ভালোবাসাবাসি || পীযূষ কুরী

ভালোবাসাবাসি || পীযূষ কুরী

একটা সময় ভালোবাসাটা বা ভালোলাগাটা বুঝি। যদিও মন দেয়া-নেয়ার বিষয়টা একেবারেই অচেনা আমার কাছে তখন। বাংলা বা হিন্দি সিনেমা যে আমাদের জীবনে কত প্রভাব ফেলেছে, তা অকপটে স্বীকার করা ছাড়া উপায় নেই।

নায়ক আর নায়িকার প্রেম তো আমাদের অনেককিছু শিখিয়েছে। সিনেমার সুন্দর আর আধুনিক নায়কদের দেখে একটু হীনম্মন্যতায় ভুগি কোনো-একটা সময়। আয়নায় নিজেকে দেখি আর ভাবনায় ডুবি … কালো ছেলে কি করে প্রেম নিবেদন করবে? আমার এই ভাবনা যদিও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়কার।

উত্তরণের পথ আসে মিঠুন চক্রবর্তীর ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ ছবি থেকে। হিন্দিভাষা বোঝার কারণে লাইনটা মনে ধরে আর আত্মবিশ্বাস জন্মায় সম্ভাবনার। এখনো মাঝে মাঝে গুনগুন করি —

গোরো-কি না কালে-কি
দুনিয়া হে দিলওয়ালে-কি

তারপর থেকে শুরু হলো ভালোলাগার বীজবপন। ভালোলাগার জমানো ভালোবাসার অব্যক্ত কথন বলতে গিয়ে অনেক কথাই শুনতে হয়, আমিও এর বাইরে ছিলাম না। সুন্দরী নায়িকা পটাতে গেলে নায়িকাকে ডায়ালগ বলতে হয়। হোক সে আজ বা কালের সিনেমার।

মেহমুদ সাহেবের মতো আমার কণ্ঠেও বাজে বিখ্যাত গানের কলি —

হাম কালে হে তো কেয়া হুয়া দিলবালে হে,
হাম তেরে তেরে তেরে চাহনেবালে হে।।

তারপরের অংশটুকু বলতে হয় না, বুঝে নিতে হয়। ভালোবাসার পর্ব শুরু। আর নানা চিঠিপত্র, এসএমএস আর ফোনকল। দেখা-হওয়াটা যেন এক বিশাল প্রাপ্তি, আর প্রেমে পড়লে পৃথিবীর সবকিছুই সুন্দর লাগে। ষোড়শী কন্যার প্রেমে-পড়া কিশোরের কণ্ঠে ভাসে —

রেশমি চুড়ি হাতে এলোমেলো চুল
স্কুলপলাতক মেয়ে করেছে ব্যাকুল।

ব্যাকুলতা থাকুক ভালোবাসার প্রতিটি ক্ষণে, যুগলের হৃদয়ের কোণায় কোণায়। ভালোবাসার জন্য কোনো বিশেষ দিন লাগে না, তবে ভালোবাসার মানুষটাকে বলতে হয় প্রতিদিন একবার। ভালোবাসার কথা যত বলা যায়, যতবার বলা যায় — পোক্ত হয় গাঁথুনি।

… …

COMMENTS

error: