একটা ম্যামথসদৃশ অটোমবিলের সঙ্গে — এই বইয়ের পাতায় পাতায় — এর নাইটমেয়ারে এবং মটর্সাইকো উড়োচুলা হাওয়ায় — এর প্রত্যেকটা আধো আধো পঙক্তির তরঙ্গে — দৃশ্যায়িত হয় একটা আশ্চর্য মটর্সাইকেল ডাইরির চলচ্চিত্রিক রূপায়ন — বাইকটাই দৃশ্যে এসেনশিয়্যালি-রিকোয়্যার্ড একমাত্র বাহন — ডার্ক-ন্-রক আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লায়িং অব্জেক্ট — লার্জার দ্যান ফিকশন ফিয়ার্সার দ্যান ফ্যাক্ট — উইথ অ্যা ক্লাউনেস্ক অ্যান্ড অ্যালিয়েন হেলমেট — শিরস্ত্রাণ — কখনো গতিরাজ, কখনো মন্থর, কখনো উড়ান — কবি অথবা আলো-অধরা কাব্যের নায়ক — পতনোন্মুখ বাংলাদেশের পোয়েটিক ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা বা যা-হোক — হাওয়েভার — ধরা যাক, হাসান শাহরিয়ার — অথবা সাইফাই — ডিস্টোপিয়্যান ডেজার্ট অভিমুখে রেলেন্টলেসলি ফিউজিটিভের ন্যায় আগায়া যাওয়া আননোন স্পাই — নিস্পৃহ, ফ্রম দি ফিউচার — ফ্যুল অফ উইজডম ফ্রম দ্য পাস্ট ফ্রম দ্য ডেড — গোটা জার্নিটা মেটিকুলাসলি রেনিগেড — অ্যা মিস্টেরিয়াস মটর্বাইক অ্যান্ড অ্যা মেলাঙ্কল বাইকার — ঔ, ইয়া, ফাক’ম্ আপ অল অ্যান্ড লেট’স্ কিক’ম্ আউট ফ্রম দি ভিউ — জুম করে দেখে নেব পৌষের সংক্রান্তিসন্ধ্যার ড্রপ-বাই-ড্রপ ডিউ — অল ফ্রম অ্যা ল্যান্ড অফ ফেইরি-টেলস হাওর্স অ্যান্ড টিগার্ডেন্স — লাইফের ভ্যালু ডিগ্রেডেশন ও লিভিঙের আনসার্টেইনিটি অ্যান্ড আনস্টপেবল এক্সপেন্স — কতদূর আর যাওয়া যায় — সারি সারি টিলা আর উচ্চাবচ খসড়া রাস্তায় — মটর্বাইক আর তার মালিক জিরায় — ব্লাডলিকার্ড চায় একদণ্ড গলাটা স্লাইটলি ভিজায় — গ্রেকো-রোমান গ্রটেস্ক দরদালানের বেজান বিরান মাইলের পর মাইল — দ্য বাইকার অ্যান্ড দ্য বাইক ইন অ্যা মুড ফর মেরিগোরাউন্ড চিল্ — দূরবর্তী টিগার্ডেনবাঙলো অদূরে এসেই ম্রিয়মাণ — ভেসে-আসা ডাইনোসোরাসের বিয়ন্ড-স্ক্রিন আউট-অফ-ফ্রেইম উত্থান — আর বোবা ক্যালিবানের উদ্গাতাগান — মার্লি ডিলান — ফাঙ্কি, ইলেক্ট্রিক, সাইকেডেলিক, স্লো — অথবা পাল্প ফিকশন, কোয়েন্টিন টারান্টিনো, অথবা ফ্রাসোঁয়া ত্রুফোর ফোরহান্ড্রেড ব্লো — অভিযাত্রা স্যাঞ্চো পাঞ্জার — ইন সার্চ অফ অ্যা মিস্টেরিয়াস সামথিং … অ্যা ওয়্যাক্সড বার্ড অর অ্যা ওয়েডিং রিং … সাগর পুকুর গাঙ পারায়া পাথারের পর পাথার — ইট’স্ অ্যা টোয়াইলাইট সাগা অফ উইন্ডি ইলেভেন ইয়ার্স — অফ ব্লেস অ্যান্ড কার্স — এ এক অডিসি, অ্যান এপিক — উইথ এনাফ ইম্যাজিন্যাশন অ্যান্ড ট্রিক — হিয়ার টু ডিক্লেয়ার দ্য নেইম অফ দ্য ক্রাফটমেইকার — হাসান শাহরিয়ার — প্রথম বই ইলেভেন ইয়ার্স আগে বের-হওয়া বালির ঘর থেকে এই রিসেন্ট ল্যান্ডিং — প্রোফাউন্ডলি আউটস্ট্যান্ডিং — ডেব্যু থেকে এর ডিপার্চার — লক্ষণীয় উদ্গম ও উড়াল তার স্বকীয় অবভাস ও ভাষার — কবি, চিন্তক, পিপলের পলিটিক্স ও পপুলার কালচার নিয়া আত্মস্ফূর্ত গদ্যচর্চায় লিপ্ত — পড়ান পদার্থবিজ্ঞান, মহাবিদ্যালয়ে, প্রাখর্যদীপ্ত — জন্মসূত্রে