বুঝ হবার পর থেকে বিখ্যাত সব আর্কিটেক্ট আর তাদের ক্রিয়েশনের প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ আমার। নিজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় আফসোসও কাজ করত। যদিও এখন মনে হয়, আর্কিটেক্ট হলে হয়তো কবিতায় সমস্যা হতো। কেননা আর্কিটেকচার নিজেই একটা শিল্প।
যা-ই হোক, কাজের ক্ষেত্রে, ফিল্ডে কাজের সময়, প্ল্যান ধরে ধরে বাড়ি নির্মাণের কাজ করেছি ৩ বছর, ঢাকার উত্তরায়, বসুন্ধরা আবাসিক ও মগবাজারে। দাঁড়িয়ে দেখেছি সাউথ ব্রিজ, র্যাংগস, বে, শান্তা প্রপার্টিজ আর ভলিউম জিরোর অনেক নির্মিত ভবন। রফিক আজমের কাজ দেখেছি খুঁজে খুঁজে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে। নির্ঝরদার (এনামুল করিম নির্ঝর, আর্কিটেক্ট ও ফিল্মমেইকার) তেজগাঁও লিঙ্ক রোডের কাজটাও সুন্দর। আর্কিটেক্ট ফয়েজ উল্লাহ আর মোস্তফা খালিদ পলাশের ভবনও দেখেছি। ইউটিউব ঘেঁটে ঘেঁটে মেরিনা তাবাসসুম আর কাশেফ মাহবুবের কাজও দেখেছি। যদিও এই দুজনের করা সোরওয়ার্দি উদ্যানের কাজটা স্বচক্ষে দেখা হয়েছে। নানান জটিলতায় এইসব বিখ্যাত আর্কিটেক্টদের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ আমার হয়নি। বহুদিন আশফাকভাইকে বলেছি রফিক আজমের অফিসে নিয়ে যেতে। কিন্তু নিজের জটিলতায় হয়ে ওঠেনি আর।
আর আর্কিটেকচারের প্রতি প্রেমের কারণেই আমার সকল আগ্রহ এরপরে কেন্দ্রীভূত হয়েছে আর্কিটেক্ট মাজহারুল ইসলামের কাজে। কী অসাধারণ সব কাজ তাঁর! জাবি, চবি, রেডিও ভবন, ন্যাশনাল আর্কাইভ ভবন, ঢাকার চারুকলা … আরো কত কী!
চিন্তা করা যায়, কীসব অসাধারণ কাজ তখন হয়েছে! বরং দিন যত গিয়েছে, তত পিছিয়েছি আমরা। ঢাকার দিকে তাকালে এখন কঙ্ক্রিটের অসমতল আর অযত্নের একটা জঙ্গল ছাড়া আর কিছু মনে হয় না। সরকারি স্থাপনার ডিজাইনও ভয়াবহ বাজে এখন। কোনো নিমগ্নতা নাই। সৌন্দর্যচেতনা নাই। কেন্দ্রীয় কোনো চিন্তা নাই। অদ্ভুত। অথচ এই দেশে কত অসাধারণ সব স্থাপনা নির্মিত হয়েছে মাজহারুল ইসলাম বা আরো অন্যান্যের হাত ধরে।
এমনকি ’৮০-র দশকে (?) নির্মিত প্রতিটি উপজেলায়, উপজেলা চেয়ারম্যানদের জন্য নির্মিত বাসভবনের স্থাপত্যডিজাইন দেখলেও চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। যদিও আমি জানি না এইগুলার ডিজাইন একই ছিল কি না প্রতিটি উপজেলায়। আমি বলছি শেরপুরের শ্রীবর্দি উপজেলার কথা। আর এগুলোর ডিজাইনার কে তাও জানি না।
যা-ই হোক, স্থপতি মাজহারুল ইসলামের বিভিন্ন কাজের খোঁজেই বেঙ্গলের ‘স্থপতি মাজহারুল ইসলাম’ নামক গ্রন্থটি সংগ্রহ করি। আর মহার্ঘ্য এ গ্রন্থ ঘেঁটে পেয়ে যাই নির্ঝরদার ‘তিনি’ — একটা ডকুর খোঁজ৷ সৌভাগ্য বটে। শুধু আর্কিটেকচার না, আরো নানান কিছু জানার জন্যও ডকুফিল্মটি গুরুত্বপূর্ণ।
আজ তিনি শেয়ার করতে ইচ্ছা হলো। তাই এত কথা।
তিনি ফিল্মের ইউটিউবলিঙ্ক :
… …
- শহীদ কাদরীর দেশে || বিজয় আহমেদ - April 13, 2025
- ঈদ : সাউন্ডবক্সময় ফিতাক্যাসেটের, প্রেম-না-পাওয়া হতাশ রাত্রিদিনের || বিজয় আহমেদ - April 3, 2025
- গান শুনি ৩ : রোজালিনের গল্প || বিজয় আহমেদ - March 22, 2025
COMMENTS