কিম্বার্লি

কিম্বার্লি

রাজকন্যা ছাড়া কি রূপকথা হয়? বেবাক রূপকথাতেই থাকে একটা রাজ্য, রাজা, রাজপুত্র ও রাজকন্যা। ভালো লাগে কিছু রূপকথা, ভালো লাগে না কিছু। তবু রূপকথার রাজকন্যেটিকে লোকে ভোলে না। রাজকন্যে যেমন সুখী হতে পারে, তেমনি দুখী রাজকন্যাও খুব হয়। রাগী রাজকন্যা, ত্যাগী রাজকন্যা, দেমাগী রাজকন্যা ইত্যাদি বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যনামা রাজকন্যার দেখা পাওয়া যায়। আর ভোগী রাজকন্যা? অঢেল বৈভবে ভেসে-চলা রাজকন্যা? তা-ও তো হরদম দেখা যায়। এমনই এক রাজকন্যার কিসসা গাইতে লেগেছি আমরা।

playboy magazine cover 1989

প্লেমেট অফ দ্য ইয়ার ১৯৮৯

রাজ্যের নাম প্লেবয়, রাজকন্যার নাম কিম্বার্লি, যিনি এই রাজপাটের নির্মাতা বা রাখোয়াল নাম তার হিউ হেফনার। হ্যাঁ, প্লেবয়রাজ্যের রাজকন্যে এই কিম্বার্লি। কিম্বার্লি কনরাড। হিউ হেফনারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবার পরে হেফনার টাইট্যলটা নামের লেজে জুড়ে যেয়ে হয় কিম্বার্লি কনরাড হেফনার। প্রথমে প্লেবয়ের প্লেমেট অফ দ্য মান্থ হয়েছিলেন ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি সংখ্যায়। এর পরের বছরে অর্থাৎ ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে প্লেমেট অফ দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন। সবকিছুর উপরে টেক্কা চালিয়ে প্লেবয়সম্পাদক ও স্বয়ং প্লেবয় হিউ হেফনারের লাইফটাইম প্লেমেট! গণ্ডায় গণ্ডায় মাসশ্রেষ্ঠী আর বর্ষশ্রেষ্ঠী প্লেমেটদেরে পেছনে রেখে এই বিজয় কিম্বার্লি উদযাপন করেছেন অনেক লম্বা সময় ধরে। মাঝখানে অবশ্য খিটিমিটি বেঁধেছিল, মীমাংসার অযোগ্য মতপার্থক্যের কারণ দেখিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেও পরদিন তা প্রত্যাহার করে নেন কিম্বার্লি। কিন্তু শেষরক্ষা তো হয়নি, শেষরক্ষার দরকারই-বা কি, জীবন চলিষ্ণু। খুব সম্ভবত ২০১০ নাগাদ পাকা ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় কিম্বার্লি-হেফনার দম্পতির। তার আগে দেড়-দশকেরও অধিক সংসারযাপন করেছেন কিম্বার্লি নিজের চেয়ে দুগ্না বয়সী পতি হিউ হেফনারের সঙ্গে।

Kimberly Conradঅ্যানিওয়ে। এই রূপকথায় কিম্বার্লি যদি রাজকন্যা হন তবে হিউ হলেন সেই রাখাল যে কি-না অনেক খুন, পসিনা ও পরিশ্রম ঝরিয়ে একটি বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক হয়। হিউ হেফনার তার আর্লি লাইফে ছিলেন শিশুদের কাগজ চিল্ড্রেন’স্ অ্যাক্টিভিটিজের সার্কুলেশন ডিরেক্টর, স্বপ্ন দেখতেন শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের জন্য সফিস্টিকেটেড একটা ম্যাগাজিন বার করবেন। হিউ হেফনার সেই অতিকায় হিম্মতের মানুষ যে শুধু শুয়েবসে খোয়াবই দেখে না, জানে সে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে। হেফনার তা-ই করেছেন। স্বপ্নের সেই পত্রিকা বার করেছেন। দুনিয়ার প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ঘুমনিদ্রা হারাম করে গেল কয়েক দশক পত্রিকাটা রাজ করেছে। এখন তো অনলাইন অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট এসেছে, প্লেবয়ের ইনফ্লুয়েন্স এবং ইম্প্যাক্ট বুঝতে গেলে এখন হয়তো বইয়ের পাতায় ইতিহাস পড়তে হবে। হেফনার হাতে প্লেবয় কেবল পত্রিকা নয়, হয়ে উঠেছিল খরগোশমার্কা ব্র্যান্ডের এক কামধেনু। অলটাইম গ্রেইট ম্যান’স্ ম্যাগাজিন প্লেবয়। ইতিহাস সুলভ মাল। অতএব থামি।

Kimberly Conradকিম্বার্লির সঙ্গে হেফনারের ছাড়াছাড়ির পরে হেফনার ফের ছাদনাতলায় গেছিলেন, তখন উনার বয়স তো এইটিফাইভ ক্রস করে গেছেই নির্ঘাৎ, কনের উমর যথারীতি তৃণকচি। হিউ হেফনার ইন্তেকাল করেন গত বছর, ২০১৭ সেপ্টেম্বরে, অল্পের জন্য সেঞ্চুরিটা হাতছাড়া হয়েছে। কিম্বার্লি বেঁচেবর্তে আছেন, তবিয়তও মন্দ নয়।

… …

আগের পোষ্ট

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you