বাংলাদেশি, সিলেটে থাকেন, সিলেক্টেড কিছু ওয়েবম্যাগে লেখেন — কোমলে কঠোরে মেশানো নিষ্ঠুর ও সুন্দর এ-ম্যানাস্ক্রিপ্টের অন্দরবন্দর, এর আউটস্কার্ট ও শহর, একা, মার্সেনেরিদের রুখে দাঁড়ায় এর লেথাল লাইনগুলা, পাণ্ডুলিপির পদে পদে রেখে যায় এক বিপজ্জনক পদাবলিশিহরণ — লেট’স্ গেট অন দ্য বাইক প্রোঅ্যাক্টিভলি ওয়ান্স অ্যান্ড অ্যাগেন — গেট অ্যালং উইথ দ্য বুক অফ অ্যা ভিয়েমেন্ট বাইকরাইডার, বুক অফ অ্যা ডেভিলিশ ডিসকোয়ায়েটনেস, ল্যুকিং ফর অ্যা কোয়ায়েট অ্যান্ড ক্যুল প্লেইস টু হ্যাঙাউট আউট-দেয়্যার সামোয়ার ইন হ্যাভেন!
২
বইয়ের নাম ‘ম্যামথ ও মোমপাখি’। বইয়ের দাম চারশ টাকা। বাংলাদেশি মুদ্রায়। আরও তথ্য-কতিপয় জানানো দরকার বইটার ব্যাপারে। বেটার হয় প্রিন্টার্স লাইনাপ উল্লেখ করি। প্রোক্ত বইটার প্রকাশক নাজমুল হক নাজু, ঘাস প্রকাশন, মাছুদিঘির পাড়, সিলেট। প্রকাশকাল ২০২৫ ফেব্রুয়ারি। কাভারক্যানভ্যাস রবার্ট মাদারওয়েল। কাভারডিজাইন ইবনে মাহমুদ। মুদ্রক ছাপাকানন। গ্রন্থপরিকল্পক জারমুনি। ইন্টার্ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড বুক নাম্বার ছাড়াও দুইটি কিউআর কোড দেয়া আছে এই প্রিন্টার্স পেইজেই, বইপ্রাপ্তির জন্য কোনো দোকানঘরের পরিবর্তে এই দুটো সংযোগকোড ছাড়াও রয়েছে একটি ইমেইল অ্যাড্রেস ও একটা ফোননাম্বার। তাছাড়া ঘাস প্রকাশনীর আউটলেটে এবং রকমারি ই-কার্টে বইটা অ্যাভ্যাইল্যাবল।
বইয়ের কলেবর মোট চারফর্মা। আকৃতিটি বিশেষ, দ্রষ্টব্য, রেগ্যুলার বইসাইজের চেয়ে প্ল্যানফ্যুলি ভিন্ন। বহুদিন বাদে জ্যাকেট কাভারের জবড়জং জেল্লা ছাড়া বাংলা বই। প্রচ্ছদ সুন্দর। বইয়ের প্রচ্ছদে ব্যবহৃত ইমেইজের সঙ্গে ভেতরের টেক্সটের ও টেক্সট-বিয়ন্ড কন্টেন্টের যোগসুতোটি সিগ্নিফিক্যান্টলি ভিজিবল। কাগজ, ছাপা, বোর্ড, বাঁধাই সুন্দর। সুন্দর গোটা বইটাই। বাহুল্যমুক্ত অর্থে সুন্দর। এমনকি কবির কোনো মুখচ্ছবি পর্যন্ত নাই বইয়ের লগে যুক্ত। সম্পূর্ণ অতিরেকমুক্ত। সংযোগকোড স্ক্যান করে অবশ্য কবির সোশ্যালমিডিয়ায় ডিসপ্লেইড প্রোফাইল পিকচার দেখে এবং খানিকটা টাইমলাইনে হেঁটে অপরিচয় নিরসনের ব্যাপারটা এনশিউর করা যায়।

কিমত জেয়াদা যাদের কাছে মনে হবে, যেইটা আমারও মনে হয়েছিল প্রথমে, এখানে এই অনুচ্ছেদে একবার ভাবি সবে মিলে। যে-কোনো প্রোডাক্টের প্রাইস সেটিঙের সময় ট্রেইডের/বিজনেসের অনেক ফ্যাক্টর মাথায় রাখতে হয়। এর মধ্যে যেমন কস্ট ক্যাল্কুলেশন থাকে, তেমনি থাকে মার্কেট কম্পিটিশন, থাকে কাস্টোমার ডিম্যান্ড সহ বহুবিধ শর্ট টার্ম অ্যাজ ওয়েল অ্যাজ লং টার্ম অব্জেক্টিভ জড়িত। সমস্তকিছু কন্সিডার করে পরে নির্ধারিত হয় একটা প্রোডাক্টের প্রাইস, এইটা আমরা আন্দাজ করতে পারি। কিন্তু, একটা আর্টপ্রোডাক্টের প্রাইসিঙের ক্ষেত্রে দেখি বিসমিল্লায় ফাঁকি। নিশ্চয় বাংলাদেশের আর্টবিজনেস মাথায় রেখে এই কথাগুলা। মানে, একটা বাংলা কবিতাবই নিশ্চয় একটা আর্টপ্রোডাক্ট। যদি হয়, তাইলে এর প্রাইস নির্ধারণের সময় যে-জিনিশটা