‘গানপার’ নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা ও খাটনি সাইটে চোখ রাখলে সহজেই টের পাওয়া যায়। তবে আজকের মেইলে বিষয়টি আরও খোলাসা হলো বলতে পারেন। যে-প্রসঙ্গগুলো তুলেছেন তার প্রত্যেকটি নিয়ে লম্বা আলাপ করা যায় এবং করা উচিত বটে। বব ডিলান থেকে কবীর সুমনের গানবাজনা নিয়ে কম তো লিখলেন না, আমার কথা হলো এই লেখাগুলোর সূত্র ধরে নতুন লেখার আবির্ভাব ব্যাপক হওয়া উচিত ছিল। কবীর সুমনের গান নিয়ে স্মৃতি ও সাম্প্রতিকের মিলনসূত্রে আপনার লেখাটি আগে পড়েছিলাম সাইটে। তখন মনে হয়েছিল এই যে একটা লোকের মিউজিক্যাল জার্নি, তাঁর ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের যাবতীয় স্ববিরোধ ও শোম্যানশিপ সত্ত্বেও বাংলা গানের কথা ও সুরে পৃথক যাত্রা, এটা নিয়ে আপনার লেখার সূত্র ধরেই তো আলাদা ফিলার লেখা যায়। আমরা যারা গানটান শুনি তাদের চেয়ে এই কাজটি গানবাজনা যারা করেন তাদের সর্বাগ্রে করা উচিত। সংগীত একটা টেকনিক্যাল ঘটনাও বটে, এবং সেক্ষেত্রে সুমনের কথা ও সুরের সংযোজন বাংলা গানে কতটা নতুন অথবা গভীর এসব আলোচনায় তারা যোগ দিলে আমরা খানিক সমৃদ্ধ হতে পারি। সুমন তাঁর মিউজিক্যাল জার্নির জায়গা থেকে ব্যতিক্রম ঘটনা নাকি পরিপূরক … এই আলোচনা দুই বাংলার সংগীতের ধারা ও প্রবণতা সূত্রে হওয়া উচিত। বিশেষ হয়েছে কি? আমার জানা নেই।
রুনা লায়লাকে নিয়ে লেখাটা চট করে পড়লাম এবং মন ছুঁয়ে গেল। লেখাটি তীব্র উসকানিমূলক ছিল। পাঠক যদি সত্যি পাঠ গিয়ে থাকেন তবে এই উসকানিটা তার বোধগম্য না হওয়ার কারণ দেখি না। নাতিদীর্ঘ এই লেখা থেকে বিস্তারে যাওয়ার মতো আলোচনা সম্ভব, যেখানে বাংলা প্লেব্যাক গানের সুরধারায় দেখা দেওয়া গীতিকার-সুরকার-শিল্পীরা তো অবশ্যই, প্লেব্যাকের বাইরে বাংলা গানের যে-ভুবন সেটাকে প্রাসঙ্গিক করে আলোচনা জারি রাখা যায়। রুনা-সাবিনাকে এই উভয় ধারার মধ্যে যাচাইয়ের কাজটিও কিন্তু মন্দ হয় না। বিদেশে এক-একজন শিল্পীকে নিয়ে দিস্তা-দিস্তা লেখাপত্তরে ইন্টারনেট বোঝাই হয়ে আছে। আমাদের এখানে এ-রকম রচনার দৈন্য চোখে লাগে বলে গত মেইলে কথাগুলো তুলেছিলাম। এখনও মনে হচ্ছে গান নিয়ে যাত্রায় ‘গানপার’ একলা পথের পথিক। আমাদের ব্যান্ডসংগীতে অনেক ভালো গাইয়ে-বাজিয়ের জন্ম হয়েছে, যদিও মাকসুদ ছাড়া বাকিদের বিশেষ লিখতে দেখি না। আপনি আরও ভালো বলতে পারবেন এ-ব্যাপারে। তাদের দিয়ে লেখানো বা তাদের ভাবনাগুলোকে কি অনুলিখন করে ধারাবাহিক প্রকাশ সম্ভব? ‘গানপার’-এ এ-রকম কাজ বিদেশি গাইয়ে-বাজিয়েদের তরজমা সূত্রে চোখে পড়েছে। দেশিদের নিয়েও হয়তো হয়েছে, তবে আমি এখনও ঘেঁটে দেখিনি সময়ের অভাবে। সুযোগ করে দেখতে হবে। সেইসঙ্গে হেমাঙ্গ বিশ্বাস থেকে কবীর সুমন বা তারও আগেকার দিলীপকুমার রায় বা ধূর্জটিপ্রসাদ বা রবীন্দ্রনাথের সংগীতভাবনার পুনর্মুদ্রণ কি করা যায়? একটু ভাববেন।
