বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্স ২০২৫

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্স ২০২৫

শেয়ার করুন:

 

সিঙ্গাপুরের সাথে বাংলাদেশের হাইভোল্টেজ ম্যাচ শেষ হইলো। বাংলাদেশ দুই এক গোলে হাইরা গেল। ফুটবলের এই পুনর্জাগরণে এইরকম পরাজয় অনেকটা আশাভঙ্গের মতো। যদিও যে-কোনো ধরনের পুনর্জাগরণে সময়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমিকপ্রেমিকারা দেশের স্পোর্টসপার্সনদের ওই সময়টা দিবেন।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফুটবল দল এখন এমন একটা জায়গা — যেইটারে আপনে ক্যজমোপ্যলিটন এলাকা বলতে পারেন। জামাল ভুঁইয়া, হামজা চৌধুরী, তারিক কাজি, শোমিত সোম, ফাহমিদুল ইসলাম, শাহ কাজেম — বাংলাদেশী এইসব নাগরিক যারা মূলত বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে খেলা ফুটবলার। এর মধ্যে হামজা হইলেন সবচেয়ে হাইভোল্টেজ লিগ খেলা ইউরোপফেরত সুপারস্টার। আমি নিজেও খুবই নিবেদিতপ্রাণ এই ফুটবলারের একজন ফ্যান। যেইটা বলতে চাই, বাংলাদেশের ফুটবলে এই পুনর্জাগরণের সূচনা কিন্তু ডোমিস্টিক ফুটবল লিগের মানোন্নয়নের ভিতর দিয়া হয় নাই। মানে আপনের ভিতরে অনেক কাজ বাকি। হামজা, শোমিতদের নিবেদনে ডোমিস্টিক ফুটবলের স্ট্র্যাংথ একটুও বাড়বে না। বরং অভ্যন্তরীন ফুটবল যদি ধীরে ধীরে শক্তিশালী না করা যায়, তাইলে ওরা এখন যেইভাবে আসতেছে, আগামীতে সেইভাবে আসার সাহস পাবে না।

ডোমিস্টিক লিগ ভালো হইলে প্লেয়াররা বাইরে এমনিতেই বড় ক্লাবে খেলার সুযোগ পাবে। তখন যোগাযোগ আরো বাড়বে। বাংলাদেশের ফুটবল বিশ্বে পরিচিত হইয়া উঠবে। খেলার মানে উন্নতি আসবে। আর এইটা ঘটবে শুধুমাত্র নিজস্ব ফুটবলের শক্তি দিয়া।

কারো পরিবার যদি জীবিকার উদ্দেশ্যে দেশের বাইরে চইলা যায় এবং সেই পরিবারের সন্তানদের কেউ যদি ইউরোপ বা ল্যাটিন ফুটবলে ভালো একটা জায়গা পাইয়া যায়, তার কি কর্তব্য যে — সে এই দেশের ডাকে যখন-তখন ছুইটা আসবে? যদি এইখানে ভালো মানের ফুটবল না হয়?

আমার মনে হয়, বর্তমানে যারা দায়িত্বে আছেন, তারা এই ব্যপারটা ভালোভাবে ভাববেন। এবং ভবিষ্যতের জন্য একটা সুঠাম ও স্বস্থ পরিকল্পনা করবেন এবং তা অবশ্যই এক্সিকিউট করবেন। পৃথিবীতে যে-কোনোকিছু রাতারাতি হয় না। রাতারাতির গিমিক একধরনের প্রতারণা। দেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করা যাবে না।

আজকের খেলায় বাংলাদেশ ঠিক কোথায় দুর্বল ছিল? আমার মনে হয় না ডিফেন্সে দুর্বলতা ছিল। বরং তারিক কাজি, শাকিল তপু আর তপু বর্মণ অনেক বেশি নিবেদিত ছিল আজ। সেন্টারব্যাক হিসাবে তারিক কাজি আর শাকিল তপু তাদের বেস্ট দিছে, এতে কোনো সন্দেহ নাই। মূল সমস্যা মাঝমাঠ থেইকা আক্রমণভাগের মিসকমিউনিকেশন। ফাহমিদুলের জায়গায় ইমনরে প্রথম থেইকা খেলানোর দরকার ছিল। ফাহমিদুলের খেলা অনেক বেশি শরীরবৃত্তিক। একজন লেফট-মিডফিল্ড বা উইঙ্গারের সাথে এইরকম খেলা যায় না। মিডফিল্ডে হৃদয়ের খেলাও বেশি ভালো লাগে নাই। পাসিঙে অনেক উইক মনে হইলো। শাহ কাজেম বা সাদ হোসেনের পরিবর্তে শাহরিয়ার ইমন বা আল-আমিনরা অনেক কার্যকর যেইটা সেকেন্ড হাফে খুব চোখে পড়ছে।

বাংলাদেশের মূল উইঙ্গার রাকিবও ভালো খেলে নাই আজ। শোমিতের সাথে তার কমিউনিকেশনে অনেক দুর্বলতা ছিল। সিঙ্গাপুরের নাম্বার নাইন ইখসান ফান্দি থেইকা চাইলে কিছু শিখতে পারে রাকিব। ব্যালেন্স আর কামনেস। হামজার পরে আজ খুব কার্যকর ফুটবল খেলছে শোমিত সোম। আক্রমণভাগের উইকনেসে শেষ হাসিটা হাসতে পারলাম না শুধু।

হাসান শাহরিয়ার ১০ জুন ২০২৫


গানপার স্পোর্টস জার্নাল

শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you