মাইর খায় তার নাম আর্ট। মূল্য নির্ধারণকালে এর আর্টমূল্য মোটেও বিবেচনায় রাখা হয় না। আর আর্টিস্টরা মাগনা আর্ট জন্মাইতে জন্মাইতে এবং বিলাইতে বিলাইতে দেউলিয়া আগে থেকেই, নয়া আর ভাবার কিছু নাই তাদের পক্ষে। এদেশের বইয়ের বিজনেসটা খাড়ায়া আছে মাগনা ম্যানাস্ক্রিপ্টের উপরে। এদেশের লেখালেখি সৃজনশীলতা মননশীলতা ব্যাপারগুলা আদ্যোপান্ত শৌখিন মানুষদের ঘটনা। ম্যানাস্ক্রিপ্ট ইভ্যালুয়েইট করে এর সম্যক মূল্য চুকিয়ে একটা আর্টপ্রোডাক্টের মর্যাদায় লেখকের লগে লগে লেখাটার ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং করতে গেলে একটা বইয়ের যা বাজারমূল্য ধরতে হয় তার তুলনায় হাফ দাম ধার্য হতে পারে কেবল কবিকে লেখককে তার প্রাপ্যবঞ্চিত করতে পারলে। এইটাই করা হয় বাংলাদেশে। লেখক ছাড়া বাকি যারা থাকে একটা বই বানাইবার ও বেচবার বিজনেসে ব্যাপৃত, অফলাইন অনলাইন ধাপে ধাপে দোকানদারেরা, সকলেই তারা যার যার হিস্যা পায় নানা পার্সেন্টেইজে। কেবল বঞ্চিত হতে হয় লেখককে। সেল্ফ-ইনিশিয়েইটেড পাব্লিক্যাশনগুলায় লেখক চাইলে এই বইবিজনেসে চাল্লু ভাওতাবাজির চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। কলাকেন্দ্রে এক্সিবিশনে একজন পেইন্টিঙআর্টিস্ট যদি তিনফিট দুইফিট ছবির জন্য চল্লিশসহস্র বঙ্গমুদ্রার বিনিময় ক্লেইম করতে পারেন, কবি কেন চল্লিশটা (আসলে একান্নটা) ক্যানভ্যাসের বিনিময় চারশটাকা আদায় করতে পারবেন না?
৩
আচ্ছা। ‘ম্যামথ ও মোমপাখি’ ভিতরে কেমন, সকলই সমান রাঙা না কালারের ভ্যারিয়্যাশন আছে, ডেপ্থ অফ ফিল্ড কেমন বা তার রুট অ্যান্ড রেইঞ্জ অফ ফ্লাইট, এইগুলা হাল্কা টাচে একবার না দেখায়া যাই কীভাবে; সেই কারণেই, যাই, ভিতরে যেয়ে একটু উঁকি দিয়ে দেখি কিছু নজরটান করা যায় কি না। পাঠকের অ্যাটেনশন ড্রয়ের ট্রাই করা যায় নিশ্চয়। রিরিড করাটা আনন্দেরই হয়, সবসময়, বিশেষত কবিতা। কিন্তু কোটেশন চয়ন করা ঝামেলার ব্যাপার। তবু কোট করতে হয় একটাকিছু দেখাইবার সময়।
বেশি নয়, তিনচাইরটা জায়গা এক্সপ্লোর করলে একজন কবির ট্র্যাজেক্টোরি নিয়া আন্দাজটুকু হয়। এক্সার্প্ট খুঁজতে যেয়ে দেখি, এই কবি কিংবা এই কবিতাবইয়ের নায়ক, যে এক অনির্দিষ্ট গন্তব্যের কিংবা গন্তব্যশূন্য অগস্ত্যপথের পর্যটক, ঘুরে বেড়ায় কী এক দুর্জ্ঞেয় তাড়নায়, এখানে ওখানে, নিরুদ্দিষ্ট, বেশিরভাগ সময়ে একটা বাইকে এবং কখনো কখনো অন্য কোনো স্থলযানে, হেঁটে নয়, একটা-কোনো জনবাহনে, যেমন দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাসে, যেতে যেতে একটা ধারাবিবরণীর মতো সত্যদর্শন তথা দৃশ্যধারণ, ক্যামেরার পরিবর্তে কাব্যকলায়, আর তার সকাল হয়, দুপুর গড়ায়, ব্যাপ্ত অপরাহ্ন সন্ধ্যার খাতায় নাম লেখায়। আশ্চর্য সন্ধ্যা ঘনায়। পাতায় পাতায়। পঙক্তিতে পঙক্তিতে। কেবলই সন্ধ্যা হয়। নিচের প্যারায় কিছু সন্ধ্যার উদ্ধৃতি পিকআপ করব। উদাহরণ সমুচ্চয়।
* ‘সন্ধ্যা নামতেছে ছাইয়ের মতো / নাকি সন্ধ্যার আগে সবকিছু ছাই?’
* ‘এই যে সন্ধ্যা নাইমা আসতেছে ধীরে / … / এই ফুরাইতে-থাকা সন্ধ্যাবেলায় / চিমনিজ্বলা বিষণ্ণ আকাশ / … / হর্ন বাজাইয়া উধাও হইতেছে / মেট্রোপুলিশের টহল জিপটা / কারে যে মারতে যাইতেছে সে?’
* ‘আর সব ক্লান্ত দিনের শেষে / আমি ডাকবো তারে / সন্ধ্যায় — ঝিঁঝির ডাকের ভিতর / ট্রাকের হেডলাইট যতদূরে যায়।’
* ‘আজ এই সন্ধ্যাবেলা, আমি ফের তোমারে নিয়া ভাবতেছি। / … / এই খারাপ সন্ধ্যায় তুমি খালি আসতেছ মনে।’
* ‘তোমার সব সন্ধ্যা / আস্তে আস্তে জমতেছে এই টিলার কিনারে; / … / এই টিলার কিনারে / তোমার সব সন্ধ্যা জমতেছে বিলাপের মতো / … / তোমার সব আকার / আস্তে আস্তে আবছা হইতেছে এই টিলার কিনারে;’
* ‘শেষ সন্ধ্যায় অন্য পাড়ে আবছামতো কার মুখ দেখা যায়?’
* ‘রাত। স্বচ্ছ অন্ধকার তার / যেন হোমারের চোখ’
* ‘এই শুক্লপক্ষ রাতে / আস্তে আস্তে আবছা হইয়া যাইতেছ তুমি / যেন ব্লার এক স্মৃতি / ঘটনা নাই, দৃশ্য নাই, নাই মঞ্চের শোর’
ওইটুকু উৎকলন যথেষ্ট। বইয়ের স্টার্ট থেকে প্রায় পরপর আটটা কবিতায় এই ইভনিঙস গোচরে এল। মোটমাট একান্ন কবিতায় বিন্যাস্ত বইয়ের বাকি পেইজগুলায় বাংলাদেশের শহরতলির সন্ধ্যার আরও অনেক ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া যায়। সেই সন্ধ্যাগুলি সেই শহরতলি ডিস্টোপিয়্যান নয়, কিন্তু কেমন যেন ডিস্টোপিয়্যান-ডিস্টোপিয়্যান ফিল হয়। গা ছমছম করলেও হরর নয়। সাইকেডেলিক। ব্লুজ। বইটা আদ্যোপান্ত সন্ধ্যাঘন। বইয়ের নায়ক/কবি সন্ধ্যাচ্ছন্ন। ঘোরগ্রস্ত সন্ধ্যামগ্ন শ্রমণের স্যলিলকির মতো বইয়ের কবিতারা। সান্দ্র। সন্ধ্যাসান্দ্র। ফলে একঘেয়ে লাগে না। সান্ধ্য শব্দাবলি সবসময় আর্থ-সম্ভাবনাবাহী। ডিস্টিঙ্ক্ট। ‘আহ! কী করুণ এই সন্ধ্যার আঘাত… / ফুরাইয়া আসতেছে ধার-করা সময় আমার।’
সন্ধ্যা হয়। আর বৃষ্টি হয়। সারারাস্তায় বৃষ্টি। টিলায়টালায়, শিখরে শেকড়ে, টিগার্ডেনের গাছের গায়। হাইওয়ে এবং তার শাখাপ্রশাখায়। শীর্ণকায়া গাঙের উপর। বৃষ্টি দিনমান অথৈ অঝোর। দৃশ্যত কয়েক মাস প্রকৃত প্রস্তাবে রাউন্ড দ্য ইয়ার সারাবছর। বৃষ্টিতে ভেজে ম্যামথ ও মোমের পাখিটি, ভেজে রাজপথ, বনের ধারের খালের সাঁকো, অতিপ্রাকৃত শহর। অতিশয় আলোকবর্ষ জুড়ে যেন ননস্টপ রিলেন্টলেসলি বৃষ্টিবিধৃত সময়। সাধিত হয়। এইসব। বহুবিধ ভ্রষ্টাচার ধ্বংসাচার সত্ত্বেও কদমফুলের উদ্ভব। হয়। ‘শেষ সন্ধ্যায় অন্য পাড়ে আবছামতো কার মুখ দেখা যায়?’ কার? মোমপাখিটার? ‘ম্যামথ ও মোমপাখি’ ঘিরে, এর পঙক্তিগুলি রিড করার সময়, এমন আরও অনেককিছু সংঘটিত হয় যার সারসংক্ষেপে এই নিবন্ধ। প্রধানত গদ্যস্পন্দ। কবিতাগুলির ছন্দ। গুনলে দেখা যেত পয়ার, প্রধানত অক্ষরবৃত্ত, গুনতে কে যায় আর। গোনাগুনির কাজে ব্যাপৃত রউক কোনো তরুণ ইউনিমাশ্টার। কবিতাপাঠকের তাতে কি-বা আসে যায়। চাতক তার জিব্বা বাড়ায়া রাখে এককাৎরি বৃষ্টির আশায়।

এবং বৃষ্টি হয়। নানান সময়। যাত্রাপথেই, গৃহলগ্ন গুবাকতরুবীথির বাতায়নে নয়। পাতায় পাতায় আবহমান বৃষ্টিবিনিশ্চয়। ঝাপসাপ্রায় রিয়ারভিয়্যু মিরর। ততোধিক সমাচ্ছন্ন পরিপার্শ্ব চরাচর। গোটা মানবসঙ্গবহুল সংসার। অব্জেক্টস ইন দি মিরর আর ক্লৌজার দ্যান দে অ্যাপিয়ার। বৃষ্টি নির্বিরল ঝরে ঝরে যায়। ‘হাইওয়ে-বাসে বইসা একটা ডেড সিটির দিকে যাইতেছি / প্রাচীন মমির মতো বিষণ্ণ ভোরে। / বৃষ্টি পড়তেছে। ঘন বৃষ্টি। ঘনঘোর বৃষ্টি। / মুসল্লিরা ফিইরা গেছেন ঘরে। / বাসের ফ্রন্টগ্লাস ধইরা এখনো ঝুলতেছে কিছু অন্ধকার। / পেন্ডুলামের মতো দুলছে ওয়াইপার, হাবিল আর কাবিল। / বৃষ্টি যেন বখতিয়ারের ঘোড়া। / … / রেইনম্যান রেইনম্যান, আই লস্ট মাই হোম।’ অথবা আরও, অন্যত্র, ‘তখন বৃষ্টি হইতেছিল। / ভাবতেছিলাম, ভিজতে ভিজতে তোমার কাছে যাবো। / এক হাতে কুশিয়ারা নিবো, অন্য হাত খালি। / … / বৃষ্টি ঝরতেছিল। / মনে হইলো, একটু কাঁদবো নাকি এক উদাস টিলার মতো? / বৃষ্টি শেষ হইলো / আমার সকল শোক তোমার স্বগতোক্তির মুখোমুখি…’ কিংবা, তারপরের কবিতাটাই, ‘অনেকদিন পর তোমার লগে কথা হইলো / বৃষ্টির ভিতর — / যেন নিখোঁজ এক স্কুবাডাইভার / আচমকা ভাইসা উঠছে তার প্রেমিকার মনে।’ এমন করে একের পর এক বৃষ্টিনামা। বৃষ্টিঝরা। বৃষ্টিধরা। ‘মাগরিবের সন্ধ্যা, বৃষ্টি শুরু হইলো। / তওবা আর শোকরানার ভিতর / মোনাজাত শেষ করলেন বিনীত মওলানা। / … / আমার তখন তোমার কথা মনে হইলো খুব। / তুমি কি ঝড়ের আভাস? তোমারে পাত্তা না দিয়া / মাগরিবের বৃষ্টিতে ভিজতে পারবো না আমি?’ কিংবা আরেকটা কবিতা, ‘মরা নক্ষত্র’। ‘জুনের বৃষ্টি। হঠাৎ এক মরা নক্ষত্রের খবর পাওয়া গেল। / তোমার শোক ও সন্তাপের পাশে আমি যেন মরা নক্ষত্রের ছাই / … / জুনের বৃষ্টিতে ভিজতেছে তোমার ঘর। আমার মনও কি? / যেন ধূসর পাণ্ডুলিপি, হাহাকার আর বিলাপের ব্যবচ্ছেদ / … / তোমার মুখে ঝরতেছে মরা নক্ষত্রের সংবৃত ইতিহাস।’ জুনের বৃষ্টি আরেকটা কবিতায় পাওয়া যায়, ‘সারাদিন জুনের বৃষ্টি। সারাদিন আমার মনে তোমার স্বগতোক্তি। / … / ঝরতেছে ক্রসফায়ারের গল্প, আত্মগুমের অপয়া নাটক / বৃষ্টির বিষণ্ণতায় আমার দরজায় সকাতর ঝরতেছ তুমি।’ বৃষ্টির প্রসঙ্গ ও অনুষঙ্গ, সন্ধ্যার মতো, পরিব্যাপ্ত পুরো বইটায়। ‘বৃষ্টি ২’, ‘বৃষ্টি ৩’, ‘বৃষ্টিতে দেড়কিলো রাস্তা’, ‘বৃষ্টিবিষ’ প্রভৃতি শিরোনামে আছে এমন আরও আরও কবিতা।
ফ্যাসিন্যাশন বলব? অর, অবসেশন? নো, অবসেশন বেশি হার্শ হয়া যায়। রিপিটেশন তো অবশ্যই। ইমেইজের, ইমেইজারির, প্রসঙ্গের, অনুষঙ্গের পুনরাবৃত্তি। রিপিটেডলি রিপিটেশন ঘটলে সেইটা নার্ভের উপর চাপ ফালায়। বিরক্ত করে। একটাআধটা আশয়বিষয়ের প্রতি কবির অতিশয় টান থাকতেই পারে, সেইটা গ্রাহ্য। তবে একটু রুথলেসলি জিনিশটা হ্যান্ডল করতে না পারলে শেষমেশ কবিতা ব্যাহত হয়। আবার, এইসব বিবেচনা পাঠকভেদে ভ্যারি করে। একেক পাঠবৈঠকে একেক পাঠক এই পুনরাবৃত্তিপ্রবণতারও পজিটিভ প্রেক্ষিত খুঁড়ে এনে দেখাতে পারে। এইগুলা পার্ট অফ দ্য কবিতাই।
৪
‘বৃষ্টি যেন বখতিয়ারের ঘোড়া’, বা, ‘যেন ধূসর পাণ্ডুলিপি, হাহাকার আর বিলাপের ব্যবচ্ছেদ’ শুনে যেটুকু পূর্বস্মৃতি ইগ্নাইট করে, এই কবি সেই স্মৃতিরেখা না মাড়িয়ে অ্যাবাউট টার্ন একঝটকায় পাঠককে/প্যাসেঞ্জারকে একটা নাইস্মৃতি নিরালায় নিয়া যান। পথ অতি বিপদসঙ্কুল। পরিচিত স্মৃতির রেফারেন্স ধরে এগোলে এক কিসিমের কবিতা হয়, পাঠক যা ক্যাচ করতে পারে ইজিলি, আর পরিচিত নয় এমন স্মৃতির লগে পাল্লা দিয়া পাঠক পিছায়া যায়। আগাতে চায় না আর। হাসান শাহরিয়ার তার কবিতার উপাদান প্রচলিত উৎস থেকে নিলে যেমন কবিতা হতে পারত, যা চারপাশে আকসার হচ্ছে মেইনস্ট্রিম বাংলা কবিতায়, তা তিনি ডিনাই করেই লিখতে লেগেছেন, কবিতার উপাদান কালেক্ট করেন অতএব অপেক্ষাকৃত নতুনতর উৎস থেকে। এর ফলে তার কবিতা আর লিনিয়ার থাকে না। আর, যা লিনিয়ার নয় তার আর্থ-সম্প্রসারণের সম্ভাবনা বেশি থাকে, এমনকি ননলিনিয়ার হলেও তা ব্যঞ্জনাগত বৈভববাহী হয়। একরৈখিক প্রেম-অপ্রেম আস্থা-অনাস্থা বাইনারি থেকে বেরোতে পারাটা যদি কবিতা হয়ে ওঠার প্রাথমিক ও প্রধান শর্ত গণ্য হয়, হাসান শাহরিয়ারের কবিতা তাইলে কেমন হয়েছে টের পাওয়া যাবে।
একলাইনে এইবার বলা যাক হাসানের কবিতার উপাদান সংগ্রহের উৎসস্থলগুলি নিয়া। আই ফাউন্ড, কমন সোর্স নয় একটাও, মোটামুটি তিনটা জায়গা থেকে হাসান তার কবিতার উপাদান কালেক্ট করেন। এক হচ্ছে টেক্সটবেইজড থিয়েটার বা নাটক, স্ক্রিনবেইজড সিনেমা, আর হচ্ছে গান। মূলত ইংরেজি ভাষায় যেই উৎসস্থলগুলা আর্বান পড়ুয়া মানুষের হাতের নাগালের আওতায়, সেইগুলাই কবি এক্সপ্লোর অ্যান্ড এক্সপ্লোয়েট করেন দরাজভাবে। এলিজাবেথান ড্রামা, কান্ট্রিমিউজিক, সাইফাই ও অন্যান্য জন্রার ম্যুভি ইত্যাদি সোর্সেস থেকে এই কবির কবিতার উপাদানগুলি গৃহীত। ফলে, এই কবিতাদের শরীর অনেকটাই ওয়েস্টার্ন সিনেমার ফোর্সের মতো। গতিতীক্ষ্ণ। কোথাও থমকানো নাই। স্পিডি। রিদম গতিময়। তিষ্ঠানো নাই। মন্থরতা স্থবিরতা নাই। নীরবতা আছে। ক্যাওসের কেন্দ্রের নীরবতা। আগুনকুণ্ডের কেন্দ্রের নির্বাণ।
পুরো বইয়ের মধ্যে একটা ম্যামথের উপস্থিতি ফিল করা যায়, আবছা আবছা, যা পাতায় পাতায় না-হলেও কোথাও কোথাও স্পষ্ট অবয়বে হাজির হয়। বিলুপ্তিবিবর থেকে ম্যামথের এই কামব্যাক ‘অবশ’ হলেও, বশ নয় এমন এবং সংবেদনলুপ্ত অসাড় দুনো অর্থেই, কবি দ্বিচক্রী ইঞ্জিনঅক্টেনচালিত মটর্বাইকের মোটিফটা হাজির করেন; কন্ট্র্যাস্ট; মটর্বাইক স্থবির মন্থর কোনো বস্তু নয়, তার উল্টো, তীব্র গতিময় সিভিলাইজেশন। কল্পনাহাতির পরিবর্তে জ্যান্ত গর্জনবিশিষ্ট সভ্যতাবাহনটিকে দেখা যায়, হেথাহোথা নানা জায়গায়, সিটিস্ট্রিটে, ডাউনটাউনে, টেডিয়াস আর্গ্যুমেন্টের মতো উচ্চাবচ অঞ্চল চিরে চিরে এগিয়ে যেতে। দিগ্বিদিকশূন্য? নো। তুমিটির দিকে। এক অনির্ণেয় ডেফিনিটের দিকে। এক দুর্মর দ্ব্যর্থহীনতার দিকে। যেমন, ‘বৃষ্টি ঝরতেছে, ভিজতেছে একটা কালো মোটরবাইক / সস্তা স্কেচআর্টিস্ট, ভিড়ের ভিতর নিঃসঙ্গ আততায়ী / দূর থেইকা তুমি কার কার সান্ত্বনা হইতে পারো? / আমার মুখোমুখি বইসা এর একটা মীমাংসা করবা নাকি? / বৃষ্টির ভিতর আস্তে আস্তে রাস্তা করতেছি তোমার ঘরের দিকে / আর হারাইয়া যাইতেছি সময়ের বাইরে, / শূন্যতার বাইরে, স্পেসের বাইরে।’ এর থেকে একটু দূরে গেলে ম্যামথের আরও স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায় : ‘শীতের ভিতর মরার মতো দিতেছে ঘুম এক অবশ ম্যামথ / যেন অতর্কিত উত্থানের আগে বিস্মৃতির ম্যাট্রিক্স / যেন হারাইয়া যাইতেছে প্রমথিত স্বপ্নের বিষণ্ণ ঘর। / ঘরের বাইরে মলিন বকুল ফুল, / অবধারিত সন্ধ্যায় শুধু ট্রাকের হেডলাইট। / কে জানে — কতদূর হাতে নিয়া ওই হাইওয়ে থাকতেছে জেগে?’ এইমাত্র কোটেড কবিতাটা, ‘অবশ ম্যামথ’ যার নাম, ‘ম্যামথ ও মোমপাখি’-র অন্তিম কবিতা। আর মোমপাখি? তার সনে দেখা হয় একেবারেই সূচনায়। তার সনে দেখা হয় বারেবারে, পঙক্তিতে পঙক্তিতে, পাতায় পাতায়।
৫
ভাষা নিয়া আলাদা আর কিছু বলা লাগবে না আশা করি। নিবন্ধের পূর্বতন প্যারাগ্র্যাফগুলিতে যা-কিছু বলা, তা এই কাব্যের ভাষা বা কবির বাকবিভূতি ঘিরেই। বিশেষভাবে স্ট্রেস দিয়া যা বলা যায় তা হচ্ছে, এই কাব্যের ভাষা বাংলা হলেও বঙ্গজ কবিতার অভ্যস্ত ঐতিহ্যের শবানুগামী নন এই কবি। ইঙ্গিতগুলি দিয়ে এসেছি প্রোক্ত পর্বচতুষ্টয়ে। এর বেশি নির্মোক উন্মোচন দরকার আছে বলে মনে করি না। তারপরও, বলতে বললে, কবিতার ভাষায় বাকভঙ্গিমায় আবহমানের ট্র্যাডিশন ফলো করবার স্যাঁতস্যাঁতে রাস্তা থেকে এই কবি কনশাসলি নিজের রাস্তা আলগ করে নিয়েছেন। ফলে, এই কিসিমের কবিতা পাঠকালে ফ্রেশনেসের ঘ্রাণ ও আভা পাওয়া যায় আয়াস ছাড়াই। বিভিন্ন লঘুগুরু অমুকের মুখ তমুকের গোঁফ দেখার প্যারা নাই কবিতাগুলার গায়। পাঠক নয়া আওয়াজ শোনার আশায় কান পেতে রাখে, এক্সট্রা কেয়ার নেয়, এই ধরনের অপেক্ষাকৃত সম্প্রতিনির্মিত কবিতাভাষা পাঠের সময়। এইটা অনেক বড় একটা গ্রেইস কবিতার জন্য ও কবির জন্যও। অনেক বড় একটা চার্ম।
