বয়হুড : আম্রিকান ছেলেবেলা || ইমরুল হাসান

বয়হুড : আম্রিকান ছেলেবেলা || ইমরুল হাসান

স্ট্রেইট, লিনিয়ার কাহিনির একটা সিনেমা এইটা।

ফর্ম হিসাবে লিনিয়ারভাবে বলাটা অনেকসময়ই নন-লিনিয়ারের চাইতে বড় একটা জায়গারে এক্সপোজ করতে পারে। আর রিচার্ড লিংকলেটার এই ফর্মটার গুরু-টাইপের মানুষ। উনার বিফোর-ট্রিলজিতেও এইটা আছে। তবে বিফোরগুলার ফর্মের জোরটা হইল ন্যারেটিভে। সিনেমা ভিজ্যুয়াল ফর্ম হিসাবে কতগুলা ইমেজই প্রডিউস করে; এই ইমেজগুলা নিজেদের দেখাইতে গিয়া আরোকিছু বলে, যা দেখায় খালি তার ভিতরেই আটকাইয়া থাকে না। বার্গম্যানের ‘পার্সোনা’ নিয়া জিজেক বলতেছিলেন, সিনেমার হিস্ট্রিতে সবচে ইরোটিক সিন হইল যেইখানে নার্সটা অ্যাকট্রেসরে সি-বিচে একটা সেক্স-অর্গির কথা বলতেছিল। খালি তার চেহারাটা, বলার ভঙ্গিটাই আছে সিনে; তার বলার ভিতর দিয়া যেইটা প্রডিউস হইতেছে, সেইটা অন্য আরেকটা কিছু! এই ন্যারেটিভের ফর্মটাই বিফোর ট্রিলজির জিনিস, নায়ক-নায়িকার (ট্রুলি, এরা নায়ক-নায়িকাই) কথার ভিতর দিয়া তাদেরকে দেখা যায়, যা দেখানো হইতেছে সেইটা অ্যাজ সাচ তেমন কোনো জিনিস না বা কথার লাইগাই সিনগুলা ক্রিয়েট হইতেছে, এইরকম এক্সট্রিমও ভাবা যায়। বিফোর সানরাইজ-এ যে-জায়গাগুলাতে নায়ক-নায়িকা যায়, শেষে ওই জায়গাগুলা আরেকবার দেখায়, মিনিংলেস প্লেইসেস ওইগুলা; বোঝা যায়। আর বিফোর সানসেট-এ মিনিংলেস জায়গাগুলা আগে দেখায়, পরে কী রকমের রোম্যান্টিক হইতে থাকে প্লেইসগুলা। এইটাও একটা লিনিয়ার ফর্ম।

বয়হুডে এইরকম ব্যাপার নাই। যা আছে সেইটা সিনের ভিতরেই, সবসময়। কথা ত ইমেজেরই পার্ট; প্রায়োরিটি নাই অ্যাজ সাচ। সিনেমার শেষদিকে আইসা প্যাট্রিসিয়া (মা) ম্যাসনরে (তার পোলারে) বলে যে, আই এক্সপেক্ট দেয়ার উড বি লিটল মোর! তখন ফর্মের ইনকোয়ারিটা টের পাওয়া যায়। যা বলা হইতেছে, এরবেশি কিছু এইখানে ছিল বা আছে কি না। সিঙ্গেল মাদার হিসাবে শে তার আর্লি বয়সে হওয়া একটা মেয়ে আর ছেলেরে বড় করে; আরো যে দুইটা বিয়া করে সেইখানেও শে তার ছেলে-মেয়ের ফিউচাররেই প্রায়োরিটি দেয়; শেষে ছেলেটা যখন কলেজে যাইতে নিছে তখন শে ফিল করে, এইখানে লিটল-মোর জিনিসটা যদি থাকেও, সেইটা আর দেখাই যায় না। একদিন একলা একটা ঘরে মারা যাবে শে। ছেলেটা, যার কাহিনি এইটা, সে ভাবে, মানুষ দিয়াই যেহেতু কাজ চলে, রোবটের আর কী দরকার!

আম্রিকাতে ট্রাডিশান অর্থে ফ্যামিলি নাই, কিন্তু ফ্যামিলি-ধারণাটা থাইকাই যাইতেছে; এই সাইকোলজিটাতে তারা বিলং করে, সিনেমা-অনুযায়ী। একটা সিনে আছে, সামন্থা (বয়-এর বইন) ম্যাসনের গার্লফ্রেন্ডরে কয়, আঠারো বছর হওয়ার পরে বাপ-মার কথা শোনার কিছু নাই, যদি তারা টাকাপয়সা না দেয়। দুইজনে হাসে। হ্যাঁ হ্যাঁ বলে। ম্যাসনের বাপ ম্যাসনরে বলে, দুনিয়াডা আসলে তুমিই, তুমি যেইটা ভাবো সেইটাই। এইরকমের কিছু। এই কারণে বাপ তারে গানের সিডি প্রেজেন্ট করে পনেরো-বছর বয়সের বার্থডেতে। আর ম্যাসন ভাবছিল যে, বাপ তারে পুরান গাড়িটা দিবে। কেউ আর কারো আমি থিকা সরতে পারতেছে না। সবসময় ব্যাপারটা অবশ্য একইরকম থাকে না। ম্যাসনের মা পড়াইতেছিল সাইকোলজি ক্লাসে, এইরকম হইলে কী হবে, যদি সার্টেন মোমেন্ট আইসা আমাদের ধইরা না ফেলে? আমাদের ভাবনার ভিতর ব্যাপারটা এইরকম না যে, উই সিইজ দ্য মোমেন্ট; এইটা অলওয়েজ এইরকম যে, দ্য মোমেন্ট সিইজেস আস! ম্যাসনের নতুন গার্লফ্রেন্ড কয়। ফ্যামিলি না থাকলেও ফ্যামিলির ধারণা থাইকাই যায়। আমাদের ছেলেবেলায়।

সিনেমা দেখতে গেলে, আইএমডিবি (৮.৭) বা রটেন টমোটোর (৯.৪) চাইতে মেটাস্কোরই (১০০/১০০) ভালো মনেহয়।

Movie Title: Boyhood ।। Genre: coming-of-age drama film ।। Written and directed by Richard Linklater ।। starring Patricia ArquetteEllar ColtraneLorelei Linklater, and Ethan Hawke ।। Released in 2014

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you