প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য ও সিনেমায় গল্পবলা || আহমদ মিনহাজ

প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য ও সিনেমায় গল্পবলা || আহমদ মিনহাজ

সিনেমায় গল্প বলার ঘটনা যদি ভাবতে বসি তাহলে এটাই হচ্ছে প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের নিজস্বতা। রিয়েলিটি ও ফিকশন-র গোলযোগের মধ্যে তাঁর ক্যামেরা স্বচ্ছন্দে চলতে ভালোবাসে। অতিকল্পনা যেখানে বাস্তবে মোড় নেয় আর বাস্তব বলে যাকে আমরা জানি-বুঝি ও যাপন করি, সেটাকে অতিকল্পনার মোড়কে ঢাকা মিথ্যে ভাবার বিগার জাগে মনে। তা-বলে জাদুবাস্তবতা মোটেও নয়, প্রদীপ্ত বরং আর্বান  জীবনবেদের সকল অঙ্গে সক্রিয় দূরত্ব ও বিচ্ছিন্নতার গোলমাল থেকে যেসব সিনথেটিক  রিয়েলিটি  জন্ম নেয়, নিতেই থাকে, ওইসব অনুষঙ্গকে ক্যামেরায় সক্রিয় করে তোলেন। বাস্তবে যেমনটি আসলে হওয়ার কথা ছিল অথচ হয় না, আপাত অসম্ভব অবান্তরকে সম্ভব ভাবার আবেশ পর্দায় সত্য হয়ে ওঠে। আবেশটা আবার যা হচ্ছে বা চলছে এখন, ওটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে অবশেষে পরাজিত সৈনিকের মতো মাটিতে লুটিয়ে পড়ে! চেনা বাস্তবতায় দর্শককে ফিরতে হয় কিন্তু ভ্রমটা থেকেই যায় সেখানে! যেমনটি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয় না, ওটা অতঃপর গলার কাঁটা হয়ে দর্শককে বিঁধতে থাকে। নির্মাণশৈলী ও গল্পভাবনায় দুজনের দূরত্ব সুদূর, তবে অদ্বৈত বিক্রম সেনগুপ্তর ছবিরা যেমন, অনেকটা তাঁর মতো নিও রিয়ালিজম-র এক ভিন্ন ভাষাআঙ্গিক প্রদীপ্ত মনে হয় তৈরি করে নিতে পেরেছেন। ওটাকে নিজের সিগনেচার মার্ক  করে তুলেছেন তিনি। তাঁর প্রথম সফল সিগনেচার মার্ক বাকিটা ব্যক্তিগত  যারা দেখেছেন তাদের সেটা টের পাওয়ার কথা। টেলিফিল্ম পিঙ্কি আই লাভ ইউ  থেকে পূর্ণদৈর্ঘ্য কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল, সত্যি হলেও গল্প, সেখান থেকে বাকিটা ব্যক্তিগত  হয়ে রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত  কিংবা আলোকচিত্রের অংশভাক ফুয়েল  বা নীল তিমির মতো নিরীক্ষামূলক স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিগুলো..., প্রদীপ্তর গল্প বলার রীতি দর্শকের জন্য ফাঁদ বিশেষ। একাধারে মায়াবি ও অন্তর্ঘাতী। আত্মঘাতীও কি? সত্যি হলেও গল্প  ফিরে দেখতে বসে প্রশ্নটি মনে জাগছে বটে!

নেসেসারি লিঙ্কসমূহ
সত্যি হলেও গল্প : প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য
নীল তিমি : প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য
ফুয়েল : প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য
অর্ক-র ঠেকে প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য


তাৎক্ষণিকামালা
আহমদ মিনহাজ রচনারাশি

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you