প্রফুল্ল রায় আজ চলে গেলেন। বছর দুয়েক আগে ‘যখন যা মনে পড়ে’ নামে উনার শৈশবের স্মৃতিকথা বিষয়ক বইটা পড়ি। লেখার যে এমন সারল্য হইতে পারে বইটা না-পড়লে জানাই হতো না। লিখেছেন বাংলাদেশের বিক্রমপুরে কাটানো উনার শৈশব নিয়ে।
কিন্তু প্রথাগত স্মৃতিকথার মতো লেখেননি। হয়তো অনেকদিন পরে লেখার কারণে বিস্মৃত হয়েছে অনেক কিছু। মূলত লিখেছেন আশেপাশের মানুষের গল্প। সবচেয়ে মর্মস্পর্শী অধ্যায় হচ্ছে মকবুল মামাকে নিয়ে। যিনি পেশায় গ্রাম্য চৌকিদার ছিলেন। গভীর মমতায় শৈশবের মকবুল মামার গল্প রায় লিপিবদ্ধ করেছেন এই বইয়ে। দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রাক্কালে মকবুল মামার সাথে লেখকের বিচ্ছেদের বর্ণনা পড়ে চোখ আর্দ্র হয়ে আসে।
আর আছেন ত্রিলোচন কবিরাজ। যিনি কিছুদিন পর-পর দেশভ্রমণে বের হতেন আর ফিরে এসে রীতিমতো আসর জমিয়ে সেই নতুন দেশের গল্প শোনাতেন সবাইকে। আছে গ্রামের বিশাল একটা লাইব্রেরির গল্প যার লাইব্রেরিয়ান আবার বিপ্লবী যোগেশ গুহ। সবচেয়ে প্রবলভাবে যেটা আছে তা হলো হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির গল্প। একে অপরের দুঃখ-সুখ ভাগ করে নেয়ার গল্প।
পড়তে পড়তে মনে হয় অন্য কোনো গ্রহের গল্প। এত সহজ সরল মানুষেরা আজকের পৃথিবীতে আর এক্সিস্ট করেন না। সেইসব মানুষেরা হারিয়ে গেছেন কালের গহ্বরে। মনখারাপ হয়, হৃদয় আর্দ্র হয়ে ওঠে। মনে হয় কী হারালাম, কী হারালাম!
ওপারে ভালো থাকুন ম্যাজিশিয়ান।
২০ জুন ২০২৫
প্রণবেশ দাশ রচনারাশি
গানপারে ট্রিবিউট রচনা
- Memories with Boipatra and HannanBhai || Pranabesh Das - November 22, 2025
- চলে গেলেন প্রফুল্ল রায় || প্রণবেশ দাশ - June 20, 2025
- খোন্দকারের রচনাসংগ্রহ || প্রণবেশ দাশ - June 16, 2024

COMMENTS