রিডিং অ্যালাউড, রিডিং সাইলেন্ট || আহমদ মিনহাজ

রিডিং অ্যালাউড, রিডিং সাইলেন্ট || আহমদ মিনহাজ

একোলজি’ পাঠের নিট মুনাফা হচ্ছে, গেল ক’দিন ধরে অবিরত এই প্রশ্নটি করা গেছে নিজেকে :— লিখতে গিয়ে কোথাও জাহিরপনার ফাঁদে আমি স্বয়ং ধরা খাচ্ছি কি না? ‘একোলজি’ পড়ার পর থেকে মনের মধ্যে এই খোঁচা টের পাচ্ছি, খুব তো জাঁক করে একো সম্পর্কে দু’চার ছত্র মন্তব্য হেঁকে দিয়েছি ‘গানপার’-এ। কিন্তু সেই মন্তব্যের সমর্থনে নিজের ব্যাখ্যাটি কোথায়? আমার উচিত ছিল একো ‘বহুল অনূদিত ও পঠিত নন’ এই মার্কিংয়ের পক্ষে বিস্তারিত যাওয়ার। রিডিং মানে তো মন্তব্য টুকে দায় মিটানোর বিষয় নয়। কাউকে রিড করা মানে নিজের ভাবনার সৃজনশীলতায় তাকে নতুন করে আবিষ্কার ও বি-নির্মাণ। একো-র ক্ষেত্রে সে-কাজটি তো করা হয়নি লেখায়। এইসব ভেবে মনে গ্লানি হচ্ছিল খুব। সেই গ্লানি এখনও আমাকে ভোগাচ্ছে এবং বুঝিয়ে দিচ্ছে লেখার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হওয়া উচিত। এই লার্নিংটুকু একোলজির সূত্রে পাওয়া গেল বলে ধন্যবাদ।

এ-পর্যন্ত যখন যা পড়েছি এবং যা পড়তে গিয়ে শেষতক পড়া হয়ে ওঠেনি তার সবখানি নিজের বোধের অনুকূলে গড়েপিটে নেওয়ার চেষ্টায় সজ্ঞানে কখনও ফাঁকি ছিল না এটুকু বলতে পারি। তাহলে কেন একো-র ক্ষেত্রে আমি নিজেও ব্যর্থ হলাম অনুধাবনে যে, তাঁকে নিয়ে যা বলছি সেটা বিস্তারিত ব্যাখ্যা দাবি করছে। ‘একোলজি’ এদিক থেকে আমার কাজে দিয়েছে। না, আমি নিজে একো-কে আদ্যোপান্ত পড়িনি। এমন এক সময়ে আমরা আছি যখন কোনও লিখিয়েকে আদ্যোপান্ত পড়ে ওঠা সম্ভবপর নয়। দূর অতীতেও সেটা সম্ভব ছিল না। অবশ্য আপনি যদি সুসান সানটাগের মতো প্রতিদিন গড়ে সাত-আট ঘণ্টা করে পড়তে ও ভাবতে পারেন তাহলে হয়ত সম্ভব। সেই সুযোগ আমার মতো ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষের কপালে নেই। আর সুযোগ যদি থাকতও আমি তিন ঘণ্টার বেশি সময় পাঠে দিতাম বলে মনে হয় না। গোগ্রাসে পড়া যতটা গুরুতর, তারচেয়ে অধিক গুরুতর হল যা-পড়ছি সেটাকে নিজের কাণ্ডজ্ঞানের মধ্য দিয়ে মনে জারিত করা। 

এই দুর্দিনে থামলে চলবে না। ক্লান্ত হলেও চলবে না। ‘গানপার’-কে নিয়ে আরও অনেককিছু করা বাকি মনে করি। ‘গানপার’-এ অডিও-ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট (বক্তিমা, বাতচিত, বই ও কবিতা বিষয়ক পডকাস্ট, দুর্লভ গানের ক্লিপস এবং নানা বিষয়) ইত্যাদি কি সংযুক্ত করা যায়? বইরিভিয়্যু বিভাগে সেটি সংযুক্ত করা সম্ভব।

আরেকটি কথা, মিশরের গানের পাখি উম্মে কুলসুম (আরবিতে সম্ভবত উম্মে খুলতুম বা এরকম কিছু। আমি ঠিক নিশ্চিত নই), আমাদের মা-খালাদের যুগে বাংলাদেশ বেতারেও যাঁকে বাজতে শুনেছি, এখন ইন্টারনেটে সুলভ। তাঁকে নিয়ে কি লেখানো সম্ভব? আমার আগ্রহ আছে লেখার। তবে এখন নয়। অন্য কাজগুলো গুছিয়ে নিতে পারলে কোনও একদিন হয়ত লিখতেও পারি। সেই লেখার কনট্রাস্টে ভারতের লতা, পাকিস্তানের নূরজাহান এবং বাংলাদেশের রুনা-সাবিনাও প্রাসঙ্গিক হতে পারেন। এরা সকলে মিলে একটি ট্রেন্ড। এবং সেটার সাংগীতিক ও ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। একটু ভাববেন।


তাৎক্ষণিকামালা
আহমদ মিনহাজ রচনারাশি

COMMENTS

error: