মাইন্ডহান্টার || ফাইয়াজ বিন নুর

মাইন্ডহান্টার || ফাইয়াজ বিন নুর

শুরুতে ভৌতিক-ভূতুড়ে একটা ভাব প্রকাশ পেলেও আস্তে আস্তে বোঝা যায় সিরিজটিতে থ্রিলের মাত্রা অনেকখানি বাড়িয়ে রেখেই যাত্রা করেছেন এর ক্রিয়েটর। বাস্তব কাহিনিভিত্তিক মাইন্ডহান্টার সাইকোপ্যাথ নিয়ে অন্যান্য সব ম্যুভি আর সিরিজগুলা থেকে ভিন্নরকম থ্রিল নিয়ে তৈরি করা একটি টিভিসিরিজ। সাইকো সম্পর্কিত ক্রাইমগুলা সাধারণত এমন হয়ে থাকে যেখানে ভিডিওফুটেজ সহ সবজায়গায় দেখানো হলেও মাইন্ডহান্টারে ঐসব ফুটেজ ছাড়াই যে-পরিমাণ সাস্পেন্স আর থ্রিল দর্শকের মনে জাগাতে সক্ষম তা আসলেই অসাধারণ ছিল।

দুইজন এফবিআই স্পেশাল অ্যাজেন্ট চরিত্রে অভিনয় করেছেন খুব চমৎকার। জনাথান এবং হোল্ট বেশ ভালোই ফুটিয়েছেন সিরিজটিকে শুরু থেকেই। মানুষ হত্যা করার মধ্যে যে আনন্দ সাইকোপ্যাথেরা পেয়ে থাকে তা সরাসরি খুনের থেকে তাদের মুখ থেকে শুনতে পাওয়াটা আরো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে ফেলে, যেটা মাইন্ডহান্টারের প্রতিটি এপিসোডে একজন সাইকোপ্যাথ দ্বারা তুলে ধরা হয়েছে, বাস্তবে আসলে যেমনটা ঘটে থাকে ঠিক তেমনই। প্রত্যেকের আবার স্বাদ থাকে ভিন্নরকম, দেখা যায় ক্রাইমের পেছনে জড়িত রয়েছে তাদের অতীত অথবা স্মরণীয় এমন কোনো কাহিনি যেটা থেকে বেরিয়ে আসা তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।

মাইন্ডহান্টারজনাথান আর হোল্ট, এই দুই অ্যাজেন্টের রোল ছিল সেইসব সাইকোদের মন পাঠ করা তাদের সাথে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে। সাধারণত সাইকোদের কোনো বন্ধু হয় না, যেখানে দুই অ্যাজেন্ট যার মধ্যে একজন জনাথান, বেশ ভালোই মন পড়ে ফেলার দক্ষ্যতা দিয়ে সাইকোদের সেইসব ক্রাইমের পেছনে তাদের বাস্তবজীবনের সম্পর্ক উদ্ঘাটন করেছেন। সাস্পেন্সবিজড়িত হত্যার পেছনে কারণটা জানা বা শিক্ষার বেশ আগ্রহ ছিল তার। শহর থেকে শহরে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পুলিশস্টেশনে তারা আবার মোটিভেটও করে যাচ্ছে সেখানকার পুলিশ-অফিসারদের এবং প্রতিবার সেই স্টেশনের কোনো-একটি ক্রাইমে জড়িত এসব সাইকো হত্যাকারীকে ধরে ফেলতে সক্ষম হচ্ছেন অ্যাজেন্ট দুইজনই।

‌হত্যার ক্ষেত্রে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টটা ভালোই বুঝিয়েছেন, ফুটেজ দেখানো হয়নি কোথাওই, কথা দিয়েই একদম গভীরে স্পর্শ করে ফেলার মতো, নিজ কল্পনাশক্তির মাধ্যমে এখানে প্রতিটা মানুষকে অর্থাৎ দর্শককে একেকজন সাইকো আবার মনশিকারি দুটি রূপেই গড়ে তুলতে সক্ষম সিরিজটি। যার যার রূপ তার নিজের সামনে চলে আসলেই যেন এসব সাইকো কারবার থেকে দূরে থাকা যায় আর-কি।

ভিডিওচিত্র তেমন কিছুই দেখানো হয়নি, আবার খুঁজতে গেলে উঠে আসবে অনেককিছুই। খরচের দিক দিয়ে তুলনা করলে কয়েকজন চরিত্র দিয়েই একেকটা এপিসোড বানিয়ে ফেলা হয়েছে। একমাত্র দেখার ইচ্ছা আর বোঝার আগ্রহই করে তুলে সিরিজটিকে অসাধারণ, চিন্তাভাবনা যার-যার তার-তার। হত্যার ফুটেজ ছাড়াই যে-পরিমাণ থ্রিলিং ভাব মনে জাগিয়ে তোলে, ধরে নেয়া যায় থ্রিলিং সিরিজ/ম্যুভিগুলোর মধ্যে ‘মাইন্ডহান্টার’ অভিঘাত রাখবে।

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you