নারী ও পুরুষ উভয়ের তরফে এই জিনিশটা আবশ্যক যে তারা পাশাপাশি বসবে এবং সৎ ও উদার মন নিয়ে সেক্স নিয়া আলাপ করবে। এইটা না হলে অ্যাইডস্ মহামারীর প্রকোপ ঠেকানো সম্ভব হবে না কিছুতেই। কিন্তু পরিতাপের ব্যাপার এইখানেই যে আমাদের নারী-পুরুষ মধ্যকার পারস্পরিক সংযোগের ভাষা ও আচরণিক ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নৈরাশ্যজনক সমস্যাকীর্ণ।
বয়স ঠেকানোর বহু কসরত সত্ত্বেও আমি এখন বয়স্ক একজন মানুষ। অনেক অনেক বছর পেরোতে যেয়ে এই জীবনে বহু বিষয়ে শেষমেশ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে আমাকে, সেই সিদ্ধান্তসমূহ কোনোটা মাতৃত্ব কোনোটা স্ত্রীত্ব বা কাজের ব্যাপারে কোনোটা, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারটা আদৌ সহজ ছিল না, যত কঠিনই হোক জীবনে বেঁচে থাকলে এই সিদ্ধান্তগুলো সবাইকেই নিতে হয়।
বাস্তবিক অর্থে একটা ভারী ভোগবাদবিস্রস্ত ও খরিদ্দারের সমাজে বসে আমাদেরে ভাবনাচিন্তা জীবনযাত্রা চালাইতে হয়।
নিজের সৃজনশীল সত্তাটাকে আপনি যদি বাণিজ্যিক প্রবৃত্তিতাড়িত না হয়ে লেখালেখি বা আপনার সৃষ্টিক্রিয়া সামলানোর কাজে নিয়োজিত করতে পারেন তাইলেই দেখবেন আশ্চর্য সব উদ্ভাবনের স্ফুরণ ঘটছে আপনার লেখায় আপনার সর্বপ্রকারের রচনায়।
আমার জগতের প্রচুর মানুষের, আমার অভিনয়জগতের কথা বলছি, বন্ধুবিয়োগ হয়েছে কিংবা তাদের বন্ধুরা বাস করছে অ্যাইডস্ মহামারীর সঙ্গে যুঝে। এই মহামারীর উৎপত্তিটা আমাদের কালচারে, যেমন ধরেন নিউইয়র্কের সমাজে, হয়েছে সমকামী জীবনযাত্রার জনপদ থেকে।
এইটা দিবালোকের মতো সত্য যে পুরুষের যৌনাচরণ ও পুরুষের যৌনচাহিদার জবাবে নারীর সাড়া তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রায় চেইঞ্জ হয় তাদের মধ্যে ভাষিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগের মাধ্যমে। এই সংযোগ অত্যন্ত উঁচু স্তরের মাত্রায় আমি লক্ষ করেছি আমাদের সমাজের অপেক্ষাকৃত নিম্নকোটির মানুষের মধ্যে রয়েছে। কেন কথিত উঁচুতলায় এমন সংযোগের হতদারিদ্র্য আমি বুঝতে পারি না।
শিশুরা হচ্ছে সবচেয়ে ভালো ও সমুজদার দর্শকশ্রোতার মধ্যে শ্রেষ্ঠ। সবচেয়ে অবাক করে যে-ব্যাপারটা তা হচ্ছে এরা আশ্চর্য চুপচাপ মনোনিবিষ্ট হয়ে দেখে আদ্যোপান্ত। শুধু সমাপ্তির পরেই তারা হাততালি দিয়ে ওঠে বা কলকাকলিত হয়ে সেলিব্রেইট করে তাদের অভিজ্ঞতা।
বাচ্চাদেরে বেফায়দা অ্যাডভাইস্ দিতে যায়েন না, তাদেরে উপদেশ দেবার দরকার নাই; যা দরকার তা হচ্ছে তাদের কথাগুলো মন দিয়া শোনা এবং তারা যখন বলবে তখন যেন বড়রা আধকান দিয়া না শোনে। শিশুদের প্রতি নিবিষ্ট মনোযোগ দেয়া আমাদের শিল্পসাহিত্যসংস্কৃতি ও গোটা সমাজের উৎকৃষ্ট অগ্রসরনের জন্য দরকারি।
আমার কাছে কোনো টেক্নিক নাই, কেননা আমি কোনো টেক্নিক শিখি নাই। জীবনের প্রত্যেকটা কাজে টেক্নিক আলাদা ও অনন্য।
দুনিয়ার বাজারব্যবস্থা আমাদেরে একে অপরের থেকে আলাদা করে দিতেছে এবং এই জুধাকরণের বাজারব্যবস্থা আমি ঘৃণা করি। বিশেষত লক্ষ করবেন যে-কোনো পণ্য বিপণন ও বেচার লক্ষ্যে এরা আমাদেরে বয়সভিত্তিতে শ্রেণিভিত্তিতে বিত্তভিত্তিতে ভাগ করে পণ্যটা বাজারে ছাড়ে। এখন আমাদের দরকার এমন সমস্ত গল্প এমন সমস্ত আখ্যান যা আমরা আলাদা হয়ে নয় একলগে উপভোগ করতে পারি।
চয়ন, সংকলন ও অনুবাদন : বিদিতা গোমেজ
… …
- শৈলিন উডলির কথাগুলি (৭) - August 11, 2019
- কেইটের কথাবাত্রা (১০) - July 25, 2019
- টিল্ডা টোল্ড (২) - May 12, 2019
COMMENTS