জিলিয়্যান অ্যান্ডার্সনের রহস্যোপন্যাস

জিলিয়্যান অ্যান্ডার্সনের রহস্যোপন্যাস

এক্স-ফাইলস্ টিভিসিরিজটার কথা ইয়াদ আছে? সেই-যে অ্যাইজেন্ট স্কালি আর অ্যাইজেন্ট মোল্ডারের প্রায়-প্লেটোনিক প্রেম ও অন্যান্য গ্রহান্তরের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম দৈত্যদানো? সম্ভবত গত শতকের পঁচানব্বই কি ছিয়ানব্বই থেকে মোটামুটি এই শতকের দুই কি তিন পর্যন্ত কন্টিনিয়্যু করেছে এই সিরিয়্যালটা। প্যারানর্ম্যাল অ্যাক্টিভিটি নিয়া কাহিনিরেখা আবর্তিত এক্স-ফাইলসের। ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল দুনিয়া জুড়েই।

সিরিজের প্রধান দুই ক্যারেক্টারে কাস্ট দুইজনের মধ্যে একজন জিলিয়্যান অ্যান্ডার্সন। পরেও উনার অনেক ম্যুভি এবং সিরিয়্যাল আমরা দেখে থাকব। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের ওয়েবসিরিজগুলায় জিলিয়্যানের অভিনয় দুর্ধর্ষ হচ্ছে। হ্যানিবল ইত্যাদি ইয়াদ রাখেন যদি। কিন্তু ডেইভিড ড্যুকোভনিকে সেই অর্থে পরে আর পাওয়া যায় নাই। কিছু ম্যুভিতে, এর মধ্যে এক্স-ফাইলস্ ম্যুভিপ্রোজেক্টগুলার কথা বলতে হয়, ডেইভিডরে দেখা গেলেও খুব-একটা যুৎ করতে পেরেছেন বলা টাফ।

তো, জিলিয়্যান একটা বই লিখেছেন। যৌথভাবে অবশ্য। উনার কোঅথার জেফ রবিন। বইটার নাম ‘অ্যা ভিশন অফ ফায়ার’। এইটাই জিলিয়্যানের ফার্স্ট নভেল। যদিও জেফ আগে থেকেই লেখক হিশেবে নিউইয়র্ক টাইমস ইত্যাদি সুবাদে পরিচিত।

উপন্যাসটা হাতে নিয়ে এক/দুই পাতা উল্টাইলেই এক্স-ফাইলসের রহস্য ঘনানো কৈশোরক দিনগুলা মেমোরিতে ফেরৎ আসবে একটু হলেও। উপন্যাসের কেন্দ্রে এক মা, তাই বলে আমাদের মায়ের ইমেইজ মনে রাখবেন না যেন। উনি শিশুসাইকোলোজিস্ট, নিজের পেশায় বিখ্যাত, জব নিয়া ব্যস্তসমস্ত সবসময়। সিঙ্গল মাম। পুত্রসন্তান আছে একটা। বাচ্চাই। সিঙ্গল মামের নাম কেইটলিন ও’হারা। বেচারি নিজের ডেইট নিয়াও খুব-একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারেন না, টানাপড়েনে থাকেন, কামুক বলা না গেলেও মোটামুটি কামসিদ্ধাই। নিজের শয্যাসঙ্গীও জবরদস্ত।

কেইটলিনের, এবং আমাদের উপন্যাসের, ক্রাইসিস জমাট বাঁধতে থাকে এক ইন্ডিয়ান অ্যাম্বাসেডরের মেয়ে যখন দুঃস্বপ্নঘোরে একটা আজিব ভাষায় কথা বলতে শুরু করে। ঘোরের প্রলাপ নয়, রীতিমতো বুঝদার ভাষা। তার খোয়াবের বিস্তারিত বুঝিয়ে বলতে সে সক্ষমও হয়।

এরপরে দেখা যায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন দেশে এমনই শিশুদের মধ্যে আজব আচরণ। সবগুলাই শিশুমনস্ত্বাত্ত্বিক কেইটলিনের ইনভেস্টিগেশনের আওতায় আসে। এর সঙ্গে জড়ায় ইন্ডিয়া-পাকিস্তান নিউক্লিয়ার শক্তি প্রদর্শন ছাড়াও দুনিয়ার অস্ত্রবণিক যুদ্ধবাণিজ্য প্রভৃতি মুসিবতগুলা। প্যাশেন্ট শিশুরা নয়, প্যাশেন্ট যে অ্যাডাল্টরাই এবং প্রকারান্তরে অসুস্থ মুমূর্ষু গোটা বসুন্ধরা, ক্রমশ প্রতিভাত হয়।

তাবৎ জিনিশই এসেছে রহস্য অবমুক্তকরণের ক্রমপরম্পরায়। কাজেই জিনিশটা খারাপ লাগবে না পড়তে, বিশেষত যারা রহস্যোপন্যাস পড়তে পছন্দ করেন। বইটা অ্যামাজনে (এবং অন্যত্রও) অর্ডার করা যায়।

লেখা : মিল্টন মৃধা

… …

COMMENTS