ছোটকাগজ ও সাহিত্যপত্র নিয়ে আপনার দীর্ঘ লেখাটি যদি স্মরণশক্তি প্রতারণা না করে তবে প্রথম পড়েছিলাম রাশপ্রিন্ট-এ। এই লেখাটি নিয়ে আলাদাভাবে কথাবার্তা চলতে পারে এ-কারণে যে এটি একাধারে সাহিত্যপত্র ও ছোটকাগজ বিষয়ক ইতিহাসের বাখান শুধু নয়, তাদের আত্মযাত্রার বিবরণও বটে, এর ফিলার হতে পারত ‘যেসব কাগজ’ আমাদের এখনও নেই, যার আক্ষেপ আপনি ‘রোলিংস্টোন’ সূত্রে বলার চেষ্টা করেছেন। ছোটকাগজ, সাহিত্যপত্র, সাময়িকী ইত্যাদি প্রসঙ্গে লম্বা বাতচিত করার আছে এবং এ-কাজে আমার ধারণা অনেকে উৎসাহী হতে পারেন যদি ‘গানপার’ তাদের খানিক নক্ করে।
বাংলা সিনেমা নিয়েও অনেককিছু বলা ও লেখা সম্ভব তার উদাহরণ ‘গানপার’ রেখেছে। পপিকে নিয়ে লেখায় চোখ রাখতে গিয়ে ফিরে গিয়েছিলাম নয়ের দশকে, যখন বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার যুগ মোটামুটি শুরু হওয়ার পথে। সে-রকম সময়ে পপির (সম্ভবত) প্রথম ছবি ‘কুলি’ হ্যলে দেখেছিলাম। বলিউডের নায়িকাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে এহেন ফিগারের একখান নায়িকাকে পর্দায় দেখে প্রথমে বেশ চমকে গিয়েছিলাম। অভিনয় যেমন-তেমন হলেও কুলিতে তাঁর সৌন্দর্যে সেক্সঅ্যাপিলের সঙ্গে ইনোসেন্সটা ছিল, বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার বাড়াবাড়ি দাপটে পরে সেটা আর বজায় থাকেনি। এই দিকটা আপনার লেখায় এসেছে তবে বিস্তারে গেলে আরও জমাট হতো জিনিসটা।
বাংলাদেশি নায়িকাদের নিয়ে ফিলার হিসেবে আপনার লেখাজোকার সূত্রে ভাবনটা মাথায় এল, জনপ্রিয় হওয়ার সঙ্গে নায়িকাদের ধুমসী হয়ে ওঠা পর্দায় দেখতে বদখত হলেও সেটা কি মূলধারার সিনেমায় আমাদের উপমহাদেশীয় ট্রেন্ডের বিচারে নেতিবাচক? একসময় এ-রকম মনে হতো কিন্তু এখন আর হয় না। তামিল বা মালায়লাম সিনেমায় নায়িকার স্থূলতা দর্শকের বিচারে গ্ল্যামার বলে গণ্য হয় এবং নায়িকারা সেভাবে জিরো ফিগার থেকে বাম্পি হয়ে ওঠেন, তথাপি দেখতে বসে সেটা বিশেষ চোখে লাগে না। কেন? এই প্রশ্নটি নিজেকে করার পর মনে হলো তামিল মশলা সিনেমায় নায়ক বা নায়িকার আদৌ কিছু করার থাকে না! তারা সেখানে ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে না, তার বদলে মশলা ছবির উপযোগী স্ক্রিপ্ট রচনার কারিকুরিটাই পর্দায় বাজিমাত ঘটায়। দ্রুতগতির সংলাপ, জায়গামতো মোক্ষম অ্যাকশন সিন, ভাঁড়ামির লাগসই ব্যবহার, আর তার ফাঁক দিয়ে দু-চারখান গানের ব্যবহার … সব মিলিয়ে স্ক্রিপ্ট এমন থাকে যে তার গতির তোড়ে স্থূলতা ও রগড়ামি কেমন যেন গৌণ হয়ে পড়ে। তামিল ছবির কাহিনিছক আর অ্যাকশনদৃশ্যগুলো যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন হলিউড ও বলিউডের বাইরে গিয়ে তারা এটা ভেবেছে এবং এক্ষেত্রে তাদের মশলা ছবির নির্মাণপ্রণালিটা ভীষণ মৌলিক।
আপনি আমার চেয়ে আরও ভালো জানেন, তবে এখন মনে হয় মশলা সিনেমায় বলিউডের চেয়ে তামিল হাজার মাইল এগিয়ে থাকে সবসময়। কাহিন সেখানে যতই যাচ্ছেতাই হোক-না-কেন মেকিঙের মুন্সিয়ানা সোজা কথায় লা-জবাব। যে-কারণে আবালবৃদ্ধবণিতা তামিল দেখে, এবং যে-কারণে বলিউড টিনসেলের বুড়ো-হাবড়ায় পরিণত সলমন খানকে লার্জার দ্যান লাইফ টাইপের ছবিতে অসহ্য লাগে, কারণ সলমন রজনীকান্ত হতে পারে না, কারণ তামিলে রজনীকান্ত বুড়ো-হাবড়া কি না এসব ভাবার দরকার পড়ে না, সেখানে কান খাড়া থাকে মারকাটকাট কী ডায়ালাগ সে ঝাড়ছে সেদিকে অথবা চোখ গেঁথে থাকে অ্যাকশনের বৈচিত্র্যে। বাণিজ্যিক ও অফট্র্যাক ছবির মাঝামাঝি যেসব ছবি গত কয়েক দশক ধরে বলিউডে তৈরি হচ্ছে সেগুলো বরং কন্টেন্টের বিচারে উপভোগ্য। একটা ‘রাজি’ বা ‘আটিকেল 15’ ‘ডিয়ার জিন্দেগি’, ‘মনমর্জিয়া’ ‘মুল্ক’ ঘরানার ছবিগুলো বলিউডে কন্টেন্টের কোয়ালিটি যে বদলাচ্ছে তার স্মারক। স্টারডম থেকে বেরিয়ে এসে ক্যারেক্টারকে নানাভাবে গল্পের মধ্য দিয়ে বৈচিত্র্য দান করায় ছবিগুলো সফলতাও পেয়েছে। কলকাতার ছবিতে যেমন, তাদের মশলা সিনেমা যাচ্ছেতাই খারাপ, কিন্তু অফট্র্যাক মন্দ নয়, অন্তত সেইসব আর্বানাইজড দর্শকের জন্য যারা সিনেমা বলতে বিনোদন বুঝলেও গল্পটা খোঁজে এবং তার স্মার্ট মেকিঙের তালাশ করে। যদিও কলকাতা বহুলভাবে গোয়েন্দা ও থ্রিলারে ভর করতে গিয়ে এখন মার খাচ্ছে মনে হয়। থ্রিলার-এ হলিউডে ক্রিস্টোফার নোলান অবধি যে কাজ হয়ে গেছে সেটাকে টক্কর দিতে হলে উপমহাদেশকে বহুত রাস্তা হাঁটতে হবে এবং কাজটা সহজ নয়। ঠিক যেমন সায়েন্স ফিকশনের জায়গাটি এখনও তৈরিই হয়নি, এর জন্য আগে সায়েন্স ফিকশনের সাহিত্যটা তৈরি হওয়া জরুরি। আমরা সেখানে পিছিয়ে। হরর ঘরানার ছবির ক্ষেত্রেও কথা সমান। ওরকম সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রিক ঐতিহ্য আমাদের নেই। হরর মানে গা-ছমছম ভূতের গল্প নয়, আরও বহুত কিসিমের আতঙ্ক ও রগড় সেখানে থাকে, সেটার জন্যও সাহিত্যটা চাই আগে। হয়তো ভবিষ্যতে রচিত হবে, তবে এখনও সে-লক্ষণ বাংলা বা উপমহাদেশে ফুটে ওঠেনি।
