অনেকটা হামদ্-নাত্ যেমন, অথবা আরতি-কীর্তন, বড়দিনে ক্যারলগুলো গির্জায় বা বাড়িতে গাওয়া হয়। ক্রিসম্যাসেই সীমাবদ্ধ নয়, ক্যারল সারাবছরই চার্চে বা বাড়ির প্রার্থনাপার্বণগুলাতে গাওয়া যেতে পারে এবং গাওয়া হয়ও। প্রোফেটের বা অবতারের বা পিরপয়গম্বরের গুণগাথা কাব্যিক কাঠামোয় ফেলে একটা নির্দিষ্ট সুরের কম্পোজিশনে যেমন যুগ যুগ ধরে গেয়ে আসছে মানুষ, ক্রিসম্যাসের হিম্ বা ক্যারলগুলোও অবিকল তা-ই। যিশুর জন্ম স্বাগত জানিয়ে এবং যিশুর নামগান-যশগাথা প্রচারে এই ফর্মটা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ক্যারল হচ্ছে ক্রিসম্যাসগান/সংগীতের একটা আলগ ধরন, একমাত্র নয়, অন্যান্য ধরনও রয়েছে, একটা বলা যেতে পারে যেমন চার্চকয়্যার। এইগুলার প্রত্যেকটা কাঠামোই ইউনিক একদিকে, এবং আরদিকে এদের মধ্যে বেশ মিলমিশও রয়েছে। ক্যারলগুলা প্রায়ই মিডিয়েভ্যাল কর্ডপ্যাটার্ন ভিত্তি করে একটা স্ট্রাকচার্ড কম্পোজিশন। মধ্যযুগের ক্রিশ্চিয়ান চার্চকেন্দ্রী ইনিশিয়েটিভগুলার মধ্যে ক্যারল পরিপুষ্ট হয়েছে দেখা যায়। এইগুলার মিউজিক্যাল রিজোন্যান্সের মধ্যে সেই সময়ের ইউনিক একটা সাউন্ড আমরা পাই। ক্রিসম্যাস মিউজিক বলতে যে একটা আম্ব্রেলা টার্ম, সেইটার অন্তর্গত বড়সড় অংশটা ক্যারল বলিয়া বিবেচনা করা যেতে পারে।
‘অ্যা বয় ইজ বর্ন ইন বেথেলহেম / আলেলুইয়া আলেলুইয়া’ নামে একটা ক্যারল আছে, কে লিখেছেন তা জানি না বা কার সুরযোজনা তা-ও অজানা, ক্যারলগুলা হামেশা অ্যানোনিমাসলিই লিখিত হয়েছে দেখতে পাবো। তবে এই লিরিকটা আমরা নিয়েছি গ্যুগল করে একদম ওপেন সোর্স থেকে, বেশি তালাশ করি নাই বিশদ জানার নিয়তে, একটু খোঁজাখুঁজি করলে এরও হদিস করা যাইত না তা নয়, কিন্তু দরকার মনে করি নাই আপাতত। তবে এই ধাঁচের হাজার হাজার না হোক শত শত বড়দিনগান ওয়েবে সার্চ করে যে-কেউ পেয়ে যাবেন। বর্তমান ক্যারলের লিরিকটায় একটি বিশেষ স্বাধীনতা বাংলাকালে নিয়েছি, সেইটা বলেই লিরিকটার তর্জমা পাঠ করব।
‘অ্যা বয় ইজ বর্ন ইন বেথেলহেম’ শীর্ষক যিশুজন্মস্মারক স্তুতিগীতের প্রত্যেকটা লাইনের সঙ্গে একটা লাইন কমনলি রিফ্রেইন হিশেবে এসেছে ফিরে ফিরে। সেই লাইনটা ‘আলেলুইয়া আলেলুইয়া’, আমরা বাংলায় এই লাইনটা রাখি নাই। কিন্তু অন্যান্য পঙক্তিগুলো মোটামুটি ঠিকই আছে, ইংরেজির কাছাকাছিই আছে সো-ফার।
বলবার তেমনকিছু নাই আর। ‘অ্যা বয় ইজ বর্ন ইন বেথেলহেম’ গানটা শুনে দেখি এবার।
অ্যা বয় ইজ বর্ন ইন বেথেলহেম
বেথেলহেমে জন্মেছে এক ছেলে
জেরুজালেমে খুশির দীপালি জ্বেলে
নেহায়েত সে যে দরিদ্র দীনহীন
ভুবনে তারই তো রাজপাট চিরদিন
গোয়ালঘরের গাইগোরুগুলো সবে
জেনে গেছে এই ছেলেটিই প্রভু হবে
পুবের দেশের সমস্ত অধিপতি
শিশুটিরে মেনে নিয়েছে কালের গতি
শিশুটি দেখতে আমাদেরই মতো অবিকল
শুধু নাই তার মেকি মিথ্যার ছল
জন্মেছে এই শিশুটি পৃথ্বীধামে
ত্বরাইবে বলে আমাদেরে প্রভুনামে
এসো অতএব সমস্বরে গেয়ে উঠি
যিশুজন্মের এই দিনে যাক ক্লেদ ও কালিমা টুটি।।
প্রিফেস ও বঙ্গানুবাদ : জাহেদ আহমদ
… …
- শাহ আবদুল করিম : জন্মের শতক পেরিয়ে আরও একটা আস্ত দশক || ইলিয়াস কমল - January 20, 2025
- সিনেমার চিরকুট ৮ - January 19, 2025
- টুকটাক সদালাপ ২ - January 17, 2025
COMMENTS