বুদ্ধং শরণং || কাজল দাস

বুদ্ধং শরণং || কাজল দাস

পৃথিবীর সকল ধর্ম আর ধর্মাবতারগণ কাল্পনিক ঈশ্বরকে বড় করে দেখিয়ে গেলেন। ব্যতিক্রম ছিলেন মহামতি গৌতম বুদ্ধ। তিনি বললেন, — নিজের বোধ, বুদ্ধি আর বিবেচনা দিয়ে যা পাওয়া যায় তা-ই সত্য। এই সত্যকে গ্রহণ করতে হবে। নিজের চৈতন্য ছাড়া আর কিছুর দাসত্ব না গ্রহণ করার চিন্তাটাই জ্ঞানী মানুষের চিন্তা।

এইভাবে আর কোনো মহামানব মানুষের কৃতিত্ব আর মহত্ত্বের জয়গান করেননি। সকল ধর্মাবতার নিজের মাথাটা রেখেছেন একজনের নিচে আর তাবৎ প্রাণিকূলের মাথা রেখেছেন তার পায়ের নিচে। গৌতম বুদ্ধ এসে পায়ের নিচ থেকে মাথা সরিয়ে সবার হাতটাই ধরে রইলেন। বললেন, — নিজেকে জানো, নিজের উপশম নিজেই হয়ে ওঠো।

এই শিক্ষা আর কোথাও নাই।

বুদ্ধকে আমার কাছে ভালোলাগার যে বিষয় সবচেয়ে অনন্য সেটা হলো তার প্রাণ ও প্রকৃতি প্রেম। তার এই চিন্তাটা পৃথিবীর সকল ভাবুকদের চেয়ে তাকে আলাদা করে রেখে গিয়েছে। এই পৃথিবীতে মানুষের যতটুকু অধিকার রয়েছে, ঠিক ততটুকুই অধিকার আছে সকল তৃণ এবং প্রাণির। সেজন্য তিনি সকল জীবের কষ্টকে এক-আত্মা করে দেখেছেন। পৃথিবী নামক গ্রহের সন্তান হিসেবে আমাদের তো এই বোধটাই আগে আসা দরকার যে, এই ঘাসফড়িঙটাও আমার গ্রহের। আমার প্রতিবেশী। তার ক্ষতিটাই কেন আমাদের দ্বারা হবে?

আজকের দিনে আমরা যেভাবে প্রাণ ও প্রকৃতি বিনাশ করে এই পৃথিবীটাকে ভাগাড় বানাচ্ছি, এতে বুদ্ধের প্রাণপ্রকৃতিপ্রেমের আহ্বান আরো জরুরি মনে করি।

বুদ্ধপূর্ণিমার শুভেচ্ছা জগতের সকল প্রাণিকে।


কাজল দাস রচনারাশি

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you