মশলা ও অফট্র্যাকের বাইরে সিরিয়াস ফিল্ম নিয়ে যত কম বলা যায় ততই মঙ্গল। এটা সিনেমার ধ্রুপদি ছন্দ তৈয়ারের জায়গা এবং এর রস ভিতরে নেওয়ার মতো আম-দর্শক এখনও সেভাবে তৈরিই নয়। রাষ্ট্রকাঠামোর ধারাবাহিক বিবর্তনে যদি কখনও সে-রকম অডিয়েন্স গড়ে ওঠে তখন এই ধারায় সিনেমা বনবে হয়তো! সত্যজিৎ-মৃণাল-ঋত্বিক বা আদুর গোপাল কৃষ্ণানরা যে-যজ্ঞে একসময় হাত দিয়েছিলেন সেটা সেদিন নতুন ভাষা পাবে। এর জন্য মনে হয় আরও অপেক্ষা করতে হবে। সহসা সিরিয়াস ফিল্মে বড় কোনও বাঁকবদল ঘটার সম্ভাবনা দেখি না। সরকারি অনুদানে কয়টা এ-রকম ছবি বানাবেন উনারা? সেই মানের পরিচালক কই? সিনেমায় পুঁজি লগ্নি হয় বলে সিরিয়াস ফিল্মের দর্শক আগে তৈরি হওয়া দরকার। ফিল্ম সোসাইটি ম্যুভমেন্ট তো মুখ থুবড়ে পড়েছে। অবস্থা আশি বা নব্বইয়ের গোঁড়ার চেয়ে খারাপ, ফলে চলচ্চিত্র উৎসবে ঘুরে দু-চারটা পুরস্কার হয়তো জুটবে, কিন্তু দর্শক তৈরি না হলে সিরিয়াস ফিল্মে পুঁজি খাটাতে যাবে কেডা? লারস ভন ট্রায়ার ও কতিপয় নির্মাতা মিলে ইউরোপে কম বাজেটে ছবি তৈরির জন্য একসময় ‘ডগমা-95’ নামে ম্যুভমেন্টের জন্ম দিয়েছিলেন। সফলতাও এসেছিল বেশ! ট্রায়ারের একাধিক ছবি এই ম্যুভমেন্টের ফসল। এমনকি নিকোল কিডম্যানের মতো স্টারকে কাস্টিং করে বানানো ডগভিলও বড় বাজেটের ছবি বলে মনে হয়নি। থিয়েট্রিক্যাল স্টেজ, কিডম্যান সহ বাকিদের দারুণ অভিনয়, আর সাহিত্যগুণে অতুলনীয় কাব্যিক চিত্রনাট্য, সেইসঙ্গে ফিলোসোফিক্যাল ডুয়ালিটি … সব মিলিয়ে ট্রায়ারের এই সিনেম্যাটিক মাস্টারপিস কিন্তু খুব হিসেব করে বানানো ছবি। দেখতে বসে ধাঁধা লাগে ভেবে সিনেমা দেখছি নাকি এপিক কোনও নভেল পাঠ যাচ্ছি। সাহিত্য ও সিনেমার এহেন মিলন তারকোভস্কির পর ট্রায়ারে দেখে টাশকি খেয়েছিলাম। তো এ-রকম দু-একখান সিরিয়াস ফিল্ম বাজারে ছাড়তে হলে বাজেটের হিসাব আর মেধাবী নির্মাণ দুটোই দরকার বটে। আমাদের এখানে সামগ্রিকভাবে সেটা অনুপস্থিত মনে হচ্ছে। হলিউডেও এ-রকম অনেক ছবি চুপকে-চুপকে তৈরি হয়। রিচার্ড লিঙ্কলেটার-এর ‘স্ল্যকার’, ‘ওয়াকিং লাইফ’ বা ‘বয়হুড’ বাজেট বিচারে বিশাল নয়, কিন্তু মেকিঙটা বুদ্ধিদীপ্ত ও ভাবনাজাগানিয়া।
প্রশ্ন হলো বাংলাদেশের সিনেমা এর কোন ঘরানায় অবস্থান করে সেটাই ক্লিয়ার না। মশলা সিনেমায় স্ক্রিপ্ট দুর্বল, মেকিং যাচ্ছেতাই, কোরিওগ্রাফি হতাশাজনক, কাহিনি বা অ্যাকশনে তামিলের কাটপিস করতে গিয়ে সেটাও ঠিকঠাক হয় না, অগত্যা এসবের ক্ষতিপূরণ ঘটানোর উপায় হয়ে ওঠে যৌন সুড়সুড়ি। সিনেমা হ্যলের সংখ্যা ওদিকে নিম্নগামী। যেগুলো আছে সেগুলোর সঙ্গে আলু রাখার গুদামের তফাৎ নেই। দর্শকও সেই মানের। কাজেই পপির ধুমসী নৃত্য কিংবা মৌসুমীর ধারাবাহিক অধঃপাত ছাড়া বাংলা সিনেমার গতি দেখি না। শাকিব খানকে ঘিরে যে মশলা এখানকার সিনেমাওয়ালারা তৈরি করেন সেটা কাটপিস এবং সে-কারণে ডায়ালগ থেকে অ্যাকশন কিছুই কেন যেন যুতসই হয় না। নব্বইয়ে শাবনূরের অভিনয় সাবলীল ছিল, তাকে এফডিসি ব্যবহার করতে পারেনি। কাজী হায়াত ‘তেজি’ ছবিতে মান্না ও ডিপজল এবং শহিদুল ইসলাম খোকন ‘অপরাধী’ ও ‘বিশ্বপ্রেমিক’-এ হুমায়ুন ফরিদীকে যে-ট্রেন্ড ধরে ব্যবহার শুরু করেছিলেন সেটার মেকিং প্রথমদিকে অত খারাপ ছিল না। ওটাকে বেশিদূর উনারা টানতে পারেন নাই। স্ক্রিপ্ট থেকে শুরু করে অভিনয়, হ্যল থেকে প্রমোশন, সর্বোপরি বাজেট … ছবির এইসব জায়গাগুলো দুর্বল হওয়ার পরিণতি বেহুদা যৌন সুড়সুড়ি। মশলা ছবি দাঁড়াবে না যদি গল্প শক্ত না হয়, ডায়ালগ চোখা না হয়, কোরিওগ্রাফি বাজে হয়, ফাইটডিরেক্টরের নতুন অ্যাকশন সিন তৈরির স্পেস ও সেটা ভাবার মতো প্রতিভা যদি তার না থাকে, গানের ব্যবহার কীভাবে হবে সে-বিষয়ে ডিরেক্টর গাধামির পরিচয় দেয়, এবং গল্প অনুযায়ী অ্যাক্টিঙটা যদি সেভাবে না দাঁড়ায় তাহলে কারিনা কাপুরের মতো জিরোফিগারে পর্দা ভরালেও দর্শক পুঁছবে না। তো এইসব কতকিছু নিয়ে যে আলোচনা করা যায়! ‘গানপার’-এ আপনারা একহাতে এসব সামলাচ্ছেন দেখে অবাক যাই! সাইটটিকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার। ফিলার লেখার জন্য নতুন মুখের কি সন্ধান করা যায় না?
ফটোস্টোরি মানে ফটোগ্রাফি বা ছবি থেকে গল্প টেনে বের করা নিয়ে ‘গানপার’ কিছু ভাবছে কি? মেলা–বান্নি নিয়ে আপনাদের এ-রকম কিছু কাজ চোখে পড়েছে। এটাকে আরও বিস্তৃত করা, যেমন ধরুন বিখ্যাত বা অখ্যাত কোনও ছবি থেকে কাহিনি (কাল্পনিক হতে পারে) টেনে বের করে নিয়ে আসা এবং সেই সূত্রে ছবিটাকে টেক্সট রূপে পাঠ যাওয়া … এ-রকম কিছু করা যায় কি? আমি যৎকিঞ্চিৎ করেছিলাম মনের খেয়ালে। যার একগুচ্ছ গ্রন্থীর তিরিশ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থে দিয়েছিলাম। আশা করি ভাববেন।
লেখাটি ইমেইলসংলাপের অংশ। লেখকের সঙ্গে গানপারসঞ্চালকের মেইলযোগে কথাবিনিময়ের একাংশ এইখানে তাৎক্ষণিকা আকারে হাজির করা হলো। কৌতূহলী পাঠকদের তাৎক্ষণিকা শীর্ষক আহমদ মিনহাজের ভাবনাবুদ্বুদগুলো পড়ার জন্য তাৎক্ষণিকামালায় ভিজিটের আমন্ত্রণ রইল। — গানপার
- হাসিনাপতন : প্রতিক্রিয়া পাঠোত্তর সংযোজনী বিবরণ || আহমদ মিনহাজ - September 4, 2024
- তাণ্ডব ও বিপ্লব || আহমদ মিনহাজ - August 10, 2024
- তাৎক্ষণিকা : ১৮ জুলাই ২০২৪ - August 8, 2024
COMMENTS