গল্প-চিত্রনাট্য আর সেটার সঠিক এক্সিকিউশন, এই সিনেমায় প্রায় পুরোটা সময় স্ক্রিনের সাথে আটকে রাখবে আপনাকে। যদিও কোনো আহামরি গল্প না; সেই পুরনো গ্যাং কালচার, ফ্যামিলি ইমোশন, রিভেঞ্জ, এইসব। কিন্তু, একটা অদ্ভুত বিশ্বাসযোগ্যতা আছে গল্প বলার ঢংয়ে। কিছুই মেকি মনে হয় না, যেন আমার সামনেই ঘটে যাচ্ছে ঘটনা।
অনেক খোঁজ করে এই পোস্টারটা বের করলাম। কারণ অনেক দুর্দান্ত পোস্টারের মাঝে এটাই আসলে গল্পের থিমের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে ভনিতা ছাড়াই। ‘রাবন’, দশ মাথা আর বিশ হাত বিশিষ্ট এক অসুর, যে নিজের সব হারিয়েছিল শুধুমাত্র তার বোনের সাথে অন্যায়ের প্রতিকারের জন্য। সে-যুগে তার যুদ্ধ রামের সাথে হলেও এ-যুগে আর রাম নেই। রাবন তাই লড়াই করে প্রকৃত অমানুষদের সাথে।
ধনুশ সিনেমাটি লিখেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন, এবং নাম চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন। তিনটি কাজই একদম টপ নচ! তবে একটা ঝামেলা হয়েছে, অন্য চরিত্রগুলো ঠিকঠাক দাঁড়ায় নাই তার চরিত্রের তুলনায়। তার বোনের চরিত্র দুসারা বিজায়ান আরেকটু স্ক্রিনটাইম পেলে ধনুশকে টেক্কা দিয়ে দিতে পারত। ঠিক একই রকম বলা যায় সেলভারাঘাবানের চরিত্রটার কথাও, খুবই অল্প স্ক্রিনটাইমে নিজের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন অভিনয় দিয়েই। এর বাইরে বাদবাকি সব কাস্টিং অ্যাভারেজ ওকে টাইপ হয়েছে, এমনকি প্রকাশ রাজের চরিত্রটা বিলো অ্যাভারেজ রীতিমতো। কেন যেন মনে হচ্ছিল সম্ভবত সিডিউল সংক্রান্ত কোনো জটিলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোর একসাথে উপস্তিতি ভীষণ রকম কম হয়েছে।
সিনেমার অ্যাকশন কোরিওগ্রাফি জাস্ট ব্রিলিয়ান্ট, প্রতিটা স্ট্যাব একদম বাস্তব। পোস্টারটায় হাতে যে-অস্ত্র দেখা যাচ্ছে, দুর্দান্ত কোরিওগ্রাফি আর এডিটিং ছাড়া এ বস্তুকে এতটা ভয়াবহ দেখানোটা সহজ ব্যাপার না। এ. আর. রেহমানের মিউজিক আর প্রভুদেবার কোরিওগ্রাফি আরেকটা প্লাস পয়েন্ট অবশ্যই, মুড একদম ঠিকঠাক লাইনে রেখেছে গল্পের সাথে।
ধনুশের ক্ষেত্রে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা আছে, এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নির্দেশনার ক্ষেত্রে অবশ্য বলতে পারছি না, তার আগের কাজটা দেখিনি এখনও।
এতটুকু বলতে পারি শেষে, এক বসায় দেখে শেষ করার মতো বেশ ভালো একটা সিনেমা।
সজীব তানভীর রচনারাশি
গানপারে ম্যুভিরিভিয়্যু
- শাহ আবদুল করিম : জন্মের শতক পেরিয়ে আরও একটা আস্ত দশক || ইলিয়াস কমল - January 20, 2025
- সিনেমার চিরকুট ৮ - January 19, 2025
- টুকটাক সদালাপ ২ - January 17, 2025
COMMENTS