শিক্ষকতা || সুমন রহমান

শিক্ষকতা || সুমন রহমান

শিক্ষকতা কোনো ‘ব্রত’ নয়। একটা পেশা মাত্র। অধিকাংশ শিক্ষক এই পেশায় আসেন নিরুপায় হয়ে। ফলে একটা হাহাকারের মাঝ দিয়ে জীবন কাটে তাদের। সেই হাহাকারটিকে মিনিমাইজ করার জন্য তাদের কিছু ভ্যালু মুফতে দেয়া হয়। যাতে তারা বিদ্যমান ক্ষমতাকাঠামো এবং স্ট্যাটাস ক্যু-র প্রতি হুমকি না হন। ‘মহান পেশা’ কিংবা ‘ব্রত’ এ-রকমই কিছু ভ্যালু। এসব ভ্যালু তারা নিজেরা কতটা বোধ করেন বলা মুশকিল। ক্ষমতাকাঠামো তাদের এসব বোধ করতে অনুপ্রাণিত করে। যাতে তারা সাহেবের কুকুরের এক ঠ্যাঙের রুজি নিয়ে অভূক্ত জীবনখানা কাটায়ে দিতে পারেন।

শিক্ষকের সবচে বড় প্রিভিলেজ তার ক্লাশরুম। এইখানে তারে মনিটর করা খুব মুশকিল। তিনি নানা কিছু বলে-টলে ফেলতে পারেন, এবং সেগুলো তার শিক্ষার্থীদের মনে সারাজীবনের জন্য বসে যেতে পারে। এটাই শাসকের জন্য বিপদের জায়গা। সারাদেশে এই যে হাজার হাজার ক্লাশরুম আছে, সেখানে কত কী ঘটছে কে জানে!

ফলে, যে-কোনো নিপীড়ক রাষ্ট্র তার শিক্ষকসমাজকে ইডিওলজিক্যাল স্টেট অ্যাপারেটাস হিসেবেই দেখতে চায়। যে কি না সম্ভাব্য ডাকাত বা বিপ্লবী, তাকে পুলিশ বানিয়ে দিতে পারলে আর কি লাগে? কিন্তু এত রিসোর্স রাষ্ট্রের নাই। থাকলেও রিসোর্সের সুষম বণ্টন নাই। তাই সে বাদবাকিদের জন্য মুফতে ভ্যালু বিলায়, যাতে এই বঞ্চিত পেশাজীবীরা নিউট্রালাইজড থাকে। মূল্যবোধের চিপায় পইড়া।


সুমন রহমান রচনারাশি

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you