হিরো || রাহাত শাহরিয়ার

হিরো || রাহাত শাহরিয়ার

হিরোরা বাস্তব বা মিথ, দুটোই হতে পারেন। এরা আমাদের জীবনের অংশ। মানি আর না মানি, বুঝি আর না বুঝি, আড়াল থেকে হিরো বা আইডলরা আমাদের জীবনে অনেক প্রভাব ফেলেন। বুঝ হবার পর থেকেই মানুষ কাউকে না কাউকে, অনেক সময় একসাথে একাধিক হিরোদের নিজের জীবনে সুযোগ দেয়। একটা ফ্যান্টাসি হলেও আইডল ফলো করার মধ্যে ব্যক্তিগত আনন্দ আছে। একেবারে দিকহারা মনে হয় না। একটা সুইট ডিস্ট্রাকশান হোয়াইল ড্রিমিং! মজার বিষয় হলো বয়স বাড়ার সাথে সাথে আইডল বদলে যায়। পেছন ফিরে দেখলে একটু খটকা লাগে। কী সব ভেবেছি আমরা!

স্কুলে নিয়ে যেতেন যে-রিকশাচালক, আমার প্রথম আদর্শ। যখন যেখানে খুশি যাওয়া যাবে। ফুটবল ওয়ার্ল্ডকাপ ক্লিন্সম্যানকে আমার হিরো বানিয়ে দিলো। স্ট্রাইকার হতে হবে বেয়ারন মিউনিখে। বলে দুটো লাথি না দিতেই ইমরান খান। এভাবে আমিও বাংলাদেশকে জিতিয়ে ছাড়ব। একটা লম্বা সময় গিয়েছে স্পোর্টসহিরোদের নিয়ে। খিলাড়ি হতে পারব না এটা ভাবতেই পারিনি কখনো। বল ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমি ব্যাট হাতে নিলাম। রাহুল দ্রাবিড় হতেই হবে!

আসলে যখন আমাদের যে-প্যাশান, তখন সে-অনুযায়ী আমরা নিজেদের হিরো বেছে নেই। খেলাধুলার ঝাটকা কেটে গেলে সেবা প্রকাশনীর গোয়েন্দা হতে মন চাইল। হিরোর অভাব ছিল না। এরপর বিপ্লবী হতে মন চাইল। চে, চে করে নিজেই নিজের মাথা নষ্ট। সংসারের সবকিছু বাদ দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে যেতে মন চায়। জীবন কাটালে এভাবেই! পড়াশোনা শেষ হতেই আবার বাস্তবে। এবার হিরো খোঁজা আশেপাশে। কারা কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল, আর আমি এখনো পারছি না!

এখন এই বয়সে কর্মক্ষেত্র হিরো ঠিক করে দিচ্ছে। জীবনে প্ল্যানের কোনো শেষ নেই। আর প্ল্যানই আমাদের হিরো ঠিক করে দেয়। আবার পরিবর্তন করে দেয়। বেশিরভাগই সফল লোকজন। তবে যে-ই যখন আমাদের হিরো থাকে আমাদের জীবনে ভালো বা খারাপ কিছু-একটা যোগ করে দিয়ে যায়।

হিরোদের মতো হতেই হবে, এটা ধরে নিয়ে আমরা কিন্তু একেকবার অনেক দূর এগিয়ে যাই। পরে সেটা থেকে ফিরে এলেও জীবনের কোনো না কোনো একটা স্টেজে সেই ইফোর্টটা শাপে বর হয়।


রাহাত শাহরিয়ার রচনারাশি

রাহাত শাহরিয়ার

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you