মির্জার সমাধি ও যেহীনভাইয়ের স্মৃতি || ওলি মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী

মির্জার সমাধি ও যেহীনভাইয়ের স্মৃতি || ওলি মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী

এক্স-পাইলটিয়ানএফআইভিডিবির প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক যেহীনভাইয়ের কবি গালিবের প্রতি এক আলাদা প্যাশন ছিল। গালিবের শের আওড়ানো ছিল তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক আড্ডার অংশ;— যে-বিষয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠজন যারা তারা সম্যক অবগত।

তাঁর মুখ থেকে অনেকবার শুনে শুনে মুখস্থই হয়ে গেছে শের : “হাজারোঁ খাহিশে এ্যয়সে কে হর খাহিশপে দম নিকলে / বহত নিক্লে মেরে আরমাঁ লেকিন ফিরভি কম নিক্লে” — “হাজারো বাসনা হৃদয়-গভীরে, যার প্রতিটিই প্রাণহরা / যদিও মিটেছে অনেক বাসনা, রয়ে গেছে কত অধরা”…

আমার মতোই যেহীনভাইয়ের আরেক স্নেহধন্য কবি জাহেদ আহমদ যখনই শুনল আমি দিল্লিতে, তখনই আমাকে বলল নিজামউদ্দিনে গিয়ে গালিবকে দেখে আসতে। তবে গালিবের কবরে গিয়ে খানিকটা মোহভঙ্গ হলো!

তার আগেই বলে নিই গালিব কাবাবঘরের কথা। গালিব কাবাব কর্নার।

দিল্লি আসার পর হিন্দুস্তান টাইমসে হরেক কাবাবের বর্ণনা পড়ে কাবাবের নেশা জেগে উঠল নতুন করে। গালিব রোডে ঢুকতেই নাসারন্ধে কাবাবের ঘ্রাণ এসে লাগল; মনে পড়ল (সমার্সেট) মমের সেই লাইন যা উচ্চমাধ্যমিকে একসময় পাঠ্য ছিল — tickled my nostrils as the nostrils of Jehovah were tickled by the burned offerings of the virtuous Semites.

মাটন কাবাব থেকে মহিষের মাংশের কাবাব; কোনটা রেখে কোনটা চাখব? স্পাইসের অসাধারণ স্বাদ! ওয়াহ ওয়াহ! কোনটা রেখে কোনটা বলব? এজন্যই মনে হয় রকস্টার ম্যুভির বদৌলতে এলাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে হানিফ কুরেশির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে বহুদুর!

কিন্তু অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে আছে কবির কবর; এখানে-সেখানে চরে বেড়াচ্ছে ভেড়ার পাল। কবরের প্রাঙ্গণে যুবক ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে; পাশেই ভবঘুরেরা বসিয়েছে আড্ডা। মূল কবরের অংশটুকু তালাবদ্ধ। হয়তো অ্যান্টিসোশ্যাল ইলিমেন্টদের এড়াতেই এই ব্যবস্থা। গালিব ইনস্টিটিউটের অবস্থাও যে খুব ভালো, তা কিন্তু নয়। অযত্ন অবহেলার ছাপ সর্বত্র। ভারতের প্রেসিডেন্ট জাকির হোসেনের নামাঙ্কিত ফলকটি আশেপাশের পরিবেশের সাথে একেবারেই বেমানান…

ব্যানারে ব্যবহৃত যেহীন আহমদ প্রতিকৃতিটির শিল্পী সত্যজিৎ রাজন


ওলি মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী রচনারাশি

COMMENTS

error: