শুধু রকারদের পোর্ট্রেট নিয়ে এই সিরিজ রচনা। প্ল্যান অনুসারে কেবল বাংলাদেশি মিউজিশিয়্যানদের মুখাবয়ব অঙ্কনের প্রয়াস আপাতত করা যাচ্ছে। আরেকটু খুলে বলতে গেলে এ-পোর্ট্রেটপ্রবাহ পথিকৃৎ বাংলাদেশি রকারদের মুখ ঝটিতি ইলাস্ট্রেট করবার দিকেই নিবদ্ধ। ঝটিতি, দ্রুত, ঝটপট। সহজলভ্য অঙ্কনোপাদান যেমন কলম, পেন্সিল ও কাগজ কিংবা বড়জোর কম্প্যুটারপ্রযুক্তির কিছু মাধ্যমিক সহায়তা হয়তো গ্রহণ করা হবে। পেন্সিল ও কলমে প্রেফ্রেন্স থাকবে যদিও।
রকারদের পোর্ট্রেট করতে বসে প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিতে হলো শুরুটা কারে দিয়া করব। জন্ম যদি তব বঙ্গে, বাংলাদেশে, হে রকলাভিং প্রজন্ম, দুইবার ভাবার দরকার হয় না যে আমরা বাংলা রকের যে-কোনো জলসায় বা আলাপে-আড্ডায় একবার তো গুরুপ্রণাম করবই। এবং বন্দনাকালেই গুরুপ্রণাম সেরে নিতে হয়। কাজেই আমরা আজম খানের প্রতিকৃতি এঁকে এই সিরিজ লঞ্চ করব, এতে এমন অবাক হবার কিছু নাই। গুরু তিনি, শ্রোতাদের কাছে তো বটে, মিউজিক অ্যারেনায় যারা বাংলা ভাষায় কাজ করেন তাদের সবার কাছে একবাক্যে আজম খান গুরু হিশেবে মান্য। গুরু তিনি বাংলা ব্যান্ডমিউজিক বলি কিংবা বাংলা রকের। আমাদের আজকের মুখ আজম খান।
একটা কথা গোড়াতেই ক্লিয়ার করে রাখা দরকার যে এইগুলি ট্রিবিউটপোর্ট্রেট এবং অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে আঁকা। প্রায় ইন্সট্যান্ট। গড়ে পাঁচমিনিট খর্চা হয়েছে এর একেকটা কাগজে ফুটাইতে। প্ল্যানটাও ওই-রকমই ছিল যে একেকটা মুখ স্টাডি করতে গিয়ে যে-কয়টা আঁকিবুকি বেরিয়ে আসবে, সেগুলো সব একত্র করে এই সিরিজে এঁটে দেয়া হবে। সেহেতু অঙ্কনদৌর্বল্য খোঁজার জন্য খুব-একটা সিরিয়াস হবার দরকার এই সিরিজের ক্ষেত্রে বাহুল্য।
অতএব গুরুর প্রতিকৃতি আঁকতে বসার আগে গ্যুগল করলাম উনার ভালো তসবিরের আশায়। দেখলাম যে আজম খানের বেশ অনেক ছবিই আছে, কিন্তু ফটোগ্রাফি হিশেবে তেমন সবল ছবি নিতান্ত অল্প। বলা যায় নেই-ই। কিংবা আলোছায়া ভালো হয়েছে এমন সুপুষ্ট ফোটোগ্রাফ আজম খানের ক্ষেত্রে অ্যাভেইল করা ডিফিকাল্ট। ফাইন্যালি যে-কয়টা হাতের কাছে পেয়ে মনে হলো মোটামুটি রেখাঙ্কন করা যাবে, দেরি না করে এঁকে উঠেছি ঝটিতি।
কিন্তু যার মুখ আঁকলাম, বা আঁকতে চেষ্টা করলাম, তার ব্যাপারে একটি ইন্ট্রো তো দরকার। পরক্ষণে মনে হলো, না, মায়ের কাছে মামাবাড়ির গল্প হবে যদি আজম খানের পরিচয় দিতে শুরু করি এদেশের মিউজিকলিস্নারদের কাছে। পরপর ছবিগুলা যাক বরং।
তাছাড়া আঁকার সঙ্গে লেখা যতটুকু না-হলেই নয় তা দিতে হবে নিশ্চয়, নাইলে আঁকা নিজে এক্সপ্রেস করুক নিজেকে। এই সিরিজে সেইটাই ঘটবে। লেখা আদৌ মুখ্য নয় এইখানে। কেবল আঁকা। বা, আঁকাও মুখ্য নয়, যা মুখ্য তা হচ্ছে রেস্পেক্ট জ্ঞাপন। পুরোধা মিউজিশিয়্যানদেরে রেস্পেক্ট জানানো। ক্রমে এই সিরিজে সেই কাজটা করবার দিকেই নিবদ্ধ হব।
গুরুর গান শুনে যে-কেউ নিজের মতো করে ভেবে নিতে পারবেন কেন তিনি গুরু। উনার গান তো সুলভ আজকাল, সমগ্র রচনাবলিই শোনা যায় চাইলে, উনার সম্পর্কে কেউ যদি রিসার্চ করতে চান তবে গানশোনার মাধ্যমেই তা করতে হবে। এমনিতে উনার জীবনতথ্য জানতে চাইলে উইকিপৃষ্ঠাই তো কাফি হবার কথা।
… …
- রকার্স পোর্ট্রেটপ্রবাহ ৪ || আহমেদ ইয়াসিন - January 24, 2021
- রকার্স পোর্ট্রেটপ্রবাহ ৩ || আহমেদ ইয়াসিন - October 5, 2020
- রকার্স পোর্ট্রেটপ্রবাহ ২ || আহমেদ ইয়াসিন - July 22, 2020
COMMENTS