শহীদুল জহির একুশে পদক পাইলেন৷
উপন্যাস নামক ফর্মটার প্রতি আগ্রহ; বা বলা যায় উপন্যাস ছাড়া আর যে-কোনো আর্টফর্মের প্রতি টোটালি আগ্রহ হারায়া ফেলার (কবিতা, পেইন্টিং ইত্যাদি) অন্যতম কারণ ছিল শহীদুল জহিরকে বাংলায় লেখা ঔপন্যাসিক হিশাবে আবিষ্কার করা৷
প্লাস সুনীল, সমরেশ, শীর্ষেন্দু তথা মেইনস্ট্রিম যাদেরকে কলকাতার লেখক হিশাবে বাংলাদেশে পড়া হয়, তাদের নন-এক্সপেরিমেন্টাল টিডিয়াস গদ্যস্টাইলের ফাঁপরে কখনো পড়া হয় নাই কারণ তার আগেই শহীদুল জহির, কাজল শাহনেওয়াজ, শাহাদুজ্জামান, মামুন হুসাইন ইত্যাদি (এবং আরও অনেকে৷ খুব বেশি না যদিও। দ্যা হোল ৮০স) পাঠক হিশাবে অনেকের কাছেই ধরা দিছিল — যারা ঠিক হার্ডকোর সাহিত্যপাড়ার মানুষ না, কিন্তু জীবন যাদের সাহিত্যপ্রাণ৷
আগ্রহের ঘাটতি পড়ছে জহিরের লেখার প্রতি বয়স বাড়ার সাথে সাথে৷ স্পেশালি জয়েস আর মার্কেজের এসেন্সের সাথে পরিচিত হওয়ার পর উনার প্রতি মুগ্ধতা কইমা গেছে গত দশ বছর আগেই৷ উনার গদ্য নিয়ে একটা আদিখ্যেতা তো ছিলই৷ খুব ইনফ্লুয়েনশাল লাগতো সেই বয়সে৷
কিন্তু তারপরেও তার পুরষ্কারের খবরটা ভালো লাগলো৷ অনেক৷ তার চারটা উপন্যাসের মধ্যে সম্ভবত সবচে আলোচিতটা (‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’) তার সবচে দুর্বল (এবং জাতীয়তাবাদী) উপন্যাস৷ ‘সে রাতে পূর্ণিমা ছিল’ সম্ভবত তার সবচে ‘শক্তিশালী’ লেখা৷
কিন্তু আমার প্রিয় ‘মুখের দিকে দেখি’৷
“ভূতের গলির চান মিয়া হয়তো বান্দরের দুধ খাওয়া পোলা” — উপন্যাসের প্রথম লাইন হিশাবে কোনো ভাষাতেই সম্ভবত ইউনিক (আমি অন্য কোনো ভাষা জানি না৷ তারপরেও মনে হইলো আর কী)।
অনেক ট্রিপি এক্সপেরিয়েন্স জহিরের গদ্যের সাথে প্রথমবারের এনকাউন্টারটা৷ সেটা মিস করি৷ একবার চিনা ফেললে ভালোলাগাটা ধইরা রাখাটা টাফ লাগে বেশিরভাগ জীব ও জিনিশের প্রতি৷
কাইয়ুম চৌধুরীর করা প্রচ্ছদটাও ভাল্লাগার৷
শফিউল জয় রচনারাশি
গানপারে শহীদুল জহির
- জহিরের গদ্যের সাথে প্রথমবারের এনকাউন্টারটা অনেক ট্রিপি এক্সপেরিয়েন্স || শফিউল জয় - February 18, 2025
- ইলিয়াস, খোয়াবনামার : পঁচিশেই, তিন নাম্বার বার || শফিউল জয় - February 12, 2025
- বিজ্ঞান ও সাহিত্য নিয়ে ইতালো ক্যালভিনো ১ || শফিউল জয় - July 21, 2020
COMMENTS