই সিলেকশনটা এসেছিল ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দের একটা ‘আনন্দভুবন’ সংখ্যায়। সেই ইশ্যুটা পাব্লিশ হয়েছে ১ জুলাইয়ের ডেইটে। এইখানে এক্সট্রা তথ্য হিশেবে এইটুকু অবহিত করা যেতে পারে যে, পাক্ষিক আনন্দভুবন পত্রিকায় প্রতি পনেরো দিনে একটা গানবিষয়ক পত্রিকাংশ ‘সারেগারে’ প্রকাশের পাশাপাশি একটা ফ্যাশনবিষয়ক পত্রিকাংশ ‘অঁ ভোগ’ প্রকাশিত হতো। বর্তমান নিবন্ধে প্রেজেন্টেড দশটি সিনেমার সিলেকশন ‘অঁ ভোগ’-এর বিশেষ একটি ইশ্যু থেকেই গৃহীত হয়েছে। সেই ইশ্যুটি ছিল ‘অঁ ভোগ’-এর জন্মদিন উপলক্ষে বেশ বর্ধিত কলেবরের। অ্যানিওয়ে। এইগুলো অত জরুরি তথ্য হয়তো নয়।
কিন্তু জরুরি বোধ হয় এইটা জানানো যে, এইভাবে যে-কেউ তার নিজের দেখা ছায়াছবি থেকে সেরা দশ পোশাকদৃশ্য, সেরা দেশ নিপোশাকদৃশ্য, সেরা দশ রোম্যান্সদৃশ্য, সেরা দশ ক্রন্দনদৃশ্য, সেরা দশ ফুর্তিদৃশ্য, সেরা দশ ভয়দৃশ্য … ইত্যাদি বিচিত্র রচনা গানপারে সেন্ড করতে পারেন। বোদ্ধাদের ভং-ধরা সাইলেন্সের এই দেশে তথাকথিত কমার্শিয়্যাল ম্যুভি নিয়া নানাভাবে সেলিব্রেইট করতে পারাটা আবশ্যক। বুদ্ধির দীপ্তি শিল্পনিমজ্জিত ম্যুভিতে মেলে, এছাড়া আর-কোথাও মেলে না, এই মিথটা আজকাল অত চলে না বাজারে। এইটা আশার আলো অবশ্যই। নিপাত যাক খোমা আন্ধাইর করে সেলুলয়েডের সুধা/সোডা পানের বোদ্ধাবাজি।
নিশ্চয় এমন আরও সংগৃহীত/সম্পাদিত রচনা আমরা হাজির করব ভবিষ্যতে। এই সিলেক্টেড কালেকশন পয়লা ছাপাকালে ‘সিনেমার সেরা দশটি পোশাকহীনতা’ নামে একটা বক্সট্রিটমেন্ট পেয়েছিল। আমরা তা শাদামাটা হাজির করছি নিচে। সেরা নয়, কিছুই ফেলনা নয় জিন্দেগির, এই প্রত্যয় নিয়াও ভবসমুদ্র সানন্দ পাড়ি দেয়া যায়। কেবল সিনেমানামগুলো উল্লেখ করছি, চিত্র সাঁটছি না। ব্যানারচিত্রে এই দশটি সিনেমার সংক্ষিপ্ত প্রচারচিত্র কোলাজ করে দেবার জন্যে শিল্পী ফারহান মালিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা। নাম লিখে গ্যুগল্ ইমেইজে এই সিনেমাগুলোর পোস্টার বা আদার্স দেখে নেয়া যায়, ডাউনলোড করে চাই-কি সিনেমাটাও দেখে নেয়া যায় একবার/আরেকবার।
আর হ্যাঁ, এই রিপোর্ট ড্রাফ্টকালে বার্নার্দো বার্তোল্যুচ্চি ইন্তেকাল করলেন। উনার ‘লাস্ট ট্যাঙ্গো ইন প্যারিস’ স্মরণ করি। সিনেমাটা খালি তো নগ্নতা নয়, এই ছবির বৈশিষ্ট্য নানাভাবে মিলনের দৃশ্য। মার্লোন ব্র্যান্ডো ও মারিয়া শ্নাইডার এ ছবির প্রধান অভিনয়শিল্পী। বিষয়টা সবচেয়ে ঘনীভূত হয়ে ওঠে ফাঁকা অ্যাপার্টমেন্টে তাদের দ্বিতীয় মিলনের সময়ে — যখন পেঁচিয়ে-থাকা দুটো শরীরের মধ্যে কার হাত-পা কোনটা বলা মুশকিল হয়ে ওঠে স্পেক্টেটরের পক্ষে। একটা ছায়াছবিতে, স্পেশ্যালি কমার্শিয়্যাল ভেঞ্চারগুলায়, সেক্স এবং সেন্সুয়াসনেস্ জিনিশগুলো বহু কৌণিক দৃষ্টি দিয়ে দেখা যায়। যেমন ‘বেইসিক ইন্সটিঙক্ট’ ম্যুভিটার কথাই ধরা যাক। ছবিটার সেরা দৃশ্য কোনটা? শ্যারন স্টোনকে থানায় ডেকে জেরা করার দৃশ্যটাই। পায়ের ওপর পা তুলে বসা স্টোন যখন পা বদলালেন তখন এক্সট্রিম ক্লোজআপে সেকেন্ডখানেক ধরে দেখা গেল অমানুষিক রকমের খাটো পোশাকের নিচে তিনি কিছুই পরেননি। নাইন্টিসের এই সিনেমাটা তো ধুন্দুমার ব্যবসা করেছিল। পরে এর সিক্যুয়্যালও হয়। এইগুলাও ম্যুভি-সমুজদারিতার বিষয় হতে পারে তো!
