কবি বা সাহিত্যিক মরার পরে তাঁর সমালোচনা করা ও তা নিয়ে প্রাপ্ত ব্যক্তিগত আক্রমণ || আনম্য ফারহান

কবি বা সাহিত্যিক মরার পরে তাঁর সমালোচনা করা ও তা নিয়ে প্রাপ্ত ব্যক্তিগত আক্রমণ || আনম্য ফারহান

আমি শহীদ কাদরীর মৃত্যুর পরে তাঁরে নিয়ে করা একটা ছোট্ট ফেসবুকপোস্ট দিই। যা মূলত সমালোচনা। যত ছোটই হোক। তা গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৬ সালে করা। তাঁর মৃত্যুর দিন, অর্থাৎ ২৮ ও ২৯ শে আগস্টে। পোস্টটা এখানে শেয়ার করে দিচ্ছি।

দ্রষ্টব্য তবুও অভিবাদন :: আনম্য ফারহান

তো পোস্ট দেয়ার পর, তৎকালীন ‘সমকাল’ পত্রিকায় কাজ করা আমারই কন্টেম্পরারি একজন কবি আমাকে তাঁর রোষানলে ফেলেন। কী জানি মন্তব্য করছিলেন। ভালো আর মনে নাই। এবং আমাকে উনি ব্লক করেন। তাই উনার কমেন্টটাও আর নাই।

এই কবি আবার ‘সমকাল’ পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ সাপ্তাহিক সাহিত্যম্যাগাজিন ‘কালের খেয়া’-র দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র পজিশনেও ছিলেন। বলাই বাহুল্য তিনি আমার বন্ধুস্থানীয় ছিলেন। তাঁদের একটা সংঘতে আমাকে কবিতা পাঠের আড্ডায় নিমন্ত্রণ করছিলেন উনারা। এই শহীদ কাদরী ঘটনার অনেক আগে তা। ২০০৯/ ২০১০ বা ২০১১ সালের দিকে হবে। উনারা প্রতি শুক্রবারে বসতেন। চারুকলায় ও হাকিম চত্বরে। আমি দুইদিন গেছিলাম। অবশ্যই কবিতা সহ। আমার কবিতা আমি নিজেও পাঠ করছি। অন্য এক কবিও পাঠ করছিলেন। উনাদের অনেককেই আপনারা চিনেন। আমি সংগত কারণেই নাম নিলাম না আর। পরে অন্য আরেক জঘন্য নোংরা চর্চা দেখে ও তার সাক্ষী হয়ে আমি আর ওদের মধ্যে যাই নাই।

আমার কবিতা নিয়ে বলা ওনাদের কথাবার্তা বা ওই দুইদিনের সপ্রতিভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এখানে আর কথা না বলি। আর তা বলা শোভনও নয়। আমার কবিতা যারা পড়েন, তারা কখনও যদি কিছু বলেন, তো বলবেন হয়ত।

যাক গে, এই কথাগুলা বললাম ওই কবির সাথে আমার নৈকট্য ও পরিস্থিতি ঘটার আগের ব্যাকগ্রাউন্ডটা বুঝাইতে। তাতে এ বিষয়ক চলমান ঘটনার পরম্পরা বুঝতে সুবিধা হবে। মানে কেউ মারা গেলে তার সমালোচনা করলে পরে — এ-কেন্দ্রিক সাহিত্যিক ও মিডিয়া সমাজের পাল্টা কনসিকোয়েন্সের শিকার হওয়া — বিষয়টা। তা আমি হইছিলাম। ব্রাত্য রাইসুকে (Bratya Raisu) তো আমরা হরহামেশাই দেখি এইটার শিকার হইতে।

এবার আবার ‘প্রথম আলো’ এক লেখকরে দিয়ে লেখাইছে যে, লেখকের মৃত্যুর পর বা ওইদিনই এইগুলা কেন করা যাবে না টাইপ ভিক্টোরিয়ান রোমান্টিসিজম বাহিত নীতিবাগিশ কথাবার্তা। ব্রাত্য রাইসু এইটাকে “ব্লাসফেমি” বইলা সঠিকভাবেই চিহ্নিত করছেন।

আমি বা আমরাও এর বিরুদ্ধে। লেখক সমাজের কর্তৃত্ব ও মিডিয়ার অথরিটারিয়ান এইসব বুলশিট আমরা আস্তে আস্তে ভাইঙ্গা ফেলতেছি। সাধারণ সমাজেও তা ফলপ্রসূ ভূমিকা যে নিতেছে — আমরা দেখতেছি।

ব্যক্তিগত আক্রোশ উষ্মার প্রোথিত ভগবানকেই আমরা নাড়া দিতেছি, আর খান্ খান্ হয়ে ঝরে পড়তেছে তাদের অশ্লীল মূল্যবোধ। আমাদেরই চোখের সামনে। তা যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও সাহিত্যিক দায় — তা ক্রমেই বোঝা যাচ্ছে এবং পোক্ত হচ্ছে। এইটাই চাইছিলাম — আরামসে সবাই কাজের কথাটা কাজের টাইমে বলতে পারুক।

কারো মূল্যবোধে ব্যক্তিগত আঘাত লাগলে সেইটার দায় আমার নিজের নয় — যেহেতু আমি খারাপকে খারাপ বলে লোকেট করতেছি। আর তা সামগ্রিকতার জন্য স্বাস্থ্যকর এবং লংরানে তাৎপর্যপূর্ণ পলিটিক্যল অবস্থান।

উল্লেখ্য যে, ওই কবি আজও আমাকে ব্লক করে রাখছেন। এবং বইমেলা বা বিভিন্ন এইটাসেইটাতে উনাদের সাথে দেখা হয় — কিন্তু বরফ আজও উনারা জিয়াইয়া রাখছেন।

আমি কী করছিলাম? আমি খালি শহীদ কাদরীর মৃত্যুদিনে তাঁর সমালোচনাটা করছিলাম। আর আমার কবিতা ‘শূন্য দশক’ বা ‘দ্বিতীয় দশক’ বা আর কারো কোনো দশের মতনই নয়। তাই সবমিলায়ে যা হওয়ার তা-গুলা হয়ে এইগুলা হইছে।

আনম্য ফারহান১০/৫/২০২৩


আনম্য ফারহান রচনারাশি

COMMENTS

error: