নতুন যে বাংলা লিখিত হইতেছে, সাহিত্যমূল্য বিচারে যা এদেশেরই ইংরেজি জানাদের কাছে একটা কোনো অর্থ তৈরি করার পূর্ণ মেজাজে অলরেডি এক্সিস্ট করে, সেইটা তাদের নজরে কে আনবে?
সাহিত্য পড়া কিছু ইংরেজি জানা লোক আছে, আর সাহিত্য না পড়া আছে কিছু। অর্থাৎ, ইংরেজিতে সাহিত্য পাইলে পড়ে, বা পড়বে, সেইটা।
এই ফেসবুকেই আছে অজস্র ইংরেজি জানা মেইনস্ট্রিম লোকজন। যারা বাংলা লেখাপত্র ওইভাবে পুছে না। সেইটা হীনম্মন্যতা না, উচ্চম্মন্যতা। এদের কাছে নতুন বাংলা সাহিত্য পৌঁছায় না। যার ফলে একধরনের বিমুখতা বিল্ট ইন হয়ে রইছে।
অথচ, মাদার ল্যাঙ্গুয়েজের সাহিত্য পাঠ যে আরেকটা ভাষার সাহিত্য বুঝার গভীরতা তৈরি করে, একটা অন্তর্দৃষ্টি গঠন করার মাধ্যমে, এলিট হওয়ার জন্য যা একটা সম্পদই বটে, সেইটা মনে হয় ওদের কেউ বলে দেয় না। ফলে সাহিত্য না-পাঠ করাদের না-বাংলা না-ইংরেজি কোনো সাহিত্যের গভীরেই আর যাওয়া হয় না। তো ভালো ইংরেজি জেনেও কালচারালি পেনিট্রেট করতে না পারার হুতাশন ওনাদের আর এলিট বানায় না।
আর যারা গ্রুমডই হয় ইংরেজিতে, বাচ্চাবয়স থেকেই, ওরা নেটিভদের মতো ইংরেজি সাহিত্যই ভালো বুঝে। পড়ে। বাট ক্ল্যাসিকই পড়ে বেশি। নট কনটেম্পরারি। বাংলার পারদর্শিতা কম ওনাদের। সেজন্য পরিণত বয়সে এসে ওনারা বাংলা পড়লে বাংলারই লাভ, ইংরেজিরও লাভ। বাংলার লাভ এইভাবে যে, বাংলাটা ওনাদের ধীরে ধীরে ভালো হবে আর ইংরেজি জানা হেতু ইংরেজি সাহিত্যের কনটেম্পরারি দিকে নজর পড়া। এতে আমাদেরও লাভ। সুদূরপ্রসারী লাভ।
আর বিদেশে অবস্থান করা ইংরেজিভাষী বাঙালিদেরও নতুন বাংলা সাহিত্য পাঠের ফোকাসে আনতে পারলে বৃহত্তরভাবে সকলেরই লাভ।
সো, বটম লাইন ইজ, ’৮০ বা ’৯০ দশকীয় বাংলার বাইরে নতুন যেই বাংলা সাহিত্য এখন লিখিত হইতেছে, তা ধনিক বা করপোরেট বা আধা-কালচারাল আধা-এলিটদের (ভালো ইংরেজি জানা গ্রুপটা) কালচারাল এলিটের সমপর্যায়ে নিয়ে আসবে। অর্থাৎ, পূর্ণাঙ্গ এলিট করবে।
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের জায়গাটা ভরাইতে পারলে অনেক মুশকিলই আসান হয়।
নতুন সময়ে নতুন বাস্তবতায় এখনকার লিখিয়ে বলিয়ে ও করিয়েদের সাথে একই ফ্রন্টিয়ারে থাকতে হলে ভালো ইংরেজি জানাদের আমাদেরকে জানাটা দরকার। আমাদেরও দরকার তাদের অডিয়েন্সির সামর্থ্য ও প্রভাব নিজেদের মনে করা।
এইটা উইন উইন সিচুয়েশন।
— ১৯/০৯/২০২২
- মুহাম্মদ শাহজাহান : অগ্রন্থিত প্রস্থান - March 15, 2023
- বইয়ের খবর লেখকের জবানে / মুমূর্ষু খয়েরি রাত ও শিবু কুমার শীল - February 28, 2023
- মাসানোবু ফুকুওকা : এক তৃণখণ্ডের প্রতিরোধ || আহমদ মিনহাজ - February 28, 2023
COMMENTS