বলা বাহুল্য, হলিউড ও বলিউডের গোটা দশ সিনেমার নামই নিবন্ধে নেয়া হয়েছে। এর বাইরেকার যে-সমস্ত উড/অরণ্য প্রতিবেদনের বাইরে থেকে গেল বটে। একটা টাইমে সেইগুলাও কয়েকটা কাভার করা যাবে ম্যে-বি।
নিচে পরপর দশটি সিনেমার নাম ও সংশ্লিষ্ট দশটি দৃশ্য সংক্ষেপে পেশ করা যাচ্ছে :
স্ট্রিপটিজ
ঝাটাক-স্যে ব্রা খুলে থলের বেড়াল বের করে দেবার সাহস তিনিই প্রথম দেখাননি। কিন্তু শাদা শার্ট থেকে বাদামী ত্বক পর্যন্ত যেভাবে ধাপে ধাপে এগোলেন সেটাই দেখার মতো।
গোল্ডফিঙ্গার
গাই হ্যামিল্টন সাজিয়েছিলেন বন্ড কিংবদন্তি গার্ট ফ্রিবকে — সোনালি রঙে সম্পূর্ণ রাঙানো শরীরে আব্রু বলতে এই একই রঙের অতিসূক্ষ্ম প্যান্টি।
লাস্ট ট্যাঙ্গো ইন প্যারিস
শুধু নগ্নতা নয়, এই ছবির বৈশিষ্ট্য নানাভাবে মিলনের দৃশ্য। মার্লোন ব্র্যান্ডো ও মারিয়া শ্নাইডার এ ছবির প্রধান অভিনয়শিল্পী। বিষয়টা সবচেয়ে ঘনীভূত হয়ে ওঠে ফাঁকা অ্যাপার্টমেন্টে তাদের দ্বিতীয় মিলনের সময়ে — যখন পেঁচিয়ে-থাকা দুটো শরীরের মধ্যে কার হাত-পা কোনটা বলা মুশকিল।
বেইসিক ইন্সটিঙক্ট
ছবির সেরা দৃশ্য শ্যারন স্টোনকে থানায় ডেকে জেরা করার দৃশ্যটাই। পায়ের ওপর পা তুলে বসা স্টোন যখন পা বদলালেন তখন এক্সট্রিম ক্লোজআপে সেকেন্ডখানেক ধরে দেখা গেল অমানুষিক রকমের খাটো পোশাকের নিচে তিনি কিছুই পরেননি।
কামসূত্র
বড়বোনের সাথে বিয়ের পাকা কথা দিতে আসা রাজাকে পাশের ঘরে নিয়ে যায় মায়া। রাজার আলতো আঙুলে মসৃণ সূক্ষ্মতায় খুলে যায় ঘাগরা। মায়া চরিত্রের অভিনেতা সারিতা চৌধুরীর অতুল ঐশ্বর্যের পুরোটাই উন্মোচিত হয় চোখের সামনে, এক্সট্রিম ক্লোজআপে।
সত্যম শিবম সুন্দরম
শাদা শাড়ির মানেই কিন্তু জটিল উদারতা; অন্তত সেই শাড়ি যদি জিনাত আমান পরেন ছোট জামা ছাড়া তবে তো মাশাল্লা, কথাই নাই। আর বোনাস হিশেবে জিনাত আমানের সূক্ষ্ম নাভি, কোমর ইত্যাদি উঁকিঝুঁকি দেখার মতো বিশেষ আঙ্গিকে পরা শাড়ি।
সিদ্ধার্থ
সিমি গারেওয়াল আর তার সুতোহীন নিখুঁত শরীর। আহা!
ইলেভেন ডেইস্ ইলেভেন নাইটস্
পল ফিরহোফেন, মাইলোস ফোরম্যান আর পেদ্রো আলমাদোভারের মতো পরিচালকেরা পর্নোগ্র্যাফিকেও উঠিয়ে এনেছেন কাল্ট ম্যুভির পর্যায়ে। ‘ইলেভেন ডেইস্ ইলেভেন নাইটস্’-এর ব্যাপক নগ্নতা আর কামলীলাও এখন সিরিয়াস চলচ্চিত্রচর্চার বিষয়।
স্পেশিস্
অ্যালিয়েন আর মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই প্রমাণ করতেই বোধ হয় নাতাশা হান্সরিজের ভরাট আর নিটোল শরীরটি মেলে ধরা হয়েছে।
ব্লু লেগুন
নায়িকা ব্রুক শিল্ডস্ ও নায়ক ক্রিস্টোফার অ্যাটকিন্স প্রায় সর্বক্ষণই নগ্ন। অভিনয়ের গুণে কাহিনিটাই মুখ্য হয়ে উঠেছে, নগ্নতা নয়। তবে এই সিনেমার সেরা দৃশ্য বললে ব্রুক শিল্ডস্ নিজের স্তনসৌন্দর্যে নিজেই মুগ্ধ সেইটা।
কালেকশন ও প্রিফেসকরণ : মিল্টন মৃধা
… …
- অন্তরঙ্গ কবিচিত্র - January 28, 2021
- সঞ্জীব চৌধুরী : জীবনতথ্য - November 19, 2019
- বাঁশি ও বিচ্ছেদী - November 16, 2019
COMMENTS