স্বরচিত কবিতার অন্তর্গত অনুপ্রেরণা || হাসান শাহরিয়ার

স্বরচিত কবিতার অন্তর্গত অনুপ্রেরণা || হাসান শাহরিয়ার

শেয়ার করুন:

 

দ্য স্প্যানিশ ট্রাজেডি
রাত। নেকড়ের মুখের মতো রাত।
আবছা আলেয়ার মঞ্চে বিলাপ করতেছে একা
ডন আন্দ্রেয়ার জ্বিন
ইন্তিকাম ইন্তিকাম ইন্তিকাম…

আহ! বেল-ইম্পেরিয়া, আহ!
হিয়েরোনিমোর সাজানো মঞ্চে আত্মঘাতী প্রেমিকা তুমি। কেন?

মঞ্চে টলতেছিল ডন আন্দ্রেয়ার জ্বিন
অন্য প্রেমিক হোরাশিও পাতালে খুঁজতেছিল দিশা।
বেল-ইম-পে-রিয়া…

নেকড়ের মুখের মতো রাতে
ধরাশায়ী অমাময়ী তারার আকাশ
দরজায় আরেক লরেঞ্জোর দাঁত
জানালায় অন্য বালথাজার।
শুনতেছ বেল-ইম্পেরিয়া,
ম্যাকিয়াভেলির কুকুরগুলা নিয়া
প্রতিদিন করতেছি সংসার।
(সেপ্টেম্বর ২০২০)

কবিতার প্লট সিক্সটিন সেঞ্চুরির প্লেরাইট থমাস কাইডের এলিজাবেথান ট্রাজেডি ‘দ্য স্প্যানিশ ট্রাজেডি অর হিয়েরোনিমো ইজ ম্যাড অ্যাগেইন’ থেইকা ধার করা।

‘দ্য স্প্যানিশ ট্রাজেডি’ লেখা হইছিল ১৫৮২ থেইকা ১৫৯২-র মধ্যে। এলিজাবেথান ট্রাজেডি। নাটকের প্লট হইলো স্পেন আর পর্তুগালের মধ্যে যুদ্ধ। যুদ্ধে পর্তুগাল হাইরা যায়। কিন্তু পর্তুগালের প্রিন্স বালথাজারের হাতে স্পেনের বীর ডন আন্দ্রেয়া খুন হয়। এই খুন আন্দ্রেয়া মাইনা নিতে পারে নাই। কারণ যুবক আন্দ্রেয়া প্রেমিকা বেল-ইম্পেরিয়ারে রাইখা দেশের লাইগা যুদ্ধ করতে আসছিল। তার মনে হইলো, তার সাথে অন্যায় হইছে। ফলে পাতালের রাজা প্লুটোর সাথে সে তর্ক লাগাইয়া দেয়। সে তার খুনের প্রতিশোধ দাবি করে। প্লুটোর বউ প্রস্পারিনের সমর্থনে প্লুটো তারে আবার দুনিয়াতে পাঠায়। তবে সে ভুত হইয়া আসে এই আশ্বাসে যে একদিন সে তার খুনিদের মরতে দেখবে। নাটকটা শুরু হয় মঞ্চে ডন আন্দ্রেয়ার ভূত হইয়া বিড়বিড় করার মধ্য দিয়া। মানে স্বগতোক্তির ভিতর তার সাথে ঘইটা যাওয়া এইসব ঘটনা দর্শকদের বলতেছিল সে।

বেল-ইম্পেরিয়াও আন্দ্রেয়া খুনের প্রতিশোধ নিতে চায়। ফলে একভাবে সে আন্দ্রেয়ার বন্ধু হোরাশিওর প্রেমে পইড়া যায়। হোরাশিও ছিল নাটকের প্রোটাগনিস্ট হিয়েরোনিমোর ছেলে। হিয়েরোনিমো ছিল নাইট মার্শাল মানে অনেকটা ইভেন্ট-ম্যানেজারের মতো। অর্থাৎ স্প্যানিশ এলিটদের সাথে তাদের ক্লাস-স্ট্যাটাসে বহুত তফাত। বেল-ইম্পেরিয়া হইলো রাজার ভাতিজি, ডিউকের মেয়ে। যুদ্ধের পরে যদিও হোরাশিও আন্দ্রেয়ার খুনি পর্তুগালের প্রিন্স বালথাজাররে ধইরা নিয়া আসে, কিন্তু সব ক্রেডিট হোরাশিও পায় না। বেল-ইম্পেরিয়ার ভাই লরেঞ্জোও এই জয়ে ভাগ বসায়। অ্যানিওয়ে। পরে কূটনৈতিক স্বার্থে বেল-ইম্পেরিয়ার সাথে বালথাজারের বিয়ে ঠিক হয়। যেইটা বেল-ইম্পেরিয়া কিছুতেই মাইনা নিতে পারে না।

এইদিকে লরেঞ্জো যখন জানতে পারলো তার বোন বেল-ইম্পেরিয়া এখন হোরাশিওর প্রতি দুর্বল, সে তখনই বালথাজারের সাথে মিইলা হোরাশিওরে খুন করে। অ্যানিওয়ে, হোরাশিওর বাবা হিয়েরোনিমো কীভাবে বেল-ইম্পেরিয়ারে লইয়া হোরাশিও আর ডন আন্দ্রেয়ার খুনের প্রতিশোধ নেয় — নাটকটা এইসব নিয়া, and I just intertwined this plot with my own vendetta of thoughts!


হাসান শাহরিয়ার রচনারাশি

শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you