সকলেই কবি হয় না, কেউ কেউ কবি হয়। কবি ও কবিতাবিষয়ে আছে নানান মত। আমি ব্যক্তিগতভাবে কবিতা লিখি না। কেবল কবিতাকে ভালোবাসলে, কবিতা নিয়ে শুধু চিন্তাভাবনা করলেই কবি হওয়া যায় না। আমি কবিতার একজন পাঠকমাত্র। কবিতা নিয়ে কবিদের জটিল বাহাসে জড়াই না। এড়িয়ে যাই। এছাড়াও কবিতাবিষয়ক জ্ঞান আমার অপ্রতুল বলে তর্কেও সাহস পাই না। কবিতার নিশ্চুপ পাঠক হিশেবে সাহিত্যের এ-শাখাটি নিয়ে আমার অনেক জিজ্ঞাসা আছে, কৌতূহল আছে। হয়ত নিজস্ব মতামতও আছে — যা আমার নিজের কাছেও তেমন স্পষ্ট নয়।
গল্প, উপন্যাস কিংবা প্রবন্ধ-সাহিত্যে লেখকের চিন্তার বহিঃপ্রকাশ যে-রকম প্রত্যক্ষভাবে ঘটে, কবিতার বেলায় তা কিন্তু ব্যতিক্রম। অতীতে কোনও কোনও ক্ষেত্রে কেউ কেউ কবিতা বলতে ছন্দোবদ্ধ কিছু পঙক্তিবিশিষ্ট একটি শব্দশরীরকে বুঝলেও এই হাল-আমলের সাহিত্যসমাজে কবিতা অতীতের তুলনায় আরও দিগন্তপ্রসারী বোধ করি। অনেক ক্ষেত্রেই কবিতাকে উপলব্ধির জন্য সাধনার দরকার হয়, চেতনা দিয়ে অনুভব করতে হয়। কোনও কোনও কবিতায় হয়ত একটি লাইনই পুরো কবিতার প্রতিনিধিত্ব করে, আবার কোনও কোনও কবিতার পুরোটা জুড়েই রহস্য খেলা করে। প্রবন্ধ বা উপন্যাসের তুলনায় কবিতা পরিসরে ছোট হলেও ভাবনার দিক অনেক অনেক বিস্তৃত, কোনও কোনও ক্ষেত্রে জটিলও। কবিতা তার ছোট কলেবরে অনেক বড়/জটিল ভাবনাকেও ধরে। মাত্র কয়েক লাইনের ছোট্ট একটি কবিতাও ভাবনার অসংখ্য স্ফুরণ ঘটাতে পারে, বহুতর ভাবনার বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারে। তাই কবিতায় অবগাহনে হৃদয়ে আলোছায়ার রহস্য খেলা করে। এই রহস্যের জন্য অনেক সময় কবিতায় চিন্তার শৃঙ্খলাকে ধরে রাখাও যায় না। মাঝে মাঝে মনে হয়, যেন কিছুই বোঝা গেল না; এমনকী মাঝে মাঝে এমন উপলদ্ধিও হয় যে, কিছুই পড়া হচ্ছে না, বই খোলা রেখে কেবল সময়ক্ষেপণ হচ্ছে মাত্র। সেজন্য কবিতা বারবার পড়া যেমন জরুরি, তেমনই সার্থক কবিদের কবিতাভাবনা সম্পর্কেও জানাটাও গুরুত্ববাহী। তাই কবিতা ছাড়াও কবিতাবিষয়ক প্রবন্ধ আমাকে খুব টানে। কবিতাবিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ থেকে আমি অনেক অজানা বিষয়-আশয় ও অনেক প্রশ্নের সদুত্তর জানতে পারি।
কবি ফজলুররহমান বাবুলের কবিতাবিষয়ক প্রবন্ধবই ‘কবিতার পথে’ পড়লাম। ‘কবিতার পথে’ প্রবন্ধবইয়ে বড় প্রসঙ্গ হলো কবিতার রূপবৈচিত্র্য ও এর সংজ্ঞা বা পরিচয়কে স্পষ্টীকরণ; কবিতা নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনার প্রয়োজনীয়তা ও অভিপ্রায়; কবিতার শব্দার্থ, মর্মার্থ নিয়ে আলোচনা ও মতভেদ; পরিশেষে কবির ব্যক্তিগত কবিতাভাবনা ও কবিতাযাত্রা নিয়ে খানিকটা অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা। সূচিপত্র তুলে না-ধরলে এ আলোচনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্পষ্ট হবে না হয়ত। তাই প্রথমে বইটির সূচিক্রমের দিকে একটু আলোকপাত করা যাক।
সূচি : কবিতার সমালোচনা প্রসঙ্গে; মুহূর্তের আলো, কবিতার মুহূর্ত; কবি ও কবিতার পক্ষে; একটি কবিতা পুনর্পাঠের পর; কবিতার শব্দার্থ, মর্মার্থ ; কবিতা কবিতা; আমার কবিতাযাত্রা; পথে যেতে যেতে।
