বেগুন যেভাবে খেতে হয় || কাজল দাস

বেগুন যেভাবে খেতে হয় || কাজল দাস

বেগুন নামে যেই সব্জিটা আমরা খাই, রিসেন্টলি সেই বেগুন নিস্তরঙ্গ ও ভয়বিপর্যস্ত জনজীবনের বাংলাদেশে বেজায় ঢেউ তুলসে চ্যানেল ৭১-এর একটা কথানুষ্ঠানের সুবাদে। ‘একাত্তর জার্নাল’ নামে একটা আলাপচক্রে বেগুন নিয়া সাংবাদিক-থেকে-বিশেষজ্ঞ-বনে-যাওয়া তিন বেগুনবিজ্ঞানীর তেলে-বেগুনে-জ্বলে-ওঠা অ্যাপ্রোচের তামাশা বুঝতে চাইলে ইউটিউবে-অ্যাভেইলেবল ভিডিয়োর এই লিঙ্ক ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন। খবরে প্রকাশ, বাংলাদেশের একজন/একদল কৃষিবিজ্ঞানী বেগুনে ক্যান্সারের জন্য দায়ী হিশেবে পরিচিত কতিপয় এলিমেন্ট পাইসেন এবং আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানজার্নালে তাদের সেই রিসার্চফাইন্ডিঙস পাব্লিশের সঙ্গে সঙ্গে দেশের দৈনিক পত্রিকাগুলায় সেই নিউজ ছাপতে দিসেন। চ্যানেল একাত্তরের আমন্ত্রণে সেই রিসার্চারদলের একজন/প্রধান কথা বলতে এসছিলেন এবং উক্ত অনুষ্ঠানের ‘সর্বজনমান্য’ মস্তান উপস্থাপক সহ সর্বমোট তিন বিশেষজ্ঞের তেলে-বেগুনে-তাতা আক্রমণের চোটে বেচারা রিসার্চারের কী ভীষণ অকোয়ার্ড অবস্থায় নিপতিত হওয়া তা নিয়া সামাজিক সংযোগমাধ্যমে ব্যাপক ট্রল চলতেসিল। ট্রল নিয়া বা চ্যানেলগুলার নাম-না-জানা সাংবাদিক উপস্থাপকগুলা নিয়া বা দাওয়াত দিয়া আনা আজিব কিসিমের ভুঁইফোঁড় বিশেষজ্ঞগুলা নিয়া আমাদের কোনো সমস্যা নাই। বাংলাদেশে যেহেতু সংবাদকর্মীরাই বিজ্ঞানী ও গুণীমানী কিংবা আরও যত যত যা যা, আমরা তামিশকির, আমরা তামশা দেখিয়া যাই। বিনোদনদুর্বল দেশে এইগুলাই বিনোদন। ওই তিন সংবাদকর্মী ও ওদের খপ্পরে পড়া বেচারা অ্যাগ্রিকালচারবিজ্ঞানী প্রত্যেকের জন্যই সিম্প্যাথি রইল আমাদের তরফ থেকে। কেননা, আজকের এই ঘটনায় কেবল নয়, মিডিয়ায় গেল পনেরো বছর ধরে এমন ঘটনা এই তিন সংবাদকর্মী ছাড়াও অন্য সকলের আচরণে দেখতে পাইতেসি ফিরে ফিরে, এই সবজান্তা আচরণ আর টিআরপি বাড়াবার জন্যে শিষ্টাচারের লঙ্ঘন, আমরা দেখতে পাচ্ছি শিক্ষা ব্যর্থ হলে একটা জাতি কী বীভৎস পরিণতির দিকে যায় তার চরম সিম্পটমগুলা। কাজেই, সিম্প্যাথি। ‘গভীর সমবেদনা’ আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা বাংলাদেশের জন্য। সঙ্গে রইল ‘বেগুন যেভাবে খেতে হয়’ লেখাটা। সাম্প্রতিক বাংলাদেশের বেগুনকাণ্ডের সঙ্গে এই লেখার নাই তেমন লেনাদেনা। — গানপার


বেগুন যেভাবে খেতে হয় || কাজল দাস


১. ভুনা খিচুড়ির সাথে চাক চাক করে কাটা গোল বেগুনভাজা, হাল্কা ঘিয়ে ভাজা হলে আরো ভালো লাগে আমার। সাথে একটু আচার। সাথে কয়েকটা কাঁচা মরিচ গরম তেলের আঁচ লাগিয়ে নিতে হবে।

২. লম্বা বেগুন আমি খুব পছন্দ করি লইট্টা শুটকি দিয়ে খাইতে। স্পেশালি বেগুনকে স্লাইস করে কেটে, বেশি করে কাঁচামরিচ দিয়ে খাইতে ভালো লাগে। সাথে ধনেপাতা থাকতে হবে। পানির পরিমাণ হবে সব্জির পরিমাণের অর্ধেক।

৩. চিংড়ি বা ছোট ট্যাংরা মাছ দিয়ে বেগুনরে কিউব করে কেটে চচ্চড়ি খাইতেও ভালো লাগে।এটা বেশি পছন্দ করি শীতকালে।

৪. ছোট লাউ আকৃতির বেগুনরে আমি মাছের ঝোল দিয়ে খাইতে পছন্দ করি। বেগুনের চারদিকে একটু ছিঁড়ে নেই চাকু দিয়ে। তারপর তেলে ভেজে রুই মাছের ঝোল। খেতে সেই মজা!

৫. বেগুনের ভর্তা আরেক স্বাদের জিনিস। বেগুন, রসুন, পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ তেলে ডুবিয়ে ভাজতে হবে। তারপর বেগুনের চামড়া ফেলে দিয়ে মাখিয়ে ভর্তা। আলাদা করে শুকনো মরিচ ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে নিতে হবে।

৬. রমজান মাসের বেগুনি আমার সবচেয়ে বেশি অপছন্দ। শালারা ব্লেড দিয়ে বেগুন কেটে বাজে ব্যাশন দিয়ে ভাজে। তাও ব্যাশনে কালিজিরা আর জিরার গুঁড়া দেয় না বলে সুঘ্রাণ হয় না।

৭. বেগুনের যাবতীয় বাহ্যিক ব্যবহার আমার পছন্দ। খাবার জিনিশ নিয়ে কিছু করা আমার সহ্য হয় না। প্রয়োজনে বিকল্প খুঁজে নিন।


কাজল দাস রচনারাশি

COMMENTS

error: