এই পত্রিকাটা আবিষ্কার করলাম খুব বেশিদিন নয়। এইটা কবে থেকে আছে কে জানে। ব্যেটার লেইট দ্যান নেভার। হতে পারে বিলম্বিত আবিষ্কার। এইটা আমাদেরই দেশের জিনিশ দেখে তো নিজেরেই নতুন করে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে। এইটা যেন কন্টিনিউ করে। এদেশে কেবল তারুণ্যেই সবকিছু সীমাবদ্ধ করে ফেলার বদঅভ্যাসটা ঘুচুক এবার। তারুণ্য বলতেই আমরা মনে করি ঝঙ্কার বিটস্, রক-অ্যা-রল্যা, তারুণ্য বলতেই মীরাবাঈ-দেহঝোঁকা ঝাকানাকা। আর তারুণ্য মানেই উল্টাপাল্টা দাবিদাওয়া, আমি আমি আমি আমি বিরামহীন করে যাওয়া, আমিই উল্টাইসি পৃথিবীর এইটা-ওইটা লাগাতার ক্লেইম করা, আনিয়াছি ধরায় আমি নিউ একটা হাওয়া, আর তত্ত্ব করার নামে জিজেকিয়া আমতাআমতা। অ্যাক্টিভিজমের নামে নেটপাড়ায় অ্যাক্টিং করা। তারুণ্য মানেই বাছবিচারহীন কবিতাগালগল্প এবং তারপরে মঞ্চে উঠে লেনদেন – পুরস্কার ও পারস্পরিক গলাগলি-গালাগালি ইত্যাদি – সিন্ডিক্যাইটেড শয়তানি – এই জিনিশ থেকে একদিন নিশ্চয় রিলিজ পাবো আমরা। সাহিত্য যেন বাছুরবয়সের বালখিল্য ধুলাখেলা – এমন একটা ধারণা আগে যেই মাত্রায় ছিল, কমিউনিকেশনের তুঙ্গ এই সময়ে ফেঁপে-ফুলে এইটা আবিল করে ফেলেছে চিন্তা ও চর্চার দুনিয়া। ফাইজলামি, ফিচলামি, বিতলামি। জিনিশ একই, তিন-তিনটা আলাদা শব্দ হলেও। অথচ শুধু বল্গাহারা কাব্যকল্পনা আর দীনদুখিদিগের দুর্দশাখ্যান তো সাহিত্য নয়, বাছুরগিরি আর বুড়াদের বুঝদারিও শুধু সাহিত্য নয়, সাহিত্য তো অসুখবিসুখ সত্ত্বেও স্বাভাবিকতা। হাজার হায়মানির মধ্যেও সবসময় স্বাভাবিকতায় ভাবার দেখার বলার করার চেষ্টা। না, সাহিত্য-করিয়েরা ভাবে এইটা গামাপালোয়ানি। মিনিটে মিনিটে মোড় ঘোরা বা বাঁক বদলে ফেলার দাবিদাওয়া হাঁকাডাকা। বাংলাদেশে গত দেড়দশকের তারুণ্য বেড়ে উঠেছে সরকারের কাছে আব্দার করে চেয়েচিন্তে খেয়ে, শাসকেরে নিয়া আদুরে চুটকি সৃজন করে, ক্বচিৎ শাসকের মিষ্টি চোখপাকানি-শাসানি-দাবড়ানি পেয়ে। এইখানে যে-পত্রিকাটা আবিষ্কার করবেন আপনিও, ‘অরাজ’ এর নাম, কন্টেন্টগুলা আঁখিকোণে দেখে রাখবেন যেন টাইম-টু-টাইম এইখানে যেয়ে একটু থম ধরে জিরোতে পারেন। ঢাকা থেকে বেরোয় এইটা, প্রিন্টার্স ইনফো সাইটনিম্নে দেয়া। এর সম্পাদক সহুল আহমদ, প্রকাশক অরাজ নেটওয়ার্ক, মোহাম্মদপুর ঢাকা থেকে এইটা পাব্লিশ হয়। যে-দেশে লেখকেরা হাজারতেইশের এই খ্রিস্টবর্ষে রাজার ভোজসভায় নেমন্তন্ন না-পেয়ে গোস্বায় গাল ফোলায়, সে-দেশের একটা সাময়িকপত্র ‘অরাজ’, এর সার্কুলেশন খুব বেশি যে হবে না তা তো মোটামুটি বলে দেয়া যায়। এরশাদ-হিটলার-মুসোলিনি-পিনোশে-সাদ্দাম-গাদ্দাফি কারোর কপালে এত ‘কবিসাইত্যিক’ ভোটার জুটে নাই আগে, এদেশে যেমন ইউনিয়নে ইউনিয়নে উপজেলায় উপজেলায় জেলায় জেলায় বিভাগে বিভাগে লেখকেরা লাইন দিয়া খাড়ায় রাজার সেপাইদের কথামৃত গলাধঃকরণে, দেখে মনে হয় এই রাজপাট অবিনশ্বর। ‘অরাজ’ কী বলে এই নির্বিকার নিভৃতচারী লিটারেচারে বেসামাল বলদ লেখকদের পিয়ারা রাজা আর তার রাজপাট সম্পর্কে? দেখতে চাইলে এখনই, কিংবা যখন ফুরসত হয়, ক্লিক করতে পারেন নিচের লিঙ্কটায়। ‘অরাজ’ ভ্রমণ অর্থবহ হোক।
অরাজ
গানপারে ওয়েবজিন রিভিয়্যু
ওয়েবজিন রিভিয়্যু দেশ-বৈদেশ
মেঘচিল সেলিম মোরশেদ সংখ্যা
ছোটকাগজ বড়কাগজ হাওয়াকাগজ
- পুরস্কারপাওয়া ভারতীয়া বাংলা উপন্যাস - October 22, 2025
- শিশুসাহিত্যচর্চায় রায় ফ্যামিলি - October 22, 2025
- একটি ইতিহাসের অটোবায়োগ্রাফি - October 21, 2025

COMMENTS