প্রথম অধ্যায়ে লেখক কবিতা সমালোচনার বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে বিশ্লেষণ করেছেন। সমালোচনার বিভিন্ন ধারা বর্ণনার পাশাপাশি তাঁর এই তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ পাঠক-সমালোচককে নিজের সাহিত্যিক বিচারের সামর্থ্য সম্পর্কে ধারণা দেবার পাশাপাশি সঠিক চিন্তাপদ্ধতির দিঙনির্দেশনা দেবে বোধ করি।
‘কবিতার সমালোচনা প্রসঙ্গে’ অধ্যায়ে ফজলুররহমান বাবুল লিখেছেন — ‘কবিতা হচ্ছে ভাবপ্রকাশের একটি মাধ্যম, যে-মাধ্যমে কবির সৃজনী-সামর্থ্যরে ভিত্তিতে অভিজ্ঞতা ভূমিকা রাখতে পারে বাস্তবে, চিন্তায়। গাছের ডালে বসে থাকা কিংবা আকাশে উড়ন্ত পাখিটিকেও কবি নতুন অভিজ্ঞতার আলোকে দেখতে পারেন।’ এবং আরও লিখেছেন — ‘আমাদের কবিতাভুবনে মনগড়া আলোচনার/সমালোচনার ঝোঁক প্রায়শই দেখা যায়, যা কাব্যামোদীদের একেবারেই মেনে নেওয়ার কথা নয়।’ আরও লিখেছেন — ‘আলোচনার/সমালোচনার কাজ কবিতা সাহিত্যের ক্ষেত্রে প্রথমত দোষগুণ নির্ণয় করার কাজ। আলোচনা/সমালোচনা তো অনুমাননির্ভর হয় না।’
সমালোচনার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত রেষারেষি বা অল্পবয়সের আবেগ কিন্তু ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। গঠনমূলক সমালোচনা ব্যতিরেকে সাহিত্যে অন্য যে-কোনও প্রকার সমালোচনাই অনাকাঙ্ক্ষিত। এ প্রসঙ্গে লেখক বলতে গিয়ে অল্প বয়সে রবীন্দ্রনাথের করা সাহিত্য সমালোচনার প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন — “কাঁচা বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতী পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় মধুসূদনের ‘মেঘনাবদবধ কাব্য’-এর কাঁচা সমালোচনা করে পরবর্তীকালে অস্বস্তি প্রকাশ করেন।” আবার গঠনমূলক সমালোচনার একটি ভিন্ন দিক সম্পর্কে পাঠককে অবহিত করতে লেখক এ তথ্যটি তুলে ধরেছেন, ‘জীবনানন্দ সংগত কারণেই মনে করতেন, প্রত্যেক কবিই তার কবিতার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সমালোচক…।’ যে-কোনও সার্থক কবির কবিতা কালোত্তীর্ণ হলেও এটা ধ্রুব সত্য যে, সকল কবিই তাদের কালের সন্তান। এ কথাটার প্রতিফলন ঘটেছে উক্ত অধ্যায়ে —
‘…কবি কবিতা রচনা করেন যে-আলোছায়ায়, যে-সময়ে কিংবা যে-পরিবেশে, এর একটা পরোক্ষ ভূমিকা কিংবা ছাপ থেকেই যায় নেপথ্যে।’
‘সমালোচকগণের কাছে লেখক-পাঠকের দাবি থাকে সৎ-ব্যাখ্যার, সৎ-সমালোচনার।’
কবিরা কি চাইলেই কবিতা সৃষ্টি করতে পারেন? সারাদিন খাতা-কলম নিয়ে টেবিলে বসে ধ্যান করলে কি কবিতা এসে ধরা দেয়? একজন কবি কী চব্বিশ ঘণ্টাই কবি, নাকি বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে কবি? এই ধরনের কিছু চেনা প্রশ্নের সদুত্তর লেখক অন্বেষণ করেছেন ‘মুহূর্তের আলো, কবিতার মুহূর্ত’ অধ্যায়ে। পুরো অধ্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করছে বুঝি এই একটি লাইন, ‘এক-একটি কবিতা তার স্বতন্ত্র প্রেক্ষিতে/স্বরূপেই ধরা পড়ে। কীভাবে, কখন কবিতা ধরা দেয় তা আগে থেকেই কে জানে!’
কবিতা নিয়ে নানান দেশের জগদ্বিখ্যাত কবিদের আছে নানান সংজ্ঞা, মত। এগুলোর মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে আমার পছন্দের একটি সংজ্ঞা হচ্ছে কবি সেন্ট অগাস্টিনের। সেন্ট অগাস্টিন কবিতা সম্পর্কে নিজের ধারণা ব্যক্ত করেছেন এভাবে — ‘যদি জিগ্যেস করা না হয়, আমি জানি। যদি জিগ্যেস করা হয়, আমি জানি না।’ এখানে কবি প্রায় দ্ব্যর্থহীনভাবেই ঘোষণা দিয়েছেন যে, কবিতা আসলে অনুভবের বিষয়। অর্থাৎ, যদি জিজ্ঞাসা করা হয় কবিতা কী, তাহলে কোনও ভাষাগত সংজ্ঞার শিকল দিয়ে কবিতাকে কোনও গণ্ডির ভেতরে আটকানো যাবে না।
‘কবি ও কবিতার পক্ষে’ অধ্যায়ে লেখক কবিতার পরিচয় দিতে গিয়ে এ সম্পর্কে যে আভাস দিয়েছেন তা হলো — ‘কবিতা কবির অন্তর্দৃষ্টি অথবা মনোগত ভাবের বাহ্যিক রূপান্তর।’ একই অধ্যায়ের আরেক জায়গায় লিখেছেন, ‘কবিতা কবিরই বোধচিত্র’। অনত্র লিখেছেন — ‘কবিকে চেতনা/অনুভব তাড়া করে, তাই কবি প্রকাশ করতে চান। কবিতা যেন কবির চেতনায় হঠাৎ করে ফোটা কোনও ফুল।’ কবি ও কবিতার পক্ষে বলতে গিয়ে প্রাসঙ্গিকভাবেই প্লেটোর কবিতা বিরোধিতা ও তাঁর আদর্শ রাষ্ট্রের বিষয়টাও কয়েকলাইনে আলোচনা করেছেন।
কবিতার কিছু অনুষঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে ‘কবিতা কবিতা’ অধ্যায়েও। লেখক উক্ত অধ্যায়ে লিখেছেন — ‘কবিতা কী? কেউ বোঝাতে পারে? না, কেউ-ই না। কত-যে কবিতাকে বুঝে ওঠা হয় না আমার; ভালো লাগে তবু। ভালো লাগে কবিতার হাত পা নাক মুখ চোখ, ভালো লাগে চোখ-রাঙানি, ভালো লাগে কথাবার্তা, হাসিকান্না। সমস্ত ভালো লাগা ও ভালোবাসার ভিতরে কত-যে রহস্য লুকিয়ে থাকে। আমি সেসব রহস্যকে ব্যবচ্ছেদ করতে চাই আমার নিজেরই ভালো লাগায়।’
কবিতা পুনর্পাঠের আবশ্যকতা সম্পর্কে কবি আলোকপাত করেছেন ‘একটি কবিতা পুনর্পাঠের পর’ অধ্যায়ে। কবির যেমন জীবনবোধ, প্রতীতির বিবর্তন হয়, নিয়ত অভিজ্ঞতার সঞ্চার হয়, অনুরূপ পাঠকরাও নিয়মিত পাঠে সময়ের পরিক্রমায় বোদ্ধা পাঠকে পরিণত হন। কাঁচা বয়সে তাই স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে অনেকসময় পাঠক অনেক গূঢ়ার্থ গল্প, উপন্যাস বা কবিতা পাঠ করেন, যা পরবর্তীতে অগ্রসর পাঠকে পরিণত হওয়ার পর উক্ত সাহিত্য পুনর্পাঠ না-করলে যেমন এর রস ও মাহাত্ম্য তারা উপলব্ধি করতে পারবেন না, তেমনই অভিজ্ঞ চোখ দিয়ে একটি রচনা বা কবিতা পাঠ করার পর তা পুনর্মূল্যায়ন করা কিংবা সমালোচনা করার নিজস্ব ক্ষমতাও আবিষ্কার বা অর্জন করতে পারেন না। একই কথা বলা যায় নিজের লেখা কবিতাগুলোর ক্ষেত্রেও। কাঁচাবয়সে যে-লেখাকে নিজের সর্বোত্তম বা মহৎ সৃষ্টি বলে মনে হয়, দীর্ঘ সাহিত্যযাত্রার পর হয়ত সেই লেখাকে নিজ লেখার তালিকায় রাখতেও কুণ্ঠাবোধ হতে পারে। লেখক লিখেছেন — ‘কবিতার কারিগরদের নতুন প্রজন্মের কবি সহ শ্রদ্ধেয় কবিদের কবিতারাজি পুনর্পাঠ সবসময়ই জরুরি মনে করি। সময়ে-সময়ে নিজের লেখারও পুনর্পাঠ দরকার। অনুকরণ নয়, নিজের দুর্বলতাকে উপলব্ধির জন্য অন্যদের ভালো কবিতার পুনর্পাঠ দরকার।’ লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের এমন-কিছু অভিজ্ঞতার কথাও আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন ‘আমার কবিতাযাত্রা’ অধ্যায়ে। ব্যক্তিগতজীবনে লেখকের কাব্যচর্চার সূত্রপাত কীভাবে হলো, কেনই-বা কবিতা লেখা, তার কবিতাভাবনা অর্থাৎ ব্যক্তি ফজলুররহমান বাবুলের কবি হয়ে ওঠার গল্প এবং এ-যাবৎ কাব্যচর্চা অব্যাহত রেখে কতটা পথ পাড়ি দিতে পেরেছেন, তার কিছুটা জানা যায় ‘আমার কবিতাযাত্রা’ অধ্যায়ে — ‘মনে পড়ে, দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নকালেই বিবিধ কবিতা, গল্প, গদ্য কিংবা উপন্যাসজাতীয় কিছু লেখাজোখা পাঠের মধ্যেই অনুভব করি লেখায়-লেখায় কোনওকিছু বলতে চাওয়ার সুপ্ত-আর্তি আমার মনেও আছে। আমার লেখাজোখার চর্চাটা ধীরে ধীরে কবিতায়ই শুরু হয়ে যায়। কী শিরোনামে প্রথম কবিতাটি লিখেছিলাম তা আজ আর স্মৃতিতে নেই। আমার প্রথম দিকের লেখা অনেক কবিতা ছাপার আগেই বর্জন করি; আজও কোনও কোনও লেখা না-ছেপেই বর্জন করতে হয় চিরতরে। যে-লেখা লিখে ওঠবার পর নিজেরই ন্যূনতম মনে ধরল না তা পাঠকের জন্য কোথাও ছাপতে যাব কেন?’
নবীন কবিতাপাঠক বা নবীন কবিদের জন্যও বইটির যে-অধ্যায়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে সম্ভবত সে অধ্যায়টি হলো — ‘কবিতার শব্দার্থ, মর্মার্থ’। পাঠক যখন কবিতা পড়েন তখন কবিতার ব্যঞ্জনা, উপমা, উৎপ্রেক্ষা নিয়ে মনে তৈরি হয় ধূম্রজাল, অনেক কূট কিংবা দ্বিধা। একটি কবিতার মর্মার্থ নিয়ে যেমন পাঠকমহল দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারেন একইভাবে সমালোচকগোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন ও মতভেদ দেখা দেয়। কবিতার এই মায়াজাল সৃষ্টির কারণ ও সৌন্দর্য নিয়ে নান্দনিক আলোচনায় পূর্ণ হয়েছে ‘কবিতার শব্দার্থ, মর্মার্থ’ অধ্যায়টি। কবিতা পাঠ করতে গিয়ে এর শব্দ, উপমা, ব্যাঞ্জনার বেড়াজালের ফলে উদ্ভূত এলোমেলো ভাবনার ঘূর্ণিবাতে পাঠককে যেন পথ হারাতে না-হয়, সেজন্য ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন লেখক। ‘কোনও যুক্তিতর্ক থেকে নয়, কবি শব্দকে ব্যবহার করেন তাঁর রুচি ও সচেতনতা থেকে; এই অর্থ সচেতনতাটুকু অর্থ ও ধ্বনির দিক থেকে হতে পারে, হৃদয়াবেগের দিক থেকেও হয়ে পারে।’ একই অধ্যায়ে লিখেছেন — ‘শব্দ এবং অর্থ কবিতার উপকরণ, তবে কোনও একটি রচনায় কতকগুলো শব্দ আর অর্থ থাকলেই কবিতা হয়ে ওঠে না। ভাবের অলিন্দে, কবি প্রতিভালোকেই শব্দ এবং তার অর্থের মোহনায় একটি কবিতাকে হয়ে উঠতে হয়।’
আবার অন্যত্র লিখেছেন — ‘কবিতা স্পষ্ট করে বলে, ইশারায়-ইঙ্গিতে বলে; কবিতা এমনই। কবিতার সমস্ত শব্দ ও পদের মর্যাদা উপলব্ধির কোনও দায় পাঠকের ওপর দেওয়া যায় না নিশ্চয়।’
কবিতাবিষয়ে বিবিধ মুখ্য-গৌণ অনুষঙ্গ নিয়ে সংক্ষেপে জানতে আগ্রহী পাঠকের এই বইটি পড়া উচিত। বিভিন্ন তথ্য ও তত্ত্বের সমন্বয়ে কবিতার জটিল শিল্পপ্রসঙ্গগুলো কবি ফজলুররহমান বাবুল সহজ ও সরস ভাষায় উপস্থাপন করেছেন। আর তাই উৎসাহী পাঠক ফজলুররহমান বাবুল রচিত ‘কবিতার পথে’ বইটি পড়ে কবিতা সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞানের চেয়েও গভীর জ্ঞান ও চিন্তার খোরাক খুঁজে পাবেন, মনে করি।
কবি ফজলুররহমান বাবুল রচিত কবিতাবিষয়ক প্রবন্ধ বই ‘কবিতার পথে’ প্রকাশ হয়েছে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে নাগরী প্রকাশন থেকে। বইয়ের যুতসই প্রচ্ছদটি করেছেন তৌহিন হাসান। ৪ ফর্মায় এই মূল্যবান বইটির মূল্য ১৪০ টাকা। সকল কবিতাপ্রেমী ও কবিতার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে আগ্রহী পাঠককে বইটি পড়ার জন্য আমন্ত্রণ রইল।
- যেভাবে হয়ে ওঠে ‘এসো আমার শহরে’ || শিবু কুমার শীল - March 6, 2025
- Basudeb Dasgupta’s ‘Randhanshala’ The Cooking Place translated by Sourav Roy - March 4, 2025
- ভিক্টোরিয়া অ্যামেলিনা ও যুদ্ধদিনের ইউক্রেনীয় কবিতা || জয়দেব কর - February 17, 2025
COMMENTS