দুনিয়াজোড়া খ্যাতির ব্যাপারটা আসলে একটা পাগলামি ছাড়া আর কিছু না। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা দুনিয়ার ছোট্ট একটা ভূখণ্ডে। সেখানকার আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলাও ছোট ছোট। স্যুয়িডিশ একটা ছায়াছবি নির্মাণ করে টেনেটুনে কোনোমতে বাইরের ফিল্মফেস্টিভ্যালে নিয়া যাইতে পারলেই অনেক বড় অর্জন হয়ে গেল বলে মনে করি আমরা। আর এরচেয়ে বেশি কিছু আশাও করি না আমরা।
জুয়েলারি জিনিশটা আমার কাছে স্রেফ বাইরে বেরোবার আগে পরার মতো জিনিশ মনে হয়। এইটা হচ্ছে ঝটপট নিজেকে রেডি করে নেবার সবচেয়ে সোজা রাস্তা।
কোনো অনুষ্ঠানে যেতে হলেই কেবল অল্প একাধটু প্রসাধন-সাজুগুজু করি আমি। কিন্তু নর্ম্যালি আমি মেইকাপ জিনিশটা অ্যাভোয়েডই করি। ফিটফাট হবার সময় এই একটু ভুরুতে পেন্সিল ছোঁয়ানো, থোড়া কাজল লাগানো, হয়তো অল্প-খানিকটা লিপস্টিক। ব্ব্যস, আর কিছু না।
নিজেকে ব্যাপক চাপের ভিতরে রাখি সবসময়। কিন্তু কষ্ট পছন্দ নয় আমার, সত্যি কথাটা স্বীকার করছি। জীবনে ব্যালে শিখেছি বলে ব্যাপারটা আমি এইভাবে দেখি যে একটা ব্যালেরিনা হিশেবে ব্যথার মধ্যেই থাকতে হয় আমারে কন্সট্যান্টলি। স্টকহোমে ব্যালে স্কুলে থাকার সময়কার একটা স্মৃতির কথা বলি। আমার মনে আছে ব্যালেশিক্ষার্থীদের লকার রুমে যদি দেখা যাইত কেউ সইতে না পেরে ডক্টরের কাছে যেয়ে প্রেস্ক্রিপশনের আওতায় একটা ব্যথানাশক কিসিমের কিছু গ্রহণ করছে, দেখা মাত্র কোনো প্রশ্নোত্তর ছাড়াই বেচারিটারে একঘরে করে রাখতাম। পেইনকিলার গ্রহণকারীর লগে আমরা ড্রাগঅ্যাডিক্টের মতো দূর দূর তফাৎ থাকো ধরনের আচরণ করতাম। সত্যি বলতে কি, এখন মনে হয়, আমরাই ছিলাম নেশায় আসক্ত যারা কিনা নেশাদ্রব্য ছুঁয়েও দেখি নাই কোনোকালে। ব্যথা সইবার নেশায় আসক্ত। ব্যথাসক্ত।
স্যুয়িডিশ নাগরিক আমি, স্যুয়িডেনে জন্ম, রিয়্যাল স্যুয়িডি বলতে যা বোঝায় আমি তা-ই। কিংবা আরও ভালো করে বলতে গেলে আমার রক্তে ফিনল্যান্ডের ধারাটাও বইছে, কাজেই ফিনিশীয় বললেও বলা যায় আমারে, অ্যাট-লিস্ট কোয়ার্টার ফিনিশ তো বলা যায়ই।
চয়ন, সংকলন ও অনুবাদন : বিদিতা গোমেজ
… …
- ১০ কবিতা || হোসনে আরা কামালী - June 26, 2025
- ঘুম ও না-ঘুমের গদ্যলেখা || ফজলুররহমান বাবুল - June 12, 2025
- অবসাদ ও অন্যান্য || জওয়াহের হোসেন - June 11, 2025
COMMENTS