কবিতাগুলি ইন্টার্টোয়াইন্ড, পঠনোপকরণ ও দেখনোপকরণ দিয়া আষ্টেপৃষ্ঠে রেফ্রেন্সড; যদিও রেফ্রেন্সগুলার সোর্স কবিতারই ন্যারেটিভে সেঁটে রাখা আছে এবং তা কাব্যশর্ত ক্ষুণ্ণ না করেই। কিছু খোলাসা বলি। ধরা যাক, একটা কবিতা ‘দালিলা’, বাইবেবেলের সেই গল্প ও জন মিল্টনের ‘স্যামসন অ্যান্ড অ্যাগোনিস্টেস’ ট্র্যাজেডিনাটকের সঙ্গে পরিচয় না থাকলে এই কবিতার সম্যক উদ্ঘাটন হয় কি না তা স্যামসনের সঙ্গে ডেলায়লার প্রণয় ও পরিণাম যারা না-জেনেও কবিতাটি পড়বেন তারা জানাতে পারবেন। কবি এখানে সেই এপিক অ্যালিগোরিটি ইউজ করে সেল্ফরিফ্লেকশন ঘটাচ্ছেন। শুরুতে এপিগ্র্যাফিক কোটেশনটা থাকায় কবিতায় প্রবেশ সুগম হয়। তেমনি ‘দ্য স্প্যানিশ ট্র্যাজেডি’, সিক্সটিন সেঞ্চুরির নাট্যকার টমাস কাইডের সেই নাটকটার সঙ্গে জড়িত। প্রক্রিয়াটি কীভাবে সাধিত হয়, একটা বাংলা কবিতায় এলিজাবেথান ড্রামার প্লট মার্জ করেন কবি কীভাবে, এইটা হাসান শাহরিয়ারের একটা গদ্য পড়ে টের পাওয়া যায়, এই কবিতা নিয়াই সেই গদ্যটা, গানপারে আছে, ‘স্বরচিত কবিতার অন্তর্গত অনুপ্রেরণা’ সেই গদ্যের নাম। অথবা, প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় লিঙ্ক করে রাখি আরেকটা গদ্য, ‘স্বরচিত কবিতা আর তার গানপ্রতিবেশ : প্রচ্ছন্ন অনুপ্রেরণার গল্প’, কৌতূহলীরা পাঠ করতে পারব। বইয়ের কবিতায় পাদটীকা না-রেখে এই কবি রিডারের উপর আস্থা রেখেছেন। কবিতাগুলা দাবি করে হার্মিনিউটিক্স লেভেলের পাঠ।

কবিতাগুলি ভিজুয়্যালি কী রকম দেখতে, এই কবির বেশিরভাগ কবিতাই, একটা দেখাই —
কাঠের ঘর, ঘুমের ঘর
তোমারে নিয়া আগাইতেছে
বৃষ্টির ভিতর।
পেন্সিল খসে খসে আঁকিয়ের ক্যানভাসে
ভিজা রাস্তা যাইতেছে কবরের কাছে।
কাঠের ঘর, ঘুমের ঘর
তোমারে নিয়া আগাইতেছে
আমার ভিতর।
পরিমিত। স্বল্পশব্দ। অশব্দপ্রায়। ক্রিয়াপদগুলি বিঘ্ন ঘটায় কানে। এত বেশি ক্রিয়াপদ গোটা বইটায়। আর অতি অল্প কড়েগোনা চাইরপাঁচটা মানুষের-মুখে-না-থাকা আভিধানিক শব্দ, ‘অবহার’ ‘অমাময়ী’ ‘প্রমথিত’ প্রভৃতি, কবির ভাষিক প্রবণতার সঙ্গে একেবারেই যায় না যা। আর কী বলব।
বইটা আদরণীয়। মনকাড়া। বাংলাদেশের নয়া বাংলা কবিতা যারা হাতড়ে বেড়ান, এই বইয়ের খোঁজ তারা জানবেন।
জাহেদ আহমদ
ব্যানারে ব্যবহৃত কবিপ্রতিকৃতির চিত্রী আকসার হোসেন। অন্যান্য ছবিকর্ম সোশ্যালমিডিয়া মারফতে অ্যাক্সেস করা। —গানপার
হাসান শাহরিয়ার রচনারাশি
কবিতায় হাসান শাহরিয়ার
- দ্য পোয়েট হু রৌট দ্য রৌড অ্যান্ড দ্য রৌভার - December 7, 2025
- নগরমুসাফিরির নবতরঙ্গ - November 24, 2025
- সঞ্জীব ও সিডর - November 22, 2025